মন্ত্রিসভায় খোকনের বিরোধিতা, সেলিম ‘মন্দ না’

Cabinet-Meetingএবার মন্ত্রিসভাতেও বিরোধিতার মুখে পড়লেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কপোরেশনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী সাঈদ খোকন। মন্ত্রিসভার সোমবারের নিয়মিত সাপ্তাহিক বৈঠকে একাধিক মন্ত্রী দলীয় প্রার্থী হিসেবে সাঈদ খোকনের বিষয়ে আপত্তির সুরে কথা বলেছেন।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্র দ্য রিপোর্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে ঢাকা উত্তরের প্রার্থী আনিসুল হককে নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বৈঠকে।
বৈঠকের অনির্ধারিত আলোচনায় সিটি কপোরেশন নির্বাচন নিয়ে কথা উঠলে সাঈদ খোকনের বিষয়ে দুই সদস্য বিরোধিতা করেন। সূত্র অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও নৌমন্ত্রী শাজাহান খান ঢাকা দক্ষিণের দলীয় প্রার্থী নিয়ে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন। একই সময় খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামও শাজাহান খানকে সমর্থন করে কথা বলেন। এ সময় আরেক মন্ত্রী দক্ষিণের প্রার্থী হিসেবে হাজী সেলিম ‘মন্দ না’ বলেও মন্তব্য করেন। তবে হাজী সেলিমের বিষয়ে মন্তব্য করা মন্ত্রীর নাম জানাতে পারেনি সূত্রটি। সূত্রের মন্তব্য, ‘আলোচনার মধ্যে হাজী সেলিমের বিষয়ে কে যেন ‘‘মন্দ না’’ কথাটি বলেছেন। তবে আমি তার (সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর) দিকে খেয়াল করিনি।’
সিটি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার আগেই দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা ঢাকা দক্ষিণের দলীয় প্রার্থী হিসেবে কাজ করার সবুজ সঙ্কেত দেন সাঈদ খোকনকে। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে সাঈদ খোকনকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণার বিপরীতে বিরোধিতা বাড়ছে। গুঞ্জণ আছে, বদল হতে পারে দক্ষিণে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী।
দলীয়প্রধানের সবুজ সঙ্কেতে মাঠে থাকা সাঈদ খোকনের পাশাপাশি ঢাকা-৭ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাজী সেলিমও নিজেকে দলীয় সমর্থন প্রত্যাশী বলে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মন্ত্রিসভায় এ বিষয়ে যখন আলোচনা চলছিল তখন প্রধানমন্ত্রী আলোচনা কাউন্সিলরদের প্রসঙ্গে নিয়ে যান। তখন তিনি কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়নে কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে দায়িত্ব দেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা হলেন- আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু (শিল্পমন্ত্রী), তোফায়েল আহমেদ (বাণিজ্যমন্ত্রী), সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম (খাদ্যমন্ত্রী)।
তাদের সঙ্গে মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজ এবং জাপান সফরে থাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম (ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী) যোগ দেবেন বলে জানা গেছে।
১৮ মার্চ নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ ২৮ এপ্রিল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ২৯ মার্চ। ১ ও ২ এপ্রিল বাছাই এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৯ এপ্রিল।
২০০২ সালের এপ্রিল মাসে ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সে অনুযায়ী ২০০৭ সালের মে মাসে নির্বাচিত পরিষদের মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু নানা জটিলতায় পুনরায় নির্বাচন করা যায়নি। ২০১১ সালে সিটি করপোরেশনকে উত্তর ও দক্ষিণ- এ দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়।
২০১২ সালে নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও আইনি জটিলতার কারণে আদালতের নির্দেশে তা বন্ধ হয়ে যায়। শুরু থেকেই প্রশাসক নিয়োগ করে দুই সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com