‘কিসের ভাইবার? মানুষ অবাধে কথা বলবে’
‘কিসের ভাইবার? স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশে মানুষ অবাধে কথা বলবে’— এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘মানুষ ভাইবারে কথা বলেন, আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, স্যার আপনার ভাইবার আছে? আমি ভাইবার চিনি না। আমরা কোনো ভাইবার নেই। কিসের ভাইবার? স্বাধীন-সার্বভৌম দেশে মানুষ অবাধে কথা বলবে, কিসের আবার ভাইবার।’
জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে মঙ্গলবার বিকেলে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গণতন্ত্রের সংকট ও উত্তরণের পথ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ সব কথা বলেন। সভার আয়োজন করে ‘বাংলাদেশ বৌদ্ধ ফ্রন্ট’ নামের একটি সংগঠন।
জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে বিশ্বাস করে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, যিনি সেনাবাহিনীর অফিস থেকে এসে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আমরা তারই রাজনীতি করি। গণতন্ত্র নির্বাচনের মৌলিক নিয়ামক।’
‘যে গণতন্ত্রের চেতনায় দেশে স্বাধীন হয়েছিল, সেই গণতন্ত্র আজ নেই’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ মুহূর্তে বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় সংকট রাজনৈতিক। অর্থমন্ত্রীও বলেছেন, একটি জাতীয় নির্বাচন প্রয়োজন।’
‘একাদশ সংসদ নির্বাচনের লক্ষ্যে একটি আবহ তৈরি করতে সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সংলাপের মাধ্যমে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য আলোচনা করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এক বছরের বেশী সময় পার হয়ে গেল। তারা (ক্ষমাতাসীনরা) একটি নিয়ম রক্ষার নির্বাচনের কথা বলে ক্ষমতায় এসে এখন বলছে, আমরাতো ৫ বছরের জন্য ক্ষমতায় এসেছি। ২০১৯ সালের আগে নির্বাচন হবে না।’
সিটি নির্বাচন প্রসঙ্গে সাবেক এ সেনাপ্রধান বলেন, ‘সামনে নির্বাচন, দিন-তারিখ হয়ে গেছে। আমরা নির্বাচনে আসতে চাই। দলীয় চেয়ারপারসন ও ২০ দলীয় জোট নেতা খালেদা জিয়া নির্বাচনের ব্যাপারে ইতিবাচক। সত্যিকারের গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে হবে। বিশ্ব তাকিয়ে থাকবে, সকলের জন্য সমান ফিল্ড হতে হবে। নির্বাচনের জন্য সকলের সমান সুযোগ থাকতে হবে।’
মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘যারা নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হচ্ছেন তাদের নামে একাধিক মামলা। তারা আত্মগোপনে আছেন। তাদের মুক্তি দিতে হবে।’
‘সারাবিশ্ব উদ্বিগ্ন, বাংলাদেশ কঠিন সমস্যার মধ্যে আছে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কেউ নিরাপদ নয়, বাড়ি থেকে বের হতে পারে না। রাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। মা-বোন, সন্তান কেউ নিরাপদ নয়। সালাহ উদ্দিন হারিয়ে গেছে। আমি তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি, বাসায় গিয়েছি। তার ছেলেমেয়ে পারিবারের সদস্যদের আর্তনাদ শুনেছি। রাষ্ট্রক্ষমতায় যারা আছেন তারা উত্তর দিতে পারে না। প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। সালাহ উদ্দিনকে ফিরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব রাষ্ট্রের।’
বাংলাদেশ বৌদ্ধ ফ্রন্টের আহ্বায়ক প্রকৌশলী পুলক কান্তির সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন— ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমেদ, বিএনপির সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক নিতাই রায় চৌধুরী, পেশাজীবী নেতা প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া, অধ্যাপক ড. দিলীপ বড়ুয়া, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম দলের শ্যামা ওবায়েদ।