টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট হচ্ছে জামালপুরের মাদারগঞ্জে
জামালপুরে তৈরী হচ্ছে টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট। ফলে বস্ত্রশিল্পের মাঝারি পর্যায়ের দক্ষ প্রযুক্তিবিদ তৈরী, দেশের বেকার যুবগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং বস্ত্র শিল্পের উৎপাদন ব্যয় হ্রাস পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এটি তৈরীতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ২০১৭ সালের জুনের মধ্যেইনস্টিটিউটটি স্থাপনের কাজ সমাপ্ত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সাসমাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য হুমায়ুন খালিদ জানান, এই টেক্সটাইলইনস্টিটিউট স্থাপিত হলে প্রতিবছর ৮০ জন বস্ত্র প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদ তৈরী হবে। এতে মানবসম্পদের উন্নয়ন হবে, যা ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। এ সব বিবেচনায় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের এ প্রস্তাবটি একনেকে অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়েছে।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে টেক্সটাইলখাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এ খাতের উত্তরোত্তর অগ্রগতির সাথে সাথে প্রশিক্ষিত ডিগ্রিধারীদের চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু চাহিদা থাকা সত্ত্বেও পর্যাপ্ত সংখ্যক টেক্সটাইলইনস্টিটিউট না থাকায় এ খাতে উচ্চতর ডিগ্রিধারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে টেক্সটাইল সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে বিদেশী ডিগ্রিধারীদের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের আওতায় দেশে বর্তমানে ৩টি টেক্সটাইলইনস্টিটিউট (দিনাজপুর, টাঙ্গাইল ও বরিশালের গৌরনদী) এবং ৫টি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (চট্টগ্রাম জেলার জোরারগঞ্জ উপজেলা, টাঙ্গাইল, নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলা, বরিশাল ও পাবনা) শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ ছাড়া ৪টি টেক্সটাইলইনস্টিটিউট (চট্টগ্রাম, খুলনা, নাটোর ও রংপুর) ও ২টি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (ঝিনাইদহ ও গোপালগঞ্জ) স্থাপনের কার্যক্রম চলছে। সম্প্রতি ভোলা টেক্সটাইলইনস্টিটিউট স্থাপন শীর্ষক প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদিত হয়েছে। বেগমগঞ্জ, বরিশাল ও পাবনায় অবস্থিত ডিপ্লোমাইনস্টিটিউটগুলো কলেজে রূপান্তরিত হওয়ায় ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউটের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার জন্য ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপিত হওয়ায় ডিপ্লোমাইনস্টিটিউটের চাহিদা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
জামালপুর জেলায় কোনো টেক্সটাইলইনস্টিটিউট নেই। এ জেলায় ১টি টেক্সটাইলইনস্টিটিউট স্থাপিত হলে উল্লিখিত জেলাসহ আশপাশের জেলার লোকজন এর সুবিধা পাবেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে মোট ৭৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ২০১৭ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পটির অনুমোদন প্রক্রিয়াকরণের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে প্রেরণ করা হয়। প্রকল্পটি অনুমোদনের প্রস্তাব বিবেচনার লক্ষ্যে ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তী সময়ে ৬৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে প্রকল্পটির উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করা হয় এবং প্রকল্প এলাকা মেলান্দহ এর পরিবর্তে মাদারগঞ্জ প্রস্তাব করা হয়। প্রকল্প এলাকা পরিবর্তনের কারণে পুনরায় ২০১৪ সালে ২১ ডিসেম্বর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই পিইসি সভার সুপারিশের পরিপ্রক্ষিতে মোট ৬২ কোটি ৫০ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর ২০১৭ মেয়াদে বাস্তবায়নের নিমিত্ত প্রকল্পটির অনুমোদন প্রক্রিয়াকরণের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি প্রক্রিয়াকরণ শেষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী সভায় অনুমোদনের সুপারিশ করেছে পরিকল্পনা কমিশন।