বসে থাকবেন না, জেগে উঠুন : বি চৌধুরী
ভোটের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য দেশবাসীকে জেগে ওঠার আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘আজ হোক কাল হোক জেগে উঠতেই হবে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের অত্যাচার-নির্যাতনের বিরুদ্ধে জেগে উঠতে পারলে এখন দেশের অত্যাচারীদের বিরুদ্ধে জেগে উঠবেন না কেন? বসে থাকবেন না, জেগে উঠুন।’
জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘চলমান পরিস্থিতি ও উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রবিবার দুপুরে তিনি এ আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ সিভিল রাইটস সোসাইটি আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রুহুল আমিন গাজী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি শওকত মাহমুদ প্রমুখ।
বি. চৌধুরী আরও বলেন, ‘৫ জানুয়ারি একটি ভুয়া ও অগ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছে। দেশের মানুষ এ নির্বাচন মেনে নেয়নি। তারা ভোট দিতে চায়। তাদের এ অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।’
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘নিয়ম রক্ষার নির্বাচন করেছেন। এবার ওয়াদা অনুযায়ী সব দলের অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।’ মন্ত্রীদের বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আল্লাহ সাক্ষী। আপনারা ওয়াদা করেছিলেন। এখন উল্টোপাল্টা বলবেন না।’
তিনি ক্রসফায়ার বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘এটা হত্যা। রাষ্ট্রীয় বাহিনী এভাবে মানুষ হত্যা করতে পারে না। এটা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস।’
সরকার হিটলার-মুসোলিনিকেও ছাড়িয়ে গেছে মন্তব্য করে বি. চৌধুরী বলেন, ‘মানুষ একদলকে মেনে নেবে না। এটা সরকারকে বুঝতে হবে।’
হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী সালাহ উদ্দিন আহমেদকে ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার হাইকোর্টের কথাও রাখবে না। এটা কোন ধরনের সরকার?’
পেট্রোলবোমার নিন্দা জানিয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘এ ধরনের কর্মকাণ্ড আমরা পছন্দ করি না। কারা করছে তা খুঁজে বের করতে হাইকোর্টের কমিশন গঠন করা উচিত। একইভাবে ক্রসফায়ারের ব্যাপারেও কমিশন গঠন করতে হবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘বর্তমান সংকট রাজনৈতিক সংকট। এর সমাধানও রাজনৈতিকভাবে করতে হবে। এর বিকল্প নেই। সমাধান না হলে মারামারি হবে, দেশের অস্তিত্ব বিনষ্ট হবে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ ভিন্ন প্রকৃতির। এখানকার মানুষ কিছুদিন অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করে। কিন্তু সীমা অতিক্রম করলে জনগণ যা করে তা অত্যন্ত ভয়ঙ্কর অপ্রত্যাশিত ও অনাকাঙ্ক্ষিত।’
সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে দেশের বিশিষ্ট এ শিক্ষাবিদ বলেন, ‘হিটলার আত্মহত্যা করেছিলেন। মুসোলিনিকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। আমরা চাই না এ দেশের মাটির কোনো সন্তানের সে পরিস্থিতি হোক।’
বর্তমান সরকার দেশ পরিচালনায় সক্ষম নয় মন্তব্য করে ড. এমাজউদ্দীন বলেন, ‘সব দলের অংশগ্রহণে অবিলম্বে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।’
দাবি আদায়ে জনগণকে রাজপথে নেমে আসার আহ্বানও জানান তিনি।