শেরপুর, শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতিতে বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা দিবস পালিত
শেরপুর : সারাদেশের মতো শেরপুরেও পালিত হচ্ছে মহান স্বাধীনতা দিবস। সকালে শেরপুর মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শুরু হয় দিনের কর্মসূচী। প্রথমে সরকার দলীয় হুইপ আতিউর রহমান আতিক পুষ্পস্তবক প্রদান করেন। পরে একে একে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জাসদ পুষ্পস্তবক অর্পন করে। এছাড়া বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনও পুষ্পস্তবক অর্পন করে।
সকাল ৮ টায় মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি স্টেডিয়ামে দিবস উপলক্ষে কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহন করেন জেলা প্রশাসক জাকীর হোসেন ও পুলিশ সুপার মেহেদুল করিম। কুচকাওয়াজ শেষে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শারীরিক কসরত প্রদর্শন করে।
দুপুরে শিল্পকলা একাডেমীতে শেরপুর পৌরসভার উদ্যোগে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
শ্রীবরদী: ‘রাজাকারমুক্ত ও স্বাধীনতা বিরোধীমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার’ দৃপ্ত প্রত্যয় নিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদা ও বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আজ ২৬ মার্চ বৃহষ্পতিবার শ্রীবরদীতে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতিবাহী মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শ্রীবরদী উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচী গ্রহণ করে।
এসব কর্মসূচীর মধ্যে ছিল সরকারি, বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কবর জিয়ারত, স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কুচকাওয়াজ, শরীরচর্চা প্রদর্শনী, মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা, হাসপাতাল, এতিমখানায় উন্নতমানের খাবার পরিবেশন, মসজিদ, মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, আলোকসজ্জা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
রাত ১২.১ মিনিটে শহীদ স্বৃতিস্তম্ভে পরে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে দিবসটির সূচনা করেন জাতীয় সংসদ সদস্য প্রকৌশলী এ. কে. এম ফজলুল হক চাঁন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাবিবা শারমিন সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।প্রত্যুষে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে স্বাধীনতা দিবসের কার্যক্রম শুরা করা হয়।
সকাল ৯ টায় শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের গণকবর জিয়ারত করা হয়। সকাল সাড়ে ৯ টায় শ্রীবরদী সরকারি কলেজে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও আ‘লীগ সভাপতি আশরাফ হোসেন খোকা। আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন শেষে পুলিশ,বয়েজ স্কাউট, গার্লস গাইড এবং স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে কুচকাওয়াজ ও শরীরচর্চা প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।
দুপুর ২ টায় উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে শহীদ শাহ মুতাসিম বিল্লাল খুররম বীর বিক্রম স্মৃতি অডিটরিয়ামে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেয়া হয়। এতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাবিবা শারমিনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন খোকা।
বক্তব্য দেন অফিসার ইনচার্জ মোঃ বেলাল হোসেন তরফদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোতাহারুল ইসলাম লিটন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উপজেলা ইউনিট কমান্ডার আলহাজ্ব আমিনুল ইসলাম ]প্রমুখ। পরে প্রধান অতিথি মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে উপহার প্রদান করেন।দুপুর ৩ টায় শ্রীবরদী এমএনবিপি সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে মহিলাদের ক্রীড়া অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যায় উপজেলা পরিষদ চত্বরে স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়ে। এছাড়া বিকালে উপজেলা পরিষদ মাঠে উপজেলা পরিষদ একাদশ ও পৌরসভা একাদশের মধ্যে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, রাতে শ্রীবরদী শহীদ মিনার মাঠে মুক্তিযোদ্ধ ভিত্তিক মঞ্চ নাটক মঞ্চায়িত হয়।
ঝিনাইগাতী :: শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে যথাযোগ্য মর্যাদায় ১৬ ডিসেম্বর ৪৩তম মহান বিজয় দিবস পালিত হয়েছে। উৎসব মুখর পরিবেশে দিবসটি উদযাপনের লক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করে। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রত্যুষে একত্রিশ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে সরকারীভাবে দিবসের শুভ সূচনা করা হয়। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি ফলকে পুস্পস্তবক অর্পন করা হয়। সকাল ৯টায় স্থানীয় স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিক ভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, কুচকাওয়াজ ও শারিরীক কসরত প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। কুচকাওয়াজে সালাম ও অভিবাদন গ্রহন করেন যথাক্রমে উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাদশা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ফকির আঃ মান্নান মাষ্টার ও ঝিনাইগাতী থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম ফসিহুর রহমান। দিনব্যাপী দিবসটি পালন উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে ক্রীড়া প্রতিযোগীতা, শিশুদের মাঝে চিত্রাংকন প্রতিযোগীতা, মহিলাদের ক্রীড়া প্রতিযোগীতা, প্রামান্য চলচিত্র প্রদর্শনী, প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, জাতির শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করে মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ও অন্যান্য উপসনালয়ে মোনাজাত ও দোয়া প্রার্থনা, হাসপাতাল ও এতিমখানায় উন্নত মানের খাদ্য সরবরাহ। এবারের আলোচনার বিষয় ছিল সুখী, সমৃদ্ধ, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তির সার্বজনীন ব্যবহার শীর্ষক আলোচনা।