বাকশালের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া!
আজ থেকে ঠিক ৪৪ বছর আগে এই দিনে (৮ মার্চ, ১৯৭৫) দৈনিক সংবাদে প্রকাশিত একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে বাকশাল আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগদান করেছিলেন সামরিক বাহিনীর তদানীন্তন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা ও বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান এবং তাঁর স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
১৯৭৫ সালেই ৭ মার্চের ভাষণ নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়। সংবাদ প্রকাশের পাশাপাশি বিশেষ আয়োজনও ছিল পত্রিকাগুলোতে। অধিকাংশ পত্রিকাই ৭ মার্চের ভাষণ নিয়ে বিশেষ সংবাদ, উপসম্পাদকীয় ও সম্পাদকীয় প্রকাশ করে। তবে দৈনিক সংবাদের ৮ মার্চে প্রথম পাতায় প্রকাশিত একটি ছবি এখন ঐতিহাসিক সাক্ষী দিচ্ছে। ঐতিহাসিক ৭ মার্চ নিয়ে বাকশাল আয়োজিত এক সভায় বক্তব্য রাখেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এম মনসুর আলী। সংবাদের বর্ণনা অনুযায়ী, ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন ‘মন্ত্রিসভার সদস্যবর্গ, কূটনীতিক, জাতীয় রাজনৈতিক নেতা, সশস্ত্রবাহিনীর উচ্চ পদস্থ কর্মচারী, মহিলাসহ বিপুল সংখ্যক ছাত্র, যুব ও রাজনৈতিক কর্মী’।
পত্রিকাটি সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৫ সালে আওয়ামী লীগ থেকে বাকশালে (বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ) রূপান্তরিত দলটির আলোচনা সভায় অন্যান্য অতিথির সঙ্গে শ্রোতার সারিতে সস্ত্রীক উপস্থিত ছিলেন সামরিক বাহিনীর তদানীন্তন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান। ওই অনুষ্ঠানের শ্রোতাদের ছবিও প্রকাশ হয় পত্রিকাটিতে। যেখানে জিয়াউর রহমান এবং খালেদা জিয়াও শ্রোতাদের কাতারে ছিলেন। ছবির ক্যাপশনে লেখা আছে- ‘৭ মার্চ বাকশাল আয়োজিত সভায় উপস্থিত শ্রোতাদের একাংশ’ (দৈনিক সংবাদ, ৮ মার্চ, ১৯৭৫)।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের অধুনালুপ্ত একটি রাজনৈতিক দল যা সচরাচর বাকশাল নামে উল্লিখিত। ১৯৭৫ সালের ২৪ জানুয়ারি বাংলাদেশের সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীবলে বহুদলীয় সংসদীয় সরকার পদ্ধতি পরিবর্তন করে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয় এবং দেশের সমগ্র রাজনৈতিক দল বিলুপ্ত করে বাকশাল নামক এই একক রাজনৈতিক দল গঠন করা হয়। একই বছরের ১৫ আগস্ট একটি সামরিক অভ্যূত্থানে শেখ মুজিবের মৃত্যু হলে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ-এর সকল কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালে তৎকালীন সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান বহুদলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থা পুন:প্রবর্তনের উদ্যোগ নিলে বাকশালের কুশীলবরা পূর্বতন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা তথা পুনরুজ্জীবন করে। ফলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে বাকশাল নামক রাজনৈতিক দলের পুনারাবির্ভাব হয় নাই।