স্মার্টওয়াচ যুগে প্রবেশ করলো অ্যাপল
দীর্ঘ প্রতিক্ষার পালা শেষ করে অবশেষে অ্যাপল উন্মুক্ত করেছে কাঙ্ক্ষিত অ্যাপল ওয়াচ। সান ফ্রান্সিসকোতে আয়োজিত অ্যাপলের এক বিশেষ ইভেন্টে অন্ধকার থেকে আলোতে এসেছে অ্যাপলের এই স্মার্টওয়াচ।
অ্যাপলের সিইও টিম কুক উপস্থিত সাংবাদিক এবং অন্যান্য অতিথিদের সামনে অ্যাপল ওয়াচের বিভিন্ন ফিচার তুলে ধরেন। অ্যাপল ওয়াচ নিয়েও প্রায় সকল প্রশ্নের উত্তরই দেওয়া হয়েছে অ্যাপলের এই ইভেন্ট থেকে।
অ্যাপল ওয়াচের মূল ফিচারগুলো কি?
দুটি ডিসপ্লে সাইজে পাওয়া যাবে অ্যাপল ওয়াচ। এর একটি ১.৭ ইঞ্চি এবং অপরটি ১.৫ ইঞ্চি। আর সর্বমোট ৩৮টি মডেলে বাজারে পাওয়া যাবে। মডেলভেদে স্মার্টওয়াচটির কেসিং এবং বেল্ট হবে অ্যালুমিনিয়াম, স্টিল এবং স্বর্ণ দিয়ে তৈরি।
কবে থেকে পাওয়া যাবে অ্যাপল ওয়াচ?
আগামী মাসের ১০ তারিখ থেকেই অ্যাপল ওয়াচের জন্য অগ্রিম বুকিং নিতে শুরু করবে অ্যাপল। আর এপ্রিলের ২৪ তারিখ থেকে এর বিক্রি শুরু হবে। প্রাথমিকভাবে পাওয়া যাবে অস্ট্রেলিয়া, জাপান, কানাডা, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, হংকং এবং যুক্তরাষ্ট্রে।
দাম পড়বে কত?
বিভিন্ন সংস্করণে এটি বাজারে আসবে। আর ডিজাইন এবং ফিচারভেদে সর্বনিম্ন ৩৪৯ মার্কিন ডলার থেকে শুরু করে ১৭ হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত এর মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। অ্যাপল ওয়াচ স্পোর্ট সংস্করণের মূল্য পড়বে ৩৫০ ডলার। অ্যাপল ওয়াচ কালেকশন সংস্করণের মূল্য পড়বে ৫৪৯ মার্কিন ডলার থেকে ১০৪৯ মার্কিন ডলার পর্যন্ত। আর সবচেয়ে আকর্ষণীয় অ্যাপল ওয়াচ এডিশন কিনতে খরচ করতে হবে মডেলভেদে সর্বনিম্ন ১০ হাজার ডলার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১৭ হাজার ডলার পর্যন্ত।
অ্যাপল ওয়াচ এডিশনের দাম এতো বেশি কেন?
অ্যাপল ওয়াচ এডিশন সম্পূর্ণ স্বর্ণের তৈরি। আর তাই এই সংস্করণের অ্যাপল ওয়াচ তৈরি করা হবে সীমিত সংখ্যক। নির্দিষ্ট কিছু অ্যাপল স্টোরেই এটি পাওয়া যাবে।
অ্যাপল ওয়াচের ব্যাটারি লাইফ কেমন হবে?
টিম কুকের মতে, একবার চার্জ দিলে চলবে পুরো একদিন। তবে এই একদিন বলতে সাধারণত ৬ ঘণ্টা ঘুমের সময় বাদ দিয়ে বাকি ১৮ ঘন্টার কথা বলা হয়েছে। তবে অন্য কিছু ফিচার বন্ধ করে রাখলে টানা ৭২ ঘন্টা পর্যন্ত চলবে। একবার ব্যাটারি চার্জ দিতে সময় লাগবে ১৭ মিনিট।
অ্যাপল ওয়াচ কিভাবে চলবে?
আপনার ভয়েস কন্ট্রোলেই চলবে অ্যাপল ওয়াচ। এতে আছে অ্যাপলের কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা সিরি। আর সিরি চালু করতে কোন বাটন প্রেস করার দরকার হবে না। এর টাচ স্ক্রিনে আছে ‘ফোর্স টাচ’ নামক একটি ফিচার যার মাধ্যমে স্ক্রিন চালু করতে বাটন প্রেস করার প্রয়োজন পড়বে না।
অ্যাপল ওয়াচ কি কাজে লাগবে?
এটি মূলত একটি ফিটনেস ডিভাইস হিসেবেই বেশি কাজে আসবে। আমরা অনেক সময়ই স্প্রিন্টারদের হাতে এই ধরণের ডিভাইস দেখে থাকি যার সাহায্যে তারা তাদের অনুশীলন ট্র্যাক করে থাকে। এছাড়া আপনি যদি একটানা অনেক সময় ধরে বসে থাকেন, তাহলেও এটি আপনাকে সেটি জানান দেবে। এর বাইরে অন্যান্য সাধারণ কাজের জন্যও এটি হবে দারুণ এক ডিভাইস। টেক্সট পাঠানো, ড্রয়িং করা কিংবা ট্যাক্সি ভাড়া করা, সবই করা যাবে এই এক স্মার্টওয়াচ থেকেই। এছাড়া এর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার হচ্ছে চাবির বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা। দূর থেকে গ্যারেজের দরজা খোলা কিংবা হোটেল রুমের দরজা খোলা, সবই করা যাবে এর মাধ্যমে।
মোবাইলের সাথে এটি কিভাবে কাজ করবে?
আইওএস অপারেটিং সিস্টেমের নতুন সংস্করণে অ্যাপল ওয়াচ নিয়ন্ত্রণের জন্য যুক্ত করা হয়েছে একটি অতুন অ্যাপ। সেখান থেকে কিছু অ্যাপস চালানোর পাশাপাশি স্মার্টওয়াচের বিভিন্ন সেটিংসেও পরিবর্তন আনা যাবে। বিল্ট ইন ওয়াইফাই এবং ব্লুটুথের সাহায্যে অ্যাপল ওয়াচ সবসময় আইফোনের সাথে যুক্ত থাকবে।