ঝিনাইদহের হাটগোপালপুরে ঝুলে আছে ২০ শয্যার হাসপাতাল নির্মান
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহের হাটগোপালপুর বাজারে প্রস্তবিত বিশ শয্যা হাসপাতালের ভবন নির্মাণ কাজ ঝুলে আছে নয় বছর। হাসপাতালের সরকারী জমি আছে তিন একর। দশ কোটি টাকার উপরে বরাদ্দও আছে। সরকারী ভাবে হাসপাতালের যন্ত্রপাতিও চলে এসেছে। কিন্তু রাজনৈতিক গন্ধ থাকায় হাসপাতাল ভবন নির্মান কাজ থেমে আছে বছরের পর বছর। হাসপাতাল না থাকায় এখানকার লোকজনকে জরুরি চিকিৎসা নিতে পনের থেকে ষোল কিলোমিটার দূরে যেতে হচ্ছে। হাটগোপালপুর এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন জানান, হাটগোপালপুর বাজার ঝিনাইদহ জেলার গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। এই বাজারের দিয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পদ্মকর, দোগাছি ও হরিশংকরপুর ইউনিয়ন এবং মাগুরা জেলার হাজিপুর এলাকার পাঁচটি গ্রামের পঞ্চাশ হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। এলাকাবাসি সুজিত কুমার কুণ্ডু বলেন, এলাকার মানুষের সমস্যা সমাধানে ২০০৬ সালে বিএনপির সরকার হাটগোপালপুর বাজারে হাসপাতাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। সরকার বাজারের পশ্চিম পাশে তিন একর জমি অধিগ্রহন করে। সুজিত নিজেও তের শতাংশ জমি দিয়েছেন। সরকারের প থেকে তাঁদের জমির মূল্য বাবদ সাড়ে বাষট্টি লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়। কিন্তু হাসপাতাল আর হয়নি। তাই এখনো হাটগোপালপুরসহ এলাকাবাসির চিকিৎসা নিতে পনের কিলোমিটার দূরে ঝিনাইদহ সদর অথবা ষোল কিলোমিটার দূরের মাগুরা হাসপাতালে যেতে হয়। সুজিত জানান, কিছুদিন আগে পাশের লৌহজং গ্রামের আসাদুল ইসলাম সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন। হাসপাতালে নেওয়ার পথেই তিনি মারা যান। এলাকাবাসির ধারণা বিএনপি সরকারের আমলে বরাদ্দ হওয়ায় হয়তো হাসপাতাল নির্মানের কাজ ঝুলে আছে। সেবা নিয়ে রাজনীতি করা ঠিক নয় বলেও এলাকাবাসি মনে করেন। ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিস সুত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সালে বাষট্রি লাখ বায়ান্ন হাজার ৮০৪ টাকা পরিশোধ করে সরকার তিন একর জমি অধিগ্রহন করে। একই বছরের চৌদ্দ আগস্ট বিশ শয্য হাসপাতালের ভবন নির্মাণের জন্য দশ কোটি টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়। ওই বছরের একুশ অক্টোবর তৎকালীন বিএনপি সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী আমিনুল হক ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির তৎকালীন সভাপতি মসিউর রহমান নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। এরপর বিএনপি সরকারের মেয়দ চলে যওয়ার পর আজও ভবনটি নির্মাণ হয়নি। ইতিমধ্যে হাসপাতালের কিছু যন্ত্রপাতিও চলে এসেছে। এ বিষয়ে সিভিল সার্জন আবদুস সালাম জানান, তাঁরাও চান ওই স্থানে হাসপাতালটি নির্মাণ করা হোক। কিন্তুু এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছাড়া সম্ভব নয়। বিষয়টি নিয়ে তিনি উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করবেন বলে জানান।