তিন সিটিতে ৪৮ মেয়র প্রার্থী
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন (উত্তর-দক্ষিণ) ও চট্টগ্রাম সিটিতে মোট ৪৮ জন প্রার্থী মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ঢাকা উত্তরে ১৬ জন, দক্ষিণে ২০ জন ও চট্টগ্রামে ১২ জন।
যাচাই-বাছাইয়ে ঢাকার দুই সিটিতে ৪৩ জন মেয়র প্রার্থী বৈধ হলেও ৭ জন প্রার্থী বৃহস্পতিবার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। এদিকে চট্টগ্রামে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন একজন মেয়রপ্রার্থী।
মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কাছে প্রার্থীরা নিজে এবং উপযুক্ত প্রতিনিধির মাধ্যমে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন। তবে এখনো মনোনয়ন প্রত্যাহার করা কাউন্সিলর প্রার্থীদের তালিকা প্রস্তুত করতে পারেননি সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা। চূড়ান্ত প্রার্থীদের মাঝে শুক্রবার প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের রিটার্নিং অফিসার মো. শাহ আলম সাংবাদিকদের জানান, প্রত্যাহারের শেষ দিন বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য সারাহ বেগম কবরী, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সাবেক উপদেষ্টা ববি হাজ্জাজ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোস্তফা কামাল আজাদী প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন।
তিনি বলেন, ‘উত্তরে ১৬ মেয়র প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিন্দ্বন্দ্বিতা করবেন। শুক্রবার সকাল ১০টায় তাদের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। এরপরই তারা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণা শুরু করতে পারবেন।’
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের রিটার্নিং অফিসারের স্টাফ অফিসার নওয়াবুল ইসলাম বলেন, ‘প্রত্যাহারের শেষ দিনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আব্দুস সালাম, ইসলামী আন্দোলনের ইমতিয়াজ আলম, নির্দলীয় আবুল বাশার ও রিয়াজ উদ্দিন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন।
তবে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি।
দক্ষিণে মেয়র পদে ২০ প্রার্থী : আওয়ামী লীগ সমর্থিত মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস উদ্দিন আহমদ, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন, জাতীয় পার্টি সমর্থিত মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, শাহীন খান, দিলীপ ভদ্র, জাসদ সমর্থিত শহীদুল ইসলাম, শফিউল্লাহ চৌধুরী, এ এস এম আকরাম, আব্দুর রহমান, বজলুর রশীদ ফিরোজ, মশিউর রহমান, আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মওলা রনি, আয়ুব হোসেন, মো. আকতারুজ্জামান, মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, মো. আব্দুল খালেক, জাহিদুর রহমান, আবু নাছের মোহাম্মদ মাসুদ হোসাইন ও বাহরানে সুলতান বাহার দক্ষিণে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
উত্তরে মেয়র পদে ১৬ প্রার্থী : আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আনিসুল হক, জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থী বাহাউদ্দিন আহমেদ বাবুল, মিন্টুর ছেলে তাবিথ আউয়াল, বিকল্পধারার মাহী বি চৌধুরী ও মো. শামছুল আলম চৌধুরী, এ ওয়াই এম কামরুল ইসলাম, কাজী মো. শহীদুল্লাহ, মোয়াজ্জেম হোসেন খান মজলিশ, চৌধুরী ইরাদ আহম্মদ সিদ্দিকী, মো. আনিসুজ্জামান খোকন, মো. জামান ভূঞা, শেখ শহিদুজ্জামান, শেখ মো. ফজলে বারী মাসউদ, সিপিবির আব্দুল্লাহ আল ক্কাফী রতন, জাসদ সমর্থিত প্রার্থী নাদের চৌধুরী ও গণসংহতির মো. জোনায়েদ আব্দুর রহমান সাকি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন : চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার শেষে চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন ২৮৬ জন প্রার্থী। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার শেষে এ সব প্রার্থীকে চূড়ান্ত করা হয়।
সহকারী রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ শফিকুর রহমান জানান, সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার শেষে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১২ জন। সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২১৩ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৬১ জন প্রার্থী চূড়ান্ত হয়েছেন।
এর আগে চসিক নির্বাচনে মেয়র পদে ১৩ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৮৮ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৭১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।
এদের মধ্যে গত ১ ও ২ এপ্রিল যাচাই-বাছাইয়ে মেয়র পদে ১ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩১ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১০ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়।
পরে আপিল করে ৪১ জন কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে এক নারী কাউন্সিলর প্রার্থীসহ ১০ জন প্রার্থিতা ফিরে পান।
চট্টগ্রামে মেয়র পদে ১২ জন : চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে প্রার্থীরা হলেন— সাবেক মেয়র ও বিএনপি সমর্থিত চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলনের প্রার্থী এম মনজুর আলম, আওয়ামী লীগ সমর্থিত নাগরিক কমিটির প্রার্থী আ জ ম নাছির উদ্দিন, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান আলম শেঠ, ইসলামী ফ্রন্টের মহাসচিব এম এ মতিন, বিএনএফের আরিফ মঈনুদ্দীন এবং গাজী মো. আলাউদ্দিন, আবুল কালাম আজাদ, সৈয়দ সাজ্জাদ জোহা, মুজিবুল হক শুক্কুর, সাইফুদ্দিন আহমেদ ববি, ওয়াসেস হোসেন ভূঁইয়া ও শফিউল আলম।
তফসিল অনুযায়ী, ২৮ এপ্রিল ঢাকা (উত্তর-দক্ষিণ) ও চট্টগ্রাম সিটিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। শুক্রবার (১০ এপ্রিল) সকাল ১০টায় মেয়র প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেবে ইসি। একই দিন কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। এরপরই প্রতীক নিয়ে প্রচারণায় নামবেন প্রার্থীরা।
এদিকে প্রার্থীর তুলনায় প্রতীকের সংখ্যা কম হওয়ায় ইসি নতুন করে ৩০ অতিরিক্ত প্রতীক বাছাই করেছে। সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য ইসির ৩৪টি প্রতীক নির্ধারিত ছিল।