প্রতিমন্ত্রী বিপুর বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি!
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক শামীমুন নাহার লিপি। ২৭ মার্চ শুক্রবার এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলামেইল২৪ডটকম।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লিগ্যাল নোটিশের কোনো জবাব না দেওয়ায় শুক্রবার লিপি নিজেই প্রতিমন্ত্রী বিপুর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতির বিষয়টি বাংলামেইলকে জানিয়েছেন।
প্রতিবেদন থেকে জানা জায়, এর আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি লিপির পক্ষ থেকে প্রতিমন্ত্রী বিপুকে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়।
বিপুকে পাঠানো লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, প্রতিমন্ত্রী বিপুর লোকজন লিপির উপর বিভিন্ন সময় হামলা চালিয়েছে। তারা তাকে হত্যারও হুমকি দিয়েছে। ২০১০ সালের ৫ অক্টোবর লিপির বিরুদ্ধে র্যাবের মাধ্যমে ইয়াবা মামলাও দেয়া হয়। মামলাটি বিপুর প্ররোচনায় হয়েছে বলে র্যাবের এডিজি কর্নেল জিয়াউল আহসান লিপির কাছে স্বীকার করেন। পরের বছর ২০১১ সালের ৯ আগস্ট ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করেন লিপি। সে সম্মেলনে বিপুর লোকজন হামলা চালায়।
নোটিশে আরো বলা হয়, ২০১২ সালের ১ জুলাই লিপি দ্বিতীয়বার একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানেও বিপুর লোকজন লিপিকে হত্যার হুমকি ও ভয় দেখায়। লিপির থাইরয়েড সমস্যাকে মাদক রিপোর্ট বলে বিপু অপপ্রচার চালাচ্ছে বলেও নোটিশে অভিযোগ করা হয়।
উল্লেখ্য, লিগ্যাল নোটিশের মাধ্যমে প্রতিমন্ত্রী বিপুর বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীপরিষদ সচিবসহ পাঁচ জনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন লিপি। সেখানেও তাকে হয়রানি ও হত্যার হুমকির বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়াও লিগ্যাল নোটিশটি পাঠানোর পর বিপু কেরানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীনকে দিয়ে লিপিকে ফোন করান। সেই ফোনের ভিত্তিতে গত ২২ ফেব্রুয়ারি বনানী ডিওএইচএসে তাকে একটি বাসায় দেখা করতে বলেন। তিনি সেখানে যেতে আপত্তি জানালেও সেই বাড়িতে গিয়ে আলোচনায় বসাতে বাধ্য করা হয়। পরে লিপি কয়েকজন আইনজীবীসহ ১২ জনকে নিয়ে সেখানে যান। কিন্তু আলোচনায় ধানমণ্ডির ৪৮ নং ওয়ার্ড কমিশনার আমজাদ হোসেন মিয়া এবং একজন আইনজীবীসহ পাঁচজনকে রেখে অন্যদের বের করে দেয়া হয় বলেও লিপি অভিযোগ করেন।
আলোচনা চলাকালে বিপু তাকে হুমকি দেয় জানিয়ে লিপি বলেন, ‘বিপু আমাকে পাগল ও চরিত্রহীনা আখ্যায়িত করে আমার মানহানী করেছে। আলোচনায় বসেও বারবার বিপু হুমকি দিয়েছেন। তিনি আমার চারিত্রিক বিষয় নিয়েও অশালীন মন্তব্য করেছেন। একই সঙ্গে বলেছেন, ‘এতোদিন যা করেছি, এটা কিছুই না। আপনি যদি আমার নামে মামলা করতে যান, তাহলে আমি আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে দেখে নিবো। এটা আমার বাংলাদেশ, কোথাও বিচার পাবেন না।’
শামীমুন নাহার লিপি আরো বলেন, ‘বিপু তার লোকজন দিয়ে আমাকে বাবার বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে দেয়। আমার আইফোন, মার্কিন পাসপোর্ট ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে যায়। সম্প্রতি সে আইফোনে থাকা আমার ছবির সঙ্গে অন্য মানুষের ছবি জুড়িয়ে দিয়ে বিভিন্নস্থানে অপপ্রচার চালাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বিপুর নির্দেশে তার লোকজন আমাকে শারীরিক, মানসিক ও অর্থনৈতিকভাবে নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। এজন্য আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছেও অভিযোগ করেছি। এমনকি এসব অভিযোগ স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকেও জানিয়েছি। কিন্তু স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আমাকে বলেছেন, ‘আমি তো ওনার কাছে চুনোপুটি।’ এ বিষয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা, মার্কিন দূতাবাসে অভিযোগ ও এসব বিষয়ে মামলা করার পরামর্শ দেন।’
পরে লিপি গত ১৫ মার্চ মার্কিন দূতাবাসে গিয়ে এসব বিষয়ে অভিযোগ জানান। দূতাবাস লিপির নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে জানায়।