আমার লাশকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট চাই না : কাদের সিদ্দিকী
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম বলেছেন, ‘জীবিত থাকাকালে কোন মুক্তিযোদ্ধা যথাযথ সম্মান পায় না, মৃত্যুর পর পুলিশের ময়লা বুট দিয়ে মাটিতে লাথি মারা হয়। আমি মারা যাওয়ার পর আমার লাশকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্যালুট করা হোক সেটা আমি চাই না। মুক্তিযুদ্ধে আমি যদি মারা যেতাম, তবে আজ আমার স্মৃতির প্রতি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা জানাতেন। অথচ জীবিত আছি বলে ফুটপাতেও নিরাপদে থাকতে পারবো না, সেটা আমি ভাবিনি কখনো।’
মহান স্বাধীনতা দিবসে বৃহস্পতিবার বিকেলে মতিঝিলের দলীয় কার্যালয়ের সামনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি মারা গেলে আপনার স্মৃতি অর্পণের কোন সুযোগ হবে না, আপনি আমার মরদেহে ফুল দিতে পারবেন না। আমার মরদেহের পাশে যাওয়ার অধিকারও আপনাকে দেব না।’
বঙ্গবীর বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সেনাদের রক্ত আমাদের রক্তের সাথে একাকার হয়েছে, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর প্রায় ১৬ বছর আমি ভারতের আশ্রয়ে ছিলাম বলে মাতৃভূমি বাংলাদেশের পরে আমি ভারতের একনিষ্ঠ সমর্থক। কিন্তু ৫ই জানুয়ারির তামাশার নির্বাচনে সমর্থন দিয়ে বাংলাদেশে ভারতের জনপ্রিয়তা অনেক নিচে নেমে গেছে। আর বিশ্বকাপ ক্রিকেটের কোয়ার্টার ফাইনালে যে আচরণ করেছে তাতে বাংলাদেশের মানুষের হৃদয় থেকে ভারতের নাম মুছে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভারত যদি বাংলাদেশের মানুষের সমর্থন না চেয়ে শুধু শেখ হাসিনার সমর্থন চায়, তবে এদেশে একদিন ভারতের নাম নেওয়ার মানুষ থাকবে না।’
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলের যুগ্ম-সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী, বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মীর আহমেদ মীরু, ছাত্র আন্দোলনের আহবায়ক রিফাতুল ইসলাম দীপ, কাওসার জামান খান, প্রকোশলী ফেরদৌস ইসলাম, শ্রমিক নেতা আনিসুর রহমান ও ছাত্রনেতা জিহাদ চৌধুরী।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আলোচনায় বসে এবং বেগম খালেদা জিয়াকে অবরোধ প্রত্যাহার করে দেশ ও মানুষ বাঁচানোর দাবিতে গত ২৮ জানুয়ারি থেকে একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম মতিঝিলে তার রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ের সামনে ফুটপাথে অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন।