পরীক্ষা শুরু বুধবার; এবার এইচএসসিতে পরীক্ষার্থী ১০ লাখ ৭৩ হাজার
এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে বুধবার (১ এপ্রিল)।
গত বছরের তুলনায় এবার পরীক্ষার্থী কমেছে ৬৭ হাজার ৪৯০ জন।
৮টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ডের অধীনে ১০ লাখ ৭৩ হাজার ৮৮৪ জন পরীক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নেবে। গত বছর মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১১ লাখ ৪১ হাজার ৩৭৪ জন।
মোট অংশ নেওয়া পরীক্ষার্থীর মধ্যে এবার ছাত্র ৫ লাখ ৭০ হাজার ৯৯৩ ও ছাত্রী ৫ লাখ ২ হাজার ৮৯১ জন।
এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা উপলক্ষে সোমবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এসব তথ্য জানান।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এবার ৮টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসিতে ৮ লাখ ৮৬ হাজার ৯৩৩, মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে আলিমে ৮৪ হাজার ৩৬০, কারিগরি বোর্ডের অধীনে ৯৮ হাজার ২৪৭ ও ডিআইবিএসে (ডিপ্লোমা ইন বিজনেস স্টাডিজ) ৪ হাজার ৩৪৪ জন শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন।
পরীক্ষার্থী কম হওয়ার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, সৃজনশীল প্রশ্নে বেশির ভাগ পরীক্ষা হওয়ার কারণে এটা হতে পারে। এছাড়া ২০১৩ সালে এইচএসসিতে বেশি ফেল করেছিল। এতে পরের বছর অনিয়মিত শিক্ষার্থী বেশি ছিল, তাই তখন মোট শিক্ষার্থী বেশি হয়েছিল। এবার অনিয়মিত শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম।
মন্ত্রী জানান, তত্ত্বীয় (লিখিত) পরীক্ষা শেষ হবে ১১ জুন। ব্যবহারিক পরীক্ষা ১৩ জুন শুরু হয়ে শেষ হবে ২২ জুন।
এবার ৮ হাজার ৩০৫টি প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষা ২ হাজার ৪১৯টি কেন্দ্রের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে। দেশের বাইরে ৭টি কেন্দ্রে ২৪১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
নাহিদ বলেন, ‘২০১২ সালে শুধু বাংলা প্রথম পত্রের সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এবার ১৩টি বিষয়ের ২৫টি পত্রে সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।’
শ্রুতিলেখক নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী এবং বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ও শ্রবণপ্রতিবন্ধী (মুক ও বধির) পরীক্ষার্থীদের জন্য আগের মতো অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় বরাদ্দ থাকবে।
অনেক প্রতিষ্ঠান ১০০ ভাগ পাস দেখানোর জন্য একটু দুর্বল শিক্ষার্থীদের আটকে দেয় জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘নবম শ্রেণীতে ও একাদশ শ্রেণীতে যারা রেজিস্ট্রেশন (নিবন্ধন) করে তাদের মধ্য থেকে কতজন পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে তা আমরা দেখব। কি কারণে নিবন্ধিত শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিল না তা প্রতিষ্ঠানকে জানতে হবে।’
যে কোনো পরিস্থিতিতে পূর্ব নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী পরীক্ষা নেওয়া হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সকলের সহযোগিতা চাই। এর আগে যেমন বিভিন্ন স্থানে রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ বিভিন্ন স্থরের মানুষ পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতে সহযোগিতা করেছিল, আশা করি এবারও তারা তা করবেন। তাদের বলবো সংখ্যাটা বাড়িয়ে দেন। আমাদের যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার আমরা তা নিয়েছি।’
পরীক্ষার সময় নতুন কোনো হরতাল-অবরোধ না দেওয়া এবং পাবলিক পরীক্ষাকে আগের মতো রাজনৈতিক কর্মসূচির আওতাবহির্ভূত রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি অনুরোধ জানান মন্ত্রী।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘কোচিং সেন্টারগুলো নজরদারির মধ্যে রয়েছে। আর পরীক্ষার সময় ফটোকপির দোকান (পরীক্ষা কেন্দ্রের পাশ্ববর্তী) খুলতে দেবে না আমাদের আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী।’
‘কোনোভাবেই দুষ্টচক্রকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের বা ফেসবুকে প্রশ্নপত্রে নামে সাজেশন প্রকাশ করার সুযোগ দেওয়া হবে না। আমাদের সবগুলো এজেন্সি তৎপর থাকবে, ধরতে পারলে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।’
প্রথম পরীক্ষার দিন বুধবার সকাল ১০টায় শিক্ষামন্ত্রী ভিকারুননিসা নূন স্কুল এ্যান্ড কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শনে যাবেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
নিয়ন্ত্রণ কক্ষ
পরীক্ষা উপলক্ষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। এ কক্ষ থেকে সার্বক্ষণিকভাবে সারাদেশের এইচএসসি ও সমমানের সব পরীক্ষা তদারকি করা হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ১৭২২ নম্বর কক্ষে এ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ফোন নম্বর ৯৫৪৯৩৯৬। মোবাইল নম্বর-০১৭৭৭-৭০৭৭০৫, ০১৭৭৭-৭০৭৭০৬। ইমেইল-examcontrolroom@moedu.gov.bd। এছাড়া শিক্ষা বোর্ডের নিয়ন্ত্রণ কক্ষগুলোও আগের মতো চালু থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব স্বপন কুমার সরকার ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু বকর সিদ্দিকসহ অন্যান্য বোর্ডের চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।