লিবিয়ায় জিম্মি : হেলালের গ্রামের বাড়ি জামালপুরের মাদারগঞ্জে শোকের মাতম
লিবিয়ায় আইএস জঙ্গিদের হাতে অপহৃত ও জিম্মি বাংলাদেশি শ্রমিক হেলাল উদ্দিনের গ্রামের বাড়িতে চলছে কান্না আর আহাজারি। জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ গজারিয়ায় তাঁর গ্রামের বাড়ি। তিনি ছয়দিন আগে গ্রামের বাড়িতে তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সর্বশেষ টেলিফোনে কথা বলেন।
দক্ষিণ গজারিয়া গ্রামের মৃত আমাজ উদ্দীনের পুত্র হেলাল উদ্দীন ৬ বছর আগে লিবিয়া যান। আটমাস আগে তিনি দুই মাসের ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন। আর ছুটি কাটিয়ে ছয়মাস আগে তিনি লিবিয়া যান। গ্রামের বাড়িতে তার স্ত্রী দুই ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে।
অপহৃত হেলালের বড় ভাই ফকির মাহমুদ জানান, হেলালের বড় মেয়ের বিয়ে হয়েছে। তিন সন্তান লেখাপড়া করছে।
হেলালের স্ত্রী আলেয়া জানান, ২৩ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। তিনি জানান,‘ তার অপহরণের খবর শুনে আমাদের বাড়িতে রোজ কেয়ামত নেমে এসেছে। আমার সন্তানরা অপহরনের খবর পেয়ে বার বার মূর্ছা যাচ্ছে। তারা বলছে বাবা ফিরে না এলে আমাদের কী হবে।’
কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে তিনি জানান,‘ আমাদের সব শেষ হয়ে গেছে। পরিবারের একটু সুখের আশায় তিনি ঝুঁকি নিয়েও লিবিয়ায় ছিলেন। এখন আমাদের কী হবে।’ তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাঁর স্বামীকে উদ্ধারের ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
মাদারগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ড. কামরুজ্জামান জানান, হেলাল উদ্দীনের পরিবারটির খোঁজ খবর নিচ্ছেন তারা। তারা চেষ্টা করছেন সর্বশেষ খবর জেনে তার পরিবারকে জানাতে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার লিবিয়ার সিরতে শহরের আল-গণি তেল ক্ষেত্র থেকে ৮ বিদেশি নাগরিককে জিম্মি করেছে সশস্ত্র সুন্নীপন্থী সংগঠন আইএস। তাদের মধ্যে বাংলাদেশের নাগরিক হেলাল উদ্দিনও আছেন।পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, হেলাল উদ্দিনের বাড়ি জামালপুর এবং তার পাসপোর্ট নং-বি০১৫৬৫৫৩।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে ত্রিপোলি দূতাবাসের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আইএস ওই বাংলাদেশিকে ঠিক কোথায় নিয়ে গেছে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে দূতাবাস। এজন্য লিবিয়ার জাতীয় তেল কোম্পানি (এনওসি) ও তেল ক্ষেত্রটির তত্ত্বাবধায়ক কোম্পানি ভাওসের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছে দূতাবাস।