সংসদীয় কমিটির ক্ষোভ, টাকা ছাড়া নতুন সংযোগ মেলে না পল্লীবিদ্যুতে
পল্লীবিদ্যুতের নতুন সংযোগ দিতে গ্রামাঞ্চলের মানুষদের অতিরিক্ত টাকা দিতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে জাতীয় সংসদের সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিতে। জাতীয় সংসদ ভবনে সোমবার অনুষ্ঠিত কমিটির ১৩তম বৈঠকে এ অভিযোগ উত্থাপন করে তীব্র অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন কমিটির সদস্যরা।
কমিটির সভাপতি শওকত আলীর সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক, আব্দুর রউফ এবং এ্যাডভোকেট নাভানা আক্তার অংশ নেন। বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে অভিযোগ করা হয়, দাবি করা টাকা না দিলে গ্রাহকদের হয়রানি এমনকি অনুমোদন পাওয়ার পরও দিনের পর দিন সংযোগ দিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট এলাকার ঠিকাদাররা। সবকিছু জেনেও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড দায়ীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই গ্রহণ করছে না।
তারা অনতিবিলম্বে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রণালয়কে পদক্ষেপ গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন।
কমিটি সূত্র জানায়, বৈঠকে বিদ্যুতায়ন বোর্ডের কার্যক্রম, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের অডিট এবং আর্থিক বিষয়াদি ও বিগত ৫ বছরের অডিট আপত্তির বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
এ সময় বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সংগঠনিক কাঠামো, কার্যাবলী, বিগত বছরগুলোর সাফল্য এবং বর্তমান সরকারের লক্ষ্যমাত্রা, চলমান প্রকল্প, প্রস্তাবিত প্রকল্প, ভিশন ২০২১ এর বিষয়ে একটি প্রতিবেদন কমিটির বৈঠকে উপস্থাপন করা হয়।
বৈঠকে জানানো হয়, বিগত ৫ বছরে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের মোট অডিট আপত্তির সংখ্যা এক হাজার ১৪৬টি। এরমধ্যে ৮২০টি ইতোমধ্যে নিষ্পত্তি করা হয়েছে, আর ৩২৬টি এখনও অনিষ্পন্ন রয়েছে। কমিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় উপসনালয়ের উপর থেকে বিদ্যুতের লাইন অপসারণের বিষয়ে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডকে সুপারিশ করে।
এ ছাড়া প্রাকৃতিক কারণে বিদ্যুতের লাইন ছিঁড়ে গেলে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড সে লাইন সংস্কার, পুনঃস্থাপন, বিদ্যুৎ বিভাগের উৎপাদন ক্ষমতা ও বিতরণ সুষ্ঠুভাবে সমন্বয় সাধন এবং বোর্ডের মাধ্যমে নতুন লাইন নির্মাণের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার সুপারিশ করা হয়।
এ ছাড়া সোলার ক্রয়ের জন্য কাজের বিনিময়ে খাদ্য প্রকল্প থেকে যে পরিমাণ অর্থ কর্তন করা হয় তার হিসাব সঠিকভাবে মনিটরিং এবং বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের মাধ্যমে গ্রাহকের নিকট থেকে যে অতিরিক্ত অর্থ দাবি করা হচ্ছে সে বিষয়ে মনিটরিং জোরদার করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।