সিসি ক্যামেরার আওতায় আসছে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে দলটি। কার্যালয়ের নিরাপত্তা ও সাংগঠনিক জবাবদিহিতাসহ নানা কারণে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়।
দলীয় কার্যালয়ে অনাহুত ভিড় থেকে রক্ষা পেতে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রবেশে নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর এন্ট্রি করে রাখারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ উদ্যোগের প্রেক্ষিতে বুধবার থেকে কার্যালয়ের মূল প্রবেশ পথে একটি টেবিল ও চেয়ার নিয়ে একজন কর্মচারী শামীমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সেখানে বুধবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মোট ২৬ জন নেতাকর্মী দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করেছেন বলে এন্ট্রি খাতায় তথ্য লিখিত রয়েছে। (বৃহস্পতিবার) সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত দলটির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-দপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনিসহ মোট ১৫ জন নেতাকর্মী কার্যালয়ে প্রবেশ করেছেন।
কেন্দ্রীয় কার্যালয়েরর কর্মচারী শামীম বলেন, ‘উদ্যোগটি ভালই মনে হচ্ছে। অহেতুক অনেক মানুষ কার্যালয়ে আসে। অনেকেরই কোনো কাজ দেখি না। এসে শুধু বসে থাকে। ভিড় করে। তা ছাড়া তাদের আমরা স্টাফ বা কোনো নেতাও চেনেন না। সে সব কারণেই এখন এ ব্যবস্থাটি ভাল মনে হচ্ছে।’
আবদুল লতিফ জনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিরাপত্তার বিষয়টি খেয়াল রেখে শিগগিরিই এখানে বেশকিছু সিসি ক্যামেরা বসানো হবে। এর প্রাথমিক উদ্যোগ হিসেবেই নীচে রেজিস্টার খাতায় নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, ইমেইল ঠিকানা প্রভৃতি এন্ট্রির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘দাফতরিক কাজে জবাবদিহিতাও এ সব উদ্যোগের কারণ। কার্যালয়ে কে বা কারা আসছেন, কি কারণে আসছেন, কোথা থেকে আসছেন, কত সময় এখানে অবস্থান করলেন তার রেকর্ড রাখতে এ সব উদ্যোগ।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় এই নেতা বলেন, ‘প্রতিদিন শ’ শ’ মানুষ কার্যালয়ে আসেন। অনেককেই চেনা যায় না। তা ছাড়া এখন যে বিরূপ সময় যাচ্ছে কে কি উদ্দেশ্যে আসছে সব জানা যায় না। কেউ যদি অসৎ উদ্দেশ্যে লুকিয়ে একটি ফেনসিডিলের বোতল কার্যালয়ে রেখে যায়, পরে গণমাধ্যমে প্রচার হবে যে, বিএনপি কার্যালয় থেকে ফেনসিডিল উদ্ধার হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন সময় অভিযোগ তোলা হয় যে, বিএনপি অফিসে ককটেল ও অস্ত্র রয়েছে। সিসি ক্যামেরায় সব কিছুর রেকর্ড থাকলে আমরা তখন সরকারকে বলতে পারব, এসে দেখে যান; বিএনপি অফিসে কি অস্ত্র রয়েছে।’
বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি বলেন, দলীয় কার্যালয় খোলার কয়েক দিন অতিবাহিত হলেও এখনো নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক দূর হয়নি। গত তিন মাস ধরে আমাদের অফিসের সামনে যে জল কামান, এপিসি কার, প্রিজন ভ্যান, সাদা মাইক্রোসহ বিপুল পরিমাণ পুলিশ ও সাদা পোশাকধারী লোকজন ছিল, এখনো তেমনই রয়েছে। নেতাকর্মীরা দূর থেকে এ চিত্র দেখে মনে করে ওখানে গেলে আগের মতোই পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে।
তাই সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান, নিরাপত্তার প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রাখুন। কিন্তু আমাদের নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য কার্যালয়ের সামনে না রেখে দূরে রাখুন। আমাদের স্বাভাবিক দলীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে দিন।