‘জনগণ নীরব বিপ্লব ঘটাবে’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘এই সরকার অবৈধ। তারা পদে পদে আইন অমান্য করছে। আইনভঙ্গ করে তারা দলীয় প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছে। আর নির্বাচনী প্রচারণায় আমাদের প্রতিনিয়ত বাধা দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রার্থীদের বিপুল ভোটে বিজয়ী করে জনগণ নীরব বিপ্লব ঘটাবে। কারণ তারা গুম-খুন, নির্যাতনের এই সরকারকে আর দেখতে চায় না। তারা পরিবর্তন চায়।’
নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপির সাংস্কৃতিক অঙ্গ-সংগঠন জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) আয়োজিত নববর্ষের অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।জাসাস সভাপতি এমএ মালেক এতে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জাসাস সাধারণ সম্পাদক কন্ঠশিল্পী মনির খান।
অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মঙ্গলবার বিকেল ৫টা ৫ মিনিটে খালেদা জিয়া দলীয় কার্যালয়ের সামনে উপস্থিত হন। প্রায় এক ঘণ্টা সেখানে অবস্থান শেষে সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিনি গুলশানের উদ্দেশে রওনা হন।
অনুষ্ঠান মঞ্চে খালেদা জিয়ার পাশে বিএনপি সমর্থিত ঢাকা সিটি দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস ও উত্তরের বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল উপস্থিত ছিলেন।
খালেদা জিয়া এ সময় মির্জা আব্বাসের প্রতীক ‘মগ’, তাবিথ আউয়ালের প্রতীক ‘বাস’ ও চট্টগ্রাম সিটির বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মনজুর আলমের ‘কমলালেবু’ প্রতীকের সঙ্গে সকলকে পরিচয় করিয়ে দেন। তিনি তাদের জন্য ভোট ও দোয়া প্রার্থনা করেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বলেন, ‘দেশ এক শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার মধ্যে দিয়ে চলছে। মানুষের মধ্যে স্বস্তি ও শান্তি নেই। সবাই খুন ও গুমের আতঙ্কে রয়েছে। লাখ লাখ নিরীহ মানুষ আজ ঘরে বাস করতে পারছে না। তাদের মিথ্যা মামলা দিয়ে এলাকা ছাড়া করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এর আগে গাজীপুর, সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, কুমিল্লায় যে সব সিটি করপোরেশনে নির্বাচন হয়েছে, আমরা বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছি। জনগণ ভোটের মাধ্যমে আমাদের পক্ষে রায় দিয়ে এই অবৈধ সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে। এবারও তারা আগামী ২৮ এপ্রিল ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে আমাদের প্রার্থীদের বিজয়ী করে জনগণ গুম ও খুনের জবরদস্তির সরকারের বিরুদ্ধে নীরব বিপ্লব ঘটাবে।’
বিএনপি প্রধান বলেন, ‘মির্জা আব্বাস অতীতে সিটি করপোরেশনে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করে এই সিটির অনেক উন্নয়ন করেছে। আর তাবিথ আওয়াল বিদেশে লেখাপড়া করা একজন উচ্চশিক্ষিত তরুণ। জনগণের সেবা করার মানসিকতা নিয়েই সে রাজনীতিতে এসেছে। আপনারা তাদের ভোট দিয়ে বিজয়ী করে ঢাকাকে আগামী প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য সুন্দর সিটি করতে সহযোগীতা করুন।’
এ সময় মঞ্চে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রোভিসি ড. আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এ্যাডভোকেট আহমদ আযম খান, বিএনপির সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক বিশিষ্ট চলচিত্রকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন, যুবদল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, এ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, এ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, মহিলাদল সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, ডিইউজের (একাংশ) সভাপতি আব্দুল হাই সিকদার, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধানসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া, ২০ দলীয় জোটের শরিকদের মধ্যে এনপিপি চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল পার্টি (ন্যাপ) গোলাম মোস্তফা ভূইয়া, জাগপা মহাসচিব খন্দকার লুৎফর রহমান, ডিএল মহাসচিব সাইফুদ্দিন মনিও এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
২০১৪ সালের ৩০ মে জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত অনুষ্ঠানে সর্বশেষ নয়াপল্টন কার্যালয়ে আসেন খালেদা জিয়া। এর আগে, ২০১৩ সালের ১৭ অক্টোবর তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসেছিলেন।