সিটি করপোরেশন নির্বাচন; বিএনপির অংশগ্রহণ নিয়ে ধোঁয়াশায় ১৪ দল
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ৩ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা নিয়ে এখনো ধোঁয়াশায় রয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট।
রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে মঙ্গলবার দুপুরে ১৪ দলের এক বৈঠকে এমন আলোচনা হয়। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা দ্য রিপোর্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জোট নেতারা জানান, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট যদি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আস, তাহলে ১৪ দল একক প্রার্থী চূড়ান্ত করবে। অন্যথায় প্রার্থিতা উন্মুক্ত রাখা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১৪ দলীয় জোটের প্রভাবশালী এক নেতা ২০ দলীয় জোটের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, সন্ত্রাসের পক্ষের শক্তি যদি নির্বাচনে কোনো প্রার্থীকে সমর্থন করে, তাহলে আমরা জোটগতভাবে একক প্রার্থীকে সমর্থন দেব। (১৪ দলীয়) জোটের নেতৃত্বাধীন দল এখনো একক কাউন্সিলর প্রার্থীকে সমর্থন করতে পারেনি, শরিকদের প্রার্থী সমর্থন করবে কীভাবে?
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শরিক দলের কয়েকজন নেতা নিজ দলের প্রার্থীদের পক্ষে কথা বলেন। এ সময় আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি (জেপি) ৭টি কাউন্সিলর প্রার্থী দাবি করেন। এর মধ্যে ৬টি ঢাকার দুই সিটিতে ও ১টি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে। সাম্যবাদী দলের পক্ষ থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী দাবি করা হয়। তবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের পক্ষ থেকে ঢাকা দুই সিটির যেকোনো একটিতে মেয়র দাবি করা হয়।
এ সময় ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বৈঠকে উপস্থিত নেতাদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা আপনাদের শক্তিশালী প্রার্থীদের তালিকা করেন। আগামী বৈঠকে প্রার্থিতা নিয়ে আলোচনা করে ঠিক করা যাবে।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক শরিক দলের নেতারা বলেন, একক প্রার্থীর বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। নির্বাচন মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে আলোচনা করে একটা সিদ্ধান্ত হতে পারে।
এর আগে ১৪ দল মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন— আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ড. আবদুর রাজ্জাক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, উপ-প্রচার সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এডভোকেট আফজাল হোসেন, শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সাত্তার, কেন্দ্রীয় সদস্য এস এম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শরীফ নুরুল আম্বিয়া, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান, গণতন্ত্রী পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুর রহমান সেলিম, বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খান, ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, জেপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল খায়ের সিদ্দিকী বাবু প্রমুখ।
বৈঠক সম্পর্কে ১৪ দলের শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সাধারণ সম্পাদক শরীফ নূরুল আম্বিয়া বলেন, ২০ দলীয় জোট যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকে তাহলে ১৪ দলীয় জোট একক প্রার্থীকে সমর্থন দিতে পারে। অন্যথায় অতীতের সকল স্থানীয় নির্বাচনের মতোই নির্বাচনে আমরা অংশ নেব।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির নেতারা মনোনয়ন কিনলেও তারা নানা ছুতায় নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়াতে চাইছেন। পত্র-পত্রিকার সংবাদে এমনটাই বোঝা যাচ্ছে। আমরা চাই তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরে আসুক।