অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত
‘জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা ২০১৪’ এর চূড়ান্ত খসড়ার কাজ শেষ হয়েছে ১৬ মার্চ। ওই দিন সচিবালয়ের তথ্য অধিদফতরে নীতিমালা তৈরির জন্য গঠিত কমিটি সর্বশেষ বৈঠক শেষে নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত করে।
কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অনলাইন নিউজ পোর্টালের জন্য কোনো ধরনের জামানত রাখতে হবে না বলে জানা গেছে। তবে, খসড়া এই নীতিমালা চূড়ান্ত করার দায়িত্ব তথ্য মন্ত্রণালয়ের।
অনলাইন নীতিমালার জন্য গঠিত কমিটির সভাপতি ও প্রধান তথ্য কর্মকর্তা তছির আহম্মাদ বলেন, ‘নীতিমালার খসড়া তৈরি করেছি আমরা। নীতিমালা চূড়ান্ত করবে মন্ত্রণালয়। আগামী সপ্তাহে আমরা অনলাইনে প্রকাশ করব। যদি কারো সুপারিশ থাকে সেটাও জানতে পারব, যাতে কারো কোনো অভিযোগ না থাকে। এরপর আমরা মন্ত্রণালয়ে জমা দেব।’
এ দিকে অনলাইন নীতিমালা প্রণয়নের প্রক্রিয়া নিয়ে কেউ কেউ হতাশা জানিয়েছেন। বাংলাদেশের প্রথম অনলাইন নিউজপোর্টাল বিডি নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালেদী জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা ২০১৪ কমিটির সদস্য। তিনি বলেন, ‘অনলাইন নীতিমালার কোনো বৈঠকে আমি অংশগ্রহণ করিনি।’ তবে তার প্রতিনিধি হিসেবে প্রতিষ্ঠানের বার্তা সম্পাদক অনলাইন নীতিমালার একটি বৈঠকে অংশ নিলেও পরবর্তী কোনো বৈঠকে বিডি নিউজের পক্ষে কেউ অংশ নেননি।
তথ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, নীতিমালা সংক্রান্ত কার্যক্রমে নিজেদের আপত্তির বিষয়ে একটি চিঠিও পাঠিয়েছে বিডি নিউজ। তৌফিক ইমরোজ আরও বলেন, ‘বার্তা সম্পাদক একটি বৈঠকে গিয়েছিল, সে হতাশ হয়ে ফিরে এসেছে। একটা ছোট্ট চিঠি আমাদের অফিস থেকে গেছে (পিআইডিতে)।
যেখানে সমস্যাগুলোর কথা বলা হয়েছে।’
এই বিষয়ে তছির আহম্মাদ বলেন, ‘আমরা চাই অনলাইন গণমাধ্যম সংশ্লিষ্টদের সুবিধার জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করতে। এই প্রক্রিয়া এখনো চলছে। চূড়ান্ত হওয়ার আগে পর্যন্ত যে কোনো আপত্তি আমলে নেওয়ার সুযোগ আছে।’
কমিটির সদস্য মুস্তাফা জব্বার বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব শেষ। এখন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নীতিমালা চূড়ান্ত করা।’
অনলাইন নীতিমালা প্রণয়নে গঠিত কমিটি প্রথমে খসড়া নীতিমালা তৈরির জন্য একটি উপ-কমিটি গঠন করে। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ মোস্তফা জব্বারের নেতৃত্বে গঠিত উপ-কমিটি খসড়া নীতিমালা জমা দিলে খসড়া চূড়ান্ত করতে তিনটি বৈঠক করে মূল কমিটি।
জানা গেছে, নীতিমালা অনুযায়ী অনলাইন গণমাধ্যমের কার্যক্রম দেখভালে একটি কমিশন গঠন করা হবে। একজন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে প্রয়োজনীয়সংখ্যক সদস্য নিয়ে গঠিত এই কমিশন নীতিমালার পরিপন্থি কাজ করলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে পারবে। সরকার বরাবর নীতিমালা লঙ্ঘণকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করতে পারবে কমিশন। তবে, অভিযোগ প্রমাণিত হলে সরকারই কেবল শাস্তি প্রদান করতে পারবে।
কোনো ধর্মের প্রতি অবজ্ঞামূলক, বন্ধু রাষ্ট্রের সুসম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি পরিপন্থি, বিচার কাজে নিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তা, সশস্ত্র ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীর প্রতি কটাক্ষসহ আরও কিছু বিষয়ে সংবাদ পরিবেশনে বিধি নিষেধ রয়েছে। এ ছাড়াও ছবি, লেখা, কার্টুনে অশ্লীলতা কিংবা চরমপন্থাকে উসকে দিলে সেই পোর্টালের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।
একইসঙ্গে নীতিমালা চূড়ান্ত হলে অনলাইন গণমাধ্যমগুলো সরকারি বিজ্ঞাপনসহ অন্যান্য গণমাধ্যমের মতো সুযোগ-সুবিধা পাবে।