‘সালাহ উদ্দিনকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে গেছে’
বিএনপির ‘নিখোঁজ’ যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাই তুলে নিয়ে গেছে বলে দাবি করেছে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ। সংগঠনটির অভিযোগ, সালাহ উদ্দিনকে উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্লিপ্ততাই প্রমাণ করে তারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের একটি প্রতিনিধি দল সোমবার দুপুরে সালাহ উদ্দিন আহমেদের গুলশানের বাসায় গিয়ে তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের কাছে এই দাবি জানান।
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের অন্যতম নেতা ও ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শওকত মাহমুদ বলেন, ‘সালাহ উদ্দিন আহমেদ বিএনপির পক্ষে বিবৃতি দিয়ে কথা বলতেন, এটাই হচ্ছে তার অপরাধ। তার নিখোঁজের বিষয়ে আদালতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল তা সরকারের এ্যাটর্নি জেনারেল সালাহ উদ্দিন আহমেদের স্ত্রীর আইনজীবীকে না দেখানো এবং সরকারের নিশ্চুপ থাকাই প্রমাণ করে এর সঙ্গে তারা জড়িত।’
তিনি বলেন, ‘আমরা পেশাজীবী পরিষদ অবিলম্বে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে অক্ষত অবস্থায় ফেরত চাই। এই গুম-অপহরণের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চলছে, চলবে।’
প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রুহুল আমিন গাজী। আরও ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার্স এ্যাসোসিয়েশনের (এ্যাব) সভাপতি আ ন হ আখতার হোসেন, সহ-সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম রিজু, এ্যাগ্রিকালচারিস্ট এ্যাসোসিয়েশনের (এ্যাব) সদস্য সচিব হাসান জারিফ তুহিন ও জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোট সভাপতি রফিকুল ইসলাম।
পেশাজীবী নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাতে সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী সাবেক সংসদ সদস্য হাসিনা আহমেদ দাবি করেন, ‘আমি শতভাগ নিশ্চিত আমার স্বামীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে গেছে। তাকে অক্ষত অবস্থায় ফেরত পেতে আমি সর্বমহলের সহযোগিতা চাই।’
দীর্ঘ ২০দিন ধরে স্বামীর খোঁজ না পেয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি আমার স্বামীর আজও খোঁজ পাচ্ছি না। আমার সন্তানদের কাছে আমি কী জবাব দেব।’
প্রসঙ্গত, গত ১০ মার্চ রাতে উত্তরার একটি বাসা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে তার পরিবার ও দল অভিযোগ করে আসছে। স্বামীর সন্ধানে হস্তক্ষেপ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেন তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ। এ ছাড়া স্বামীর খোঁজ চেয়ে উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদনও করেন। এ বিষয়ে আগামী ৮ এপ্রিল হাইকোর্টে শুনানীর তারিখ ধার্য করা আছে।
তবে পরিবার ও বিএনপির অভিযোগের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, পুলিশ সালাহ উদ্দিনকে গ্রেফতার করেনি। তার কোনো খোঁজও পাওয়া যায়নি।
এক সময়ের সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে ১৯৯১-৯৬ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এপিএস ছিলেন সালাহউদ্দিন। পরে তিনি চাকরি ছেড়ে কক্সবাজারের সংসদ সদস্য হন এবং সরকারের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদও সংসদ সদস্য ছিলেন। তাদের দুই ছেলে দুই মেয়ের মধ্যে বড় ছেলে সৈয়দ ইবরাহিম আহমেদ কানাডায় ও বড় মেয়ে পারমিজ আহমেদ ইকরা মালয়েশিয়ায়। ছোট ছেলে সৈয়দ ইউসুফ আহমেদ ও ছোট মেয়ে ফারিবা আহমেদ রাইসা ঢাকার স্কলাস্টিকা স্কুলে পড়ালেখা করে।