‘জয়ের জন্যই খেলব’
গ্রুপপর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলার আগেই বিশ্বকাপ ক্রিকেটের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত হয়েছে বাংলাদেশের। শেষ ম্যাচের প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড। ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৩ মার্চ নিউজিল্যান্ডের হ্যামিল্টনে। কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় এই ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য যে খুব বেশী গুরুত্বপূর্ণ তা নয়। তবে কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশ কার বিপক্ষে লড়বে তা নির্ধারণে এই ম্যাচ প্রভাব ফেলতে পারে। অন্যথায়, বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড ২ দলের জন্যই এটি অনুশীলন ম্যাচ ছাড়া ভিন্ন কিছু নয়। কিন্তু তাই বলে স্রোতে গা ভাসিয়ে দিচ্ছে না বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের জন্যই মাঠে নামবে বাংলাদেশ। বুধবার নিউজিল্যান্ড পৌঁছে সংবাদ মাধ্যমের কাছে এমন কথাই বলেছেন বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন।
কোয়ার্টার ফাইনালের কথা বিবেচনায় রেখে এই ম্যাচে কাউকে বিশ্রাম দেওয়া হবে কিনা? এ প্রশ্নে সুজন বলেছেন, ‘প্রত্যেকটা ম্যাচই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। জয়ের অভ্যাসটা ধরে রাখতে পারলে ভাল হবে। এটা বদলানো ঠিক হবে না। আমরা জয়ের জন্যই খেলব। জয় আসুক কিংবা না আসুক, এটা কোনো বড় ব্যাপার নয়। দলের কাউকে বিশ্রাম দেওয়া হবে কিনা, এ ব্যাপারে এখনো আলাপ হয়নি।’
এই ম্যাচের আগে দল কতটুকু আত্মবিশ্বাসী? উত্তরে সুজন বলেছেন, ‘এর আগে আমরা এখানে দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ খেলতে এসেছিলাম। আমার মনে আছে, সর্বশেষ ২০১০ সালে আমরা এখানে টেস্ট ম্যাচ খেলেছি। উইকেট এখানে অতটা সহজ নয়। তার পরও এখানকার উইকেটে মাহমুদউল্লাহ ও সাকিব সেঞ্চুরি করেছে। তবে ২০১০ এবং ২০১৫-এর বাংলাদেশ দলের মধ্যে তফাৎ রয়েছে।’
তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘বিশ্বকাপের প্রথম থেকেই বাংলাদেশ ভাল খেলছে। আশা করি, আমরা এখানে ভাল খেলব। তার পরও নিউজিল্যান্ড নিজেদের মাটিতে অদম্য একটি দল। নিউজিল্যান্ডকে ঢাকায় আমরা হোয়াইটওয়াশ করেছি। এখানে কন্ডিশনটা পুরোপুরি ভিন্ন। আমাদের ছেলেরা কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে খুব ভাল করে। আশা করি, খুব ভাল একটা ম্যাচ হবে।’
বাংলাদেশের এই পরিবর্তনটা কিভাবে মূল্যায়ন করবেন? এ বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার বলেছেন, ‘নিজেদের ক্ষমতা সম্পর্কে বাংলাদেশ দলের ধারণা ছিল না। এখন নিজেদের ক্ষমতা সম্পর্কে ধারণা রয়েছে দলের প্রতিটি ক্রিকেটারের। তারা জিততে পারে এই বিশ্বাসটা মনের মধ্যে জন্ম নিয়েছে। পুরো দল হিসেবে তাদের আত্মবিশ্বাস খুব ভাল। আগে দেখা যেত যে, ব্যক্তিগতভাবে আত্মবিশ্বাসী থাকত। এখন দলের সবাই আত্মবিশ্বাসী, যা দলের জন্য ইতিবাচক। এ ছাড়া মাঠে নামার পর মনোভাবটা খুব ইতিবাচক থাকছে সবার মধ্যে।’
পেস বোলাররা অসাধারণ বোলিং করছে, দলের জয়ে ভূমিকা রাখছে। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সুজন বলেছেন, ‘এর আগে আমার মনে পরে না যে, এক সঙ্গে কোনো পেস বোলার ১৪০ কিলোমিটার প্লাস গতিতে বল করেছে। এটা খুব কঠিন। আমাদের ২ জন বোলার ১৪০ কিমি প্লাস স্পিডে বল করছে, সেই সঙ্গে মাশরাফির অভিজ্ঞতা কাজে লাগছে। এর আগে দেখা যেত, একজন পেস বোলার খারাপ করলে তার জায়গায় আরেক জন আসত। কিন্তু ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে দেখা গেছে, ৩ জন পেস বোলারই অসাধারণ বোলিং করেছে। আমার মনে হয়, এটা খুব মোটিভেশনের ব্যাপার হবে বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য।’
সুজন আরও বলেছেন, ‘বিশ্বকাপের এই কন্ডিশনে নিজেদের ভূমিকার কথা বুঝতে পেরেছে তারা; সেভাবেই তারা বল করছে। তাসকিন তরুণ পেসার। সে নিজেও এই কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে, বুঝে গেছে কিভাবে এই কন্ডিশনে বল করতে হবে। আমাদের পেস বোলাররা ৮ উইকেট নিয়েছে। সবাই সঠিক সময়ে যার যার দায়িত্ব পালন করেছে। বাংলাদেশের এই বোলিং আক্রমণকে সবাই শ্রদ্ধা করবে অবশ্যই। সঙ্গে বিশ্বসেরা স্পিনার সাকিব তো দলে আছেই।’