‘২৬, ২৭ ও ২৮ এপ্রিলের এইচএসসির তারিখ পরিবর্তন হবে’
আসন্ন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কারণে আগামী ২৬, ২৭ ও ২৮ এপ্রিলের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
সচিবালয়ে রবিবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সুষ্ঠু, নকলমুক্ত ও ইতিবাচক পরিবেশে অনুষ্ঠানের জন্য আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সভায় এ কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সভায় তারা জানিয়েছে, ‘২৮ এপ্রিল তিন সিটি করপোরেশনে নির্বাচন হবে। নির্বাচনের দিনের সঙ্গে আগের ও পরের দিন পরীক্ষা পেছানোর অনুরোধ জানিয়েছেন তারা। নির্বাচনের সময় আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অনেক বেশি ভূমিকা রাখতে হয়। আজকের সভায় আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী ২৬ এপ্রিল থেকে পরীক্ষা না নেওয়ার অনুরোধ করেছে। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ২৬ থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত পরীক্ষাগুলো পরিবর্তন করে দেব।’
এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার পূর্ব নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী ২৬, ২৭ ও ২৮ এপ্রিল পরীক্ষা রয়েছে।
‘যা কিছু ঘটুক নির্ধারিত সময়েই পরীক্ষা’
পূর্ব নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী ১ এপ্রিল থেকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে আবারো প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘যা কিছু ঘটুক, নির্ধারিত সময়েই আমরা পরীক্ষা নেব। এর ব্যত্যয় হবে না। এসএসসির মতো ফাঁকে ফাঁকে পরীক্ষা নিলে এ পরীক্ষা শেষ হতে দীর্ঘদিন লেগে যাবে।’
‘আমরা আর কত বিনয়ী হব, আর কত নত হবো। আমি এত চিৎকার করলাম, অন্তত পরীক্ষার আগে পরে ২ ঘণ্টা হরতাল দেবেন না। কেউ তা আমলে নেয়নি।’
আন্দোলনকারী নেতাদের মনে উপলব্ধি উদয় হবে না জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘দয়া করে পরীক্ষায় আর বাঁধা সৃষ্টি করবেন না। আর সর্বনাশের দিকে যাবেন না, হাত গুটিয়ে নিন।’
তিনি বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তের জন্য প্রধানমন্ত্রী আমাকে সমর্থন করেছেন। শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা ফোন করে বলেছেন, এটা বেস্ট সিদ্ধান্ত।’
ক্ষতি পোষাতে সবার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘হরতাল-অবরোধে কোন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলেছে, কোন কোন প্রতিষ্ঠান অর্ধেক চলেছে। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সবার সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
‘কিভাবে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া হবে সেজন্য আমরা অধ্যক্ষদের সঙ্গে বসে অভিজ্ঞতা বিনিময় করবো। এরপর ছুটি কমিয়ে, না অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে ক্ষতি পোষানো হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে’ বলেন নুরুল ইসলাম নাহিদ।
এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রে ভুল ছিল জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা আমরা খতিয়ে দেখছি। তবে এ ভুলের জন্য শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। সে তার প্রাপ্য পাবে।’
সভায় পুলিশ, র্যাবসহ আইন-শঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধিরা জানান, সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্নে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের জন্য তাদের সব ধরণের প্রস্তুতি রয়েছে। এবার পরীক্ষা পরিবর্তনের কোনো প্রয়োজন হবে না।
সভায় উপস্থিত কয়েকজন প্রতিনিধি পরীক্ষার সময় পরীক্ষা কেন্দ্রের পাশ্ববর্তী ফটোকপি করার দোকান বন্ধ রাখতে নির্দেশনা জারির সুপারিশ করেন। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান মন্ত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, ফেসবুকে প্রশ্ন ফাঁসের অপপ্রচারসহ, শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া প্রশ্নপত্র প্রণয়ন এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের আত্মীয়-স্বজনদেরকেও মনিটরিংয়ের আওতায় রাখা হয়েছে।
সভায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন, বিভিন্ন বোর্ড চেয়ারম্যান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।