মুক্তিযুদ্ধের শহীদ ও দেশবাসীকে জয় উৎসর্গ
একটা ম্যাচ এখনও বাকি আছে। ১৩ মার্চ সেই ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড। এর আগেই সোমবার ইংল্যান্ডকে ১৫ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা, যিনি ৪ বছর আগে ঘরের মাটিতে ইনজুরির কারণে বিশ্বকাপে খেলতেই পারেননি। সেই মাশরাফির নেতৃত্বেই বাংলাদেশ এবার শেষ আটে ওঠেছে। নিঃসন্দেহে এই মুহূর্তে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষদের একজন মাশরাফি। ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাওয়া জয় মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের পাশাপাশি সব বাংলাদেশীদের উৎসর্গ করেছেন। সঙ্গে ধন্যবাদ জানিয়েছেন দলের সতীর্থ ক্রিকেটার, টিম ম্যানেজমেন্ট ও কোচিং স্টাফদের।
ইংল্যান্ডকে হারানোর পর মাশরাফি বলেছেন, ‘আমি অত্যন্ত গর্বিত। স্মরণ করছি মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের। বিশেষ ধন্যবাদ টিম ম্যানেজম্যান্ট ও কোচিং স্টাফের প্রতি। একই সঙ্গে ছেলেরাও দারুণ খেলেছে। উইকেট ভাল ছিল, আমরাও অসাধারণ বোলিং করেছি।’
এ্যাডিলেডে ব্যাট হাতে নেমে শুরুতেই ২টি উইকেট হারিয়ে চাপে ছিল বাংলাদেশ। সৌম্যকে নিয়ে প্রথম দফায় সেই চাপ কাটানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু শত রান পূর্ণ হওয়ার আগ মুহূর্তে সৌম্য ও সাকিব পর পর আউট হয়ে গেল আবারও বিপর্যয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে ১৪১ রানের জুটি গড়েছেন মাহমুদউল্লাহ। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম সেঞ্চুরিও তুলে নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। মুশফিকও করেছেন ৮৯ রান। এ দুজনের নৈপুণ্যেই বাংলাদেশ ২৭৫ রানের লড়াকু ইনিংস খেলেছে।
অধিনায়ক মাশরাফিও প্রশংসার বানে ভাসিয়েছেন এই দুই ক্রিকেটারকে। তিনি বলেছেন, ‘আমরা শুরুটা ভাল করতে পারিনি। কিন্তু দ্রুতই ঘুরে দাঁড়িয়েছি। বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম সেঞ্চুরি করেছে মাহমুদউল্লাহ। মুশফিকের সমাপ্তিটাও ছিল অসাধারণ।’
শেষ দিকে ম্যাচের ভাগ্য ঝুলেছে দোলাচলে। কখনো ম্যাচ বাংলাদেশের হাতে, আবার কখনো তা বের করে নেয়ার চেষ্টা করেছে ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা। এ অবস্থায় ৪৯তম ওভারের প্রথম ও তৃতীয় বলে ইংল্যান্ডের শেষ ২ জন ব্যাটসম্যানকে বোল্ড আউট করেছেন রুবেল। সব মিলিয়ে নিয়েছেন ৪টি উইকেট। বিশেষ করে আগের ওভারে তামিম ক্যাচ মিস করেছেন। পরের ওভারেই রুবেলের নৈপুণ্যে সফল সমাপ্তি টেনেছে টাইগাররা। তাই মাশরাফির কণ্ঠেও ছিল রুবেলের জন্য প্রশংসার বাক্য। তিনি বলেছেন, ‘আমার মনে হয়, গুরুত্বপূর্ণ ৪ উইকেট নেয়ার পর রুবেল নিজেও অত্যন্ত হ্যাপি।’
আগের ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে একজন বাড়তি স্পিনার না নেওয়ায় সমালোচনা হয়েছে। এই ম্যাচে নাসিরের জায়গায় আরাফাত সানিকে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সাকিব-আরাফাতের মতো স্পিনাররা চমকপ্রদ কিছু করতে পারেননি। বরং রুবেল-তাসকিনরাই ম্যাচ নিয়ন্ত্রণ করেছে। তাই মাশরাফি মনে করছেন স্পিনের পাশাপাশি পেস বোলিং নিয়ে আমাদের আরও কাজ করা উচিৎ। তিনি বলেছেন, ‘আমরা সবাই বাংলাদেশকে স্পিন নির্ভর দল মনে করি। স্পিনারদের নিয়ে আমাদের বাড়তি আশা থাকে। আমি মনে করি, এ ধরনের চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। হয়তো রাতারাতি আমরা পেস নির্ভর দল হতে পারব না। তবে এই জায়গায় কাজ করার আরও সুুযোগ আছে। এই ম্যাচ আমাদের তেমন বার্তাই দিচ্ছে।’