শ্রীবরদীতে হাসপাতালে কাতরাচ্ছে শিশু শিক্ষার্থী ; বলাৎকারের অভিযোগ মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরোদ্ধে
শ্রীবরদীতে লম্পট মাদ্রাসা শিক্ষকের বলাৎকারের ক্ষত নিয়ে হাসপাতালের বেডে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে এক শিশু শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার রাত থেকে ওই শিশু শিক্ষার্থী শ্রীবরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছে। বুধবার সন্ধ্যে পর্যন্ত সে অপরিচিত লোকজন দেখলেই আঁতকে উঠছে, কেঁপে উঠছে তার শরীর, যবুথবু হয়ে নিজেকে গুটিয়ে রাখার চেষ্টা করছে সে। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।
জানা যায়, শ্রীবরদী উপজেলার জালকাটা এবতেদায়ী মাদ্রাসার লম্পট শিক্ষক মহসিন মিয়া (২৫) ৯ মার্চ সোমবার বিকেলে মাথা ও পা মালিশ করে দিতে ২০ টাকার প্রলোভনে একই মাদ্রাসার ৯ বছর বয়সী এক শিশু শিক্ষার্থীকে শ্রেণিকক্ষে নিয়ে তাকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক বলাৎকার করে। লম্পট শিক্ষক মহসীন পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ ষাইটকাকড়া গ্রামের আক্তার মিয়ার ছেলে। আর নির্যাতনের শিকার ওই শিশু শিক্ষার্থী একই গ্রামের ক্ষুদ্র কৃষক পরিবারের ছেলে। ঘটনার পর ওই শিশু কান্নাকাটি করে বাড়ি ফিরে তার বাবা-মাকে বিষয়টি খুলে বলে। তার বাবা-মা ওই ঘটনার বিচার চাইতে লম্পট মহসিনের বাড়িতে গেলে সে গাঁ ঢাকা দেয়। ওই অবস্থায় শিশুটিকে বাড়িতেই দেয়া হয় প্রাথমিক চিকিৎসা। কিন্তু পরদিন (মঙ্গলবার রাতে) হঠাৎ রক্তপাত ও প্রচন্ড ব্যথায় শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের লোকজন তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করে। তবে ক্ষত ও ব্যথা সারার চিকিৎসা ছাড়া বলাৎকারের বিষয়ে এখনও তার কোন ডাক্তারী পরীক্ষা হয়নি। নির্যাতনের শিকার শিশুর অবস্থা জানতে জরুরী বিভাগের দায়িত্বে থাকা ডাঃ রুহুলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি শিশুর ভর্তি থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করলেও অন্য কোন বিষয় জানাতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে বাইরে থাকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমকর্তা ডাঃ এএফএম কামরুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। পরে সন্ধ্যায় তার সাথে কথা হলে তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত না থাকায় জেনে নিয়ে জানান, বলাৎকারের ঘটনা শোনার পরও শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখার কোন যৌক্তিকতা নেই। দায়িত্বে থাকা নবীন ও অনভিজ্ঞদের কারণেই এমনটি হয়েছে। এখন দ্রুতই তাকে ফরেনসিক বোর্ডে পাঠাতে রেফার করা হচ্ছে।
ওই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহ আলম আকন্দ বলেন, রাতে ঘটনাটি শুনে ওই হুজুরকে বুধবার সকালে হেফজখানায় থাকতে বলেছিলেন। কিন্তু রাতেই তিনি পালিয়ে যান।
এদিকে বিষয়টি জানাজানি হয়ে পড়ায় বুধবার শিশুটিকে একনজর দেখতে হাসপাতালে জমতে থাকে সচেতন লোকজনসহ উৎসুক মানুষের ভিড়। ওই অবস্থায় শিশুটির বাবা লম্পট শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিলে শুরু হয় বিশেষ মহলের চালবাজী। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঘটনার বিষয়ে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। ওই ঘটনায় আইন সহায়তা কেন্দ্র আসক ফাউন্ডেশন, শ্রীবরদী উপজেলা শাখার আহ্বায়ক শামছুল হক ও যুগ্ম আহ্বায়ক ডাঃ মুক্তার হোসেন ডেন্টাল তীব্র নিন্দা জানিয়ে লম্পট মাদ্রাসা শিককে গ্রেফতার ও তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
এব্যাপারে শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বেলাল হোসেন তরফদার বলেন, ঘটনাটি শুছেনে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবেন।