মন্ত্রিসভার নতুন কবি শাজাহান খান
ইয়াফেস ওসমানের পর মন্ত্রিপরিষদে নতুন কবির সন্ধান মিলেছে। নতুন এ কবি হলেন নৌমন্ত্রী শাজাহান খান। পোড় খাওয়া এ রাজনীতিক সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত সাপ্তাহিক বৈঠকে কবিতা আবৃত্তি করেন। তবে সেটা মৌলিক রচনা নয়। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতায় নিজের কিছু শব্দ বসিয়ে প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিপরিষদ সদস্যদের তা শোনান।
এদিকে গত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোর্ট-টাই পরা সদস্যদের প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করেন। এ কারণে সোমবারের বৈঠকে কোর্ট-টাই পরে আসতে কাউকে দেখা যায়নি। পাঞ্জাবি অথবা শার্ট পরে তারা বৈঠকে অংশ নেন।
মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে নৌমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে কবিতা আবৃত্তির বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। তিনি দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘মন্ত্রিসভায় প্রায় সময়ই এক প্রতিমন্ত্রী (বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান) ছড়া-কবিতা বলেন। আজও বলেছেন। তখন আমিও সুকান্তের কবিতা অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রীর সফল নেতৃত্বে ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম থেকে দেশ উদ্ধার করায় একটি অনুপ্রেরণামূলক কবিতা আবৃত্তি করেছি।’
সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘বোধন’ কবিতার বিভিন্ন লাইনে নিজের শব্দ বসিয়ে কবিতা আবৃত্তি করেন মন্ত্রী। এরপর এ প্রতিবেদককেও মন্ত্রিসভায় আবৃত্তি করা কবিতা শোনান মন্ত্রী। তার ভাষ্যে . . .
‘শোনরে জামায়াত, শোনরে রাজাকার
তোদের হাতে খুন হলো কত বাঙালির সন্তান
হিসাব কি দিবি তার?
প্রিয়াকে আমার কেড়েছিস তোরা
ভেঙেছিস ঘরবাড়ি,
সে কথা কি আমি জীবনে-মরণে
কখনো ভুলিতে পারি?
আদিম হিংসার মানবিকতার
যদি আমি কেউ হই
স্বজন হারানো শ্মশানে তোদের
চিতা আমি তুলবই।
শোনরে রাজাকার,ফসল ফলানো মাটিতে রোপন করবো তোকে এবার।’
আবৃত্তি শেষ করে মন্ত্রী বলেন, ‘জামায়াত-রাজকারদের রাজনীতি এ দেশের মাটিতে রোপণ করেই ছেড়েছি। তারা আন্দোলনের নামে নাশকতা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। সামনের দিনে তারা আরও কোণঠাসা হয়ে পড়বে।’
মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে আগাম নতুন বাংলা বছরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বৈঠক শেষে আপ্যায়ন পর্বে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিনের সৌজন্যে হালুয়াঘাটের রসগোল্লা খান প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যরা।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান মন্ত্রিসভায় তার স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন। এ প্রতিবেদক প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করে তার পঠিত কবিতা জানতে চাইলে তিনি এখনই তা গণমাধ্যমে প্রচার করতে রাজি হননি।
সুকান্ত ভট্টাচার্য রচিত ‘বোধন’ কবিতা
শোনরে মালিক, শোনরে মজুতদার,
তোদের প্রাসাদে জমা হ’ল কত
মৃত মানুষের হাড়!
হিসাব কি দিবি তার?
প্রিয়াকে আমার কেড়েছিস তোরা
ভেঙ্গেছিস ঘর বাড়ী,
সেকথা কি আমি জীবনে মরণে
কখনো ভূলতে পারি?
আদিম হিংস্র মানবিকতার
যদি আমি কেউ হই
স্বজন হারানো শ্মশানে তোদের
চিতা আমি তুলবই।