শেরপুরে মুসলিম সাধক হযরত শাহ কামাল (রা:) এর মাসব্যাপি ওরশ শুরু
শেরপুরের মুসলিম সাধক হযরত শাহ কামাল (রা:) এর মাজার শরীফে মাসব্যাপি বার্ষিক ওরশ শুরু হয়েছে। ১৫ মার্চ রবিবার প্রথম প্রহর থেকে শতশত ভক্ত আশেকানদের উপস্থিতিতে ওই ওরশ শুরু হয়।
এ উপলক্ষ্যে ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থেকে ভক্ত-পাগল আর আশেকানদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠেছে মাজার প্রাঙ্গন ও আশপাশের এলাকা। প্রায় ৪শ বছরের পুরোনো এ মাজারে আনুষ্ঠানিকভাবে ওরশ শুরু হয় আশির দশক থেকে। ওরশে প্রতিদিন চলবে জিকির-আজগার, দোয়া-তেলাওয়াত ও মাজার জিয়ারতে হাজার হাজার নারী-পুরুষের ভিড়। সেই সঙ্গে ওরশকে ঘিরে মাজারের চার পাশে থাকছে বিভিন্ন পসরার মেলার আয়োজন এবং মাজারে আগত আশেকান ও পাগলদের ভক্তিমূলক গানের আসর।
জানা গেছে, ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে ভারত উপমহাদেশে ৩শ ৬০ জন সফরসঙ্গী নিয়ে ১২ আউলিয়া আরাকান হয়ে চট্টগ্রামে আগমন করেন। হযরত শাহ কামাল (র:) ছিলেন ১২ আউলিয়ার একজন। আলাউদ্দিন হোসেন শাহেব রাজত্বকালে (১৪৯৩-১৫১৯) ১৫০৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলায় পদার্পণ করেন। প্রথমে তিনি মহেন্দ্রগঞ্জ থানা (বর্তমানে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের একটি থানা) ও জামালপুর জেলার কামালপুরে আস্তানা গড়েন। এখানেই তিনি প্রথম ইসলাম ধর্ম প্রচারের কাজ শুরু করেন। পরে তিনি আসেন জামালপুর জেলার দুরমুটে। ১৬৩৯ খ্রিষ্টাব্দে শাহজাদা সুজার বাংলার শাসন ভার গ্রহনের প্রথম পর্যায়ে মোগলরা যখন শেরপুর জেলা শহরের কসবায় বসবাস আরম্ভ করেন তখনও হযরত শাহ কামাল (র:) জীবিত ছিলেন এবং দুরমুট বা বাকলাইতে অবস্থান করছিলেন। কসবায় বসবাসকারী মোগলরা হয়তো শাহ কামাল (র:) এর অলৌকিক মতার কথা জানতে পারেন এবং তাদের প্রশাসনিক কেন্দ্রের কাছে এনে কাজী গলির পশ্চিমে তাঁকে কিছু জায়গা প্রদান করে বসবাস স্থাপনের ব্যবস্থা করেছিলেন। পরবর্তীতে এটিই শাহ কামাল (র:) এর মাজার বলে পরিচিত হয়ে আসছে। তিনি ১৬৪৪ খ্রিষ্টাব্দে পরলোক গমন করেন।
কথিত আছে, হযরত শাহ কামাল (রা:) ইন্তেকাল করার পর এ সংবাদ একই সাথে ৭ স্থানে পৌঁছে যায়। স্থানগুলো হলো জামালপুর জেলার দুরমুট ও কামালপুর, শেরপুর জেলা শহরের কসবায়, নেত্রকোনা জেলার শাহ সুলতান রুমীর মাজারে, ময়মনসিংহ জেলার সুসং দুর্গাপুর, চট্টগ্রামের বার আউলিয়া ও দিল্লীর আব্দুল কাদের জিলানী চিলা খানায়।