পশ্চিমবঙ্গে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার খ্রিস্টান সন্ন্যাসিনী
বিকৃত পুরুষতান্ত্রিক অবদমনের ধর্ষণ-সংস্কৃতিতে আবার নতুন মাত্রা যোগ হলো প্রতিবেশি দেশ ভারতে। এবার পশ্চিমবঙ্গে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হলেন ৭৪ বয়সী এক ‘নান’ বা সন্ন্যাসিনী।
শনিবার ১৪ মার্চ ভোররাতে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার একটি খৃষ্টান স্কুলে এক আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। ওই স্কুল আর পার্শ্ববর্তী চার্চটিতে আক্রমণের সময় নগদ অর্থ ও আরও কিছু সামগ্রী লুট করা হয়।
ঘটনাটিকে ভয়ঙ্কর বলে বর্ণনা করেছেন কলকাতার সর্বোচ্চ যাজক আর্চবিশপ। তিনি বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, ‘ওই সন্ন্যাসিনীর মেডিক্যাল পরীক্ষা হয়েছে। আমাকে বলা হয়েছে যে তিনি সংঘবদ্ধধর্ষণের শিকার হয়েছেন।’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী এই হামলার তদন্তভার সি আই ডি-র হাতে তুলে দিয়েছে।
পুলিশ বলছে, রাণাঘাট শহরের কনভেন্ট অব জেসাস এন্ড মেরি নামের এই স্কুল এবং পাশ্ববর্তী চার্চে গতরাতে হামলা চালায় ৭-৮ জন দুষ্কৃতি। স্কুলটির অফিস ভেঙ্গে কয়েক লক্ষ টাকা, কয়েকটি ল্যাপটপ লুট করা হয়।
তারপরে সন্ন্যাসিনীরা যেখানে থাকেন, সেখানে হামলা করে দুষ্কৃতিরা।
দুজন সন্ন্যাসিনী ও একজন পাহারাদারকে বেঁধে রেখে আক্রমণ চালানো হয় ৭৪ বছর বয়সী ওই সন্ন্যাসিনীর ওপরে। প্রায় চারঘন্টা ধরে হামলা চলে বলে পুলিশ বলছে।
নদীয়ার পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ নিজেই তদন্তে গিয়েছিলেন রাণাঘাটের ওই প্রতিষ্ঠানটিতে।
কলকাতার আর্চবিশপ ফাদার টমাস ডি’সুজা ঘটনাস্থল দেখতে গিয়েছেন। তিনি জানান, প্রথমে স্কুল আর সন্ন্যাসিনীদের ওপরে হামলা চালানোর পরে পাশের চার্চটিতেও যায় দুষ্কৃতিরা। ভাঙ্চুর করা হয় উপাসনার পবিত্র সরঞ্জাম।
স্কুলটিতে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা লাগানো রয়েছে। কিন্তু হামলাকারীরা দুটি ক্যামেরা ভেঙ্গে দেয়। তবে অন্য একটি ক্যামেরায় তাদের চেহারা দেখা গেছে।
মুখ্যমন্ত্রী এই ঘটনার তদন্ত সি আই ডি-র হাতে দেওয়ার পরে সেখানে চার সদস্যের একটি দল পৌঁছিয়েছে। রওনা হয়েছে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের একটি দলও।
গত কয়েকমাসে দিল্লিতে একের পর এক খৃস্টান প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়েছে।
তবে কলকাতার আর্চবিশপ এই সাম্প্রতিক হামলা ও সন্ন্যাসিনীর গণধর্ষণের সঙ্গে দিল্লির ঘটনাগুলিকে এক করে দেখতে এখনও রাজী নন।