সব রেকর্ড ভেঙেছে এবারের বিশ্বকাপ
মাঠে দর্শকের উচ্ছল উপস্থিতি থেকে শুরু করে টেলিভিশনের সামনে দাঁতে নখ কাটা পলকহীন নজর- সবরকমের বিবেচনায় ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বকালের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে এবারের বিশ্বকাপ।
অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের যৌথ আয়োজনে শেষ হতে চলা এ ক্রিকেটযজ্ঞের ফাইনালের আগে শনিবার (২৮ মার্চ) এ খবরই দিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা আইসিসি।
পরিসংখ্যান প্রকাশ করে দেওয়া এক বিবৃতিতে আইসিসির পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রতিটি খেলায় মাঠে দর্শকের বাঁধভাঙা উপস্থিতি, টেলিভিশনের সামনে পলকহীন বসে থাকা, রেডিওতে গভীর মনোযোগে কান পেতে থাকা, পত্রিকার পাতায় ক্রিকেটযজ্ঞের খবর হজম করা, অনলাইন নিউজ পোর্টাল এমনকি আইসিসির ওয়েবসাইটেও ঢুঁ মারাসহ সার্বিক বিবেচনায় ক্রিকেটের ইতিহাসের সবচেয়ে সফল আসর যাচ্ছে এবার।
বিবৃতিতে জানানো হয়, এবারের বিশ্বকাপ কাভারে কাজ করেছেন রেকর্ডসংখ্যক ১৪শ’ সাংবাদিক। ২২০টি অঞ্চলে সাতটি ভাষায় খেলা সরাসরি প্রচার করেছে ৪৪টি নিবন্ধিত সম্প্রচারমাধ্যম। ৮০টি অঞ্চলে সরাসরি ধারাবর্ণনা শুনিয়েছে ১০টি নিবন্ধিত বেতারমাধ্যম।
বিবৃতিতে বিস্ময় প্রকাশ করে আইসিসির তরফ থেকে বলা হয়, স্বাগতিক দলের খেলা ছাড়াই এই প্রথম কোনো মাঠে ৮৬ হাজারের বেশি দর্শকের উপস্থিতি দেখলো ক্রিকেটবিশ্ব। ২২ ফেব্রুয়ারি লাখোধিক দর্শকের ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে গ্রুপ পর্বে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার ম্যাচে ভারতীয় ও দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটভক্তরা তাদের দলকে প্রেরণা যোগাতে গ্যালারিতে উপস্থিত হয়ে এ রেকর্ড গড়েন।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, ৪৪টি নিবন্ধিত সম্প্রচারমাধ্যমে একযোগে সাত ভাষায় ২২০ অঞ্চলে সরাসরি প্রচারিত এবারের বিশ্বকাপের কেবল ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার ম্যাচটিই দেখেছেন কয়েকশ মিলিয়ন দর্শক। কেবল ভারত থেকেই ম্যাচটি দেখেছেন ২৮৮ মিলিয়ন ক্রিকেটপ্রেমী। আর ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার গ্রুপ পর্বের খেলাটিও দেখেছেন ২.১ মিলিয়নেরও বেশি দর্শক।
আইসিসির উচ্ছ্বাসের খবর এখানেই শেষ নয়। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, এবারের বিশ্বকাপ উপভোগে প্রযুক্তিরও বিস্ময়কর ব্যাবহার দেখিয়েছেন ক্রীড়ানুরাগীরা। হিসাব মতে, ক্রিকেটযজ্ঞ চলাকালে বিশ্বকাপ কাভার করা ওয়েবসাইটগুলো পেয়েছে সোয়া ২৬ মিলিয়নেরও বেশি ইউনিক ভিজিটর। অবিশ্বাস্যভাবে পেয়েছে ২২৭ মিলিয়ন পেজ ভিউ।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থাটির আরও উচ্ছ্বাসের খবর হলো, আইসিসির এবারের বিশ্বকাপ অ্যাপ্লিকেশনটি এখন পর্যন্ত ৩.৬ মিলিয়ন বার ডাউনলোড হয়েছে, এর মধ্যে আবার অন্তত ৪৮টি দেশেরই শীর্ষ স্পোর্টস অ্যাপের জায়গা দখল করে নিয়েছে এই অ্যাপ।
এ পরিসংখ্যানে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে আইসিসির প্রধান নির্বাহী ডেভিড রিচার্ডসন বলেন, ক্রিকেটের কোনো আয়োজনের ইতিহাসে এই বিশ্বকাপ সবচেয়ে বেশি অংশগ্রহণের রেকর্ড গড়েছে। কেবল ক্রিকেটের ইতিহাসই নয়, যেকোনো ক্রীড়া আয়োজনেই অন্যতম সেরার জায়গা দখল করেছে এবারের ক্রিকেট বিশ্বকাপ আসর।
আইসিসি নির্বাহী বলেন, দিনে দিনে ক্রিকেটের প্রতি মানুষের প্রেম-ভালোবাসা বাড়ছে, তারই প্রমাণ এই পরিসংখ্যান।
ক্রিকেটযজ্ঞের ফাইনাল এখনও বাকি, ২৯ মার্চের ফাইনাল শেষে কোথায় দাঁড়াবে এ পরিসংখ্যান? খেলার ফলাফল দেখার অপেক্ষার পাশাপাশি এখন এই চূড়ান্ত পরিসংখ্যান দেখারও অপেক্ষায় ক্রিকেটপ্রেমীরা।