হাজী দানেশে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে নিহত ২
দিনাজপুরে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় মিল্টন ও জাকারিয়া নামে দুই ছাত্রলীগ নেতা নিহত হয়েছেন। নিহত মিল্টন পশু চিকিৎসা বিভাগের এবং জাকারিয়া বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
এছাড়া এ ঘটনায় ছাত্র-শিক্ষকসহ আনুমানিক ১৫ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ শতাধিক রাউন্ড গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে। বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়।
এ সময় ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত হাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইফতেখার আহমেদ রিয়েল এবং সাধারণ সম্পাদক অরুণ কুমার রায় সিটনের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ নূর হোসেন হল দখল করে নেয়।
এ দিকে রিয়েল ও সিটনের দখলকৃত নূর হোসেন হলের দখল পুনরায় ফিরে পেতে অপর গ্রুপ হাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সম্পাদক জেমি, শেখ রাসেল হলের সভাপতি পলাশ ও ছাত্রলীগ নেতা নয়নের নেতৃত্বে পাল্টা হামলা চালালে পুরো ক্যাম্পাস রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
ছাত্রলীগের সভাপতি ইফতেখার আহমেদ রিয়েল অভিযোগ করে বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানে পুলিশ ও বহিষ্কৃত নেতা জেমি, পলাশ, নয়নসহ ছাত্রদল ও শিবিরের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়েছে। এ সময় পুলিশ ও বহিষ্কৃত নেতাদের গুলিতে মিল্টন ও জাকারিয়া নিহত এবং জাহিদ, সিফাতসহ পাঁচ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে হাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সম্পাদক জেমি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় অডিটোরিয়ামে সেমিনার চলাকালীন সময়ে রিয়েল ও সিটনের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দিয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ভিসিসহ সকলের উপর হামলা চালায়। আমরা আত্মরক্ষার্থে পালিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে অবস্থান নিই। এ সময় পুলিশ তাদের প্রতিহত করতে আসলে পুলিশের সাথে তাদের সংঘর্ষ বাধে। তবে এ ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা এই মুহূর্তে সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়।
হাবিপ্রবির প্রক্টর এটিএম শফিকুল ইসলাম জানান, সংঘর্ষে আহত ৭-৮ জনকে আমরা উদ্ধার করে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছি। তবে এদের মধ্যে ৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
কোতোয়ালি থানার ওসি একেএম খালেকুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। তবে কতজন হাতহত হয়েছেন তা এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়।
উল্লেখ্য, ভর্তি পরীক্ষায় ডিজিটাল জালিয়াতির অভিযোগে ছাত্রলীগের ৩ নেতাকর্মীকে বহিষ্কারের পর বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি এড়াতে গত ৩০ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন। দীর্ঘ ১ মাস ১২ দিন পর গত ১১ জানুয়ারি খুলে দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬টি আবাসিক হল। ওইদিন কয়েকজন শিক্ষককে লাঞ্ছনার অভিযোগ ওঠে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার প্রতিবাদে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগেই অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দেয় হাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি। এরই মধ্যে ছাত্রলীগ দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এর একটি গ্রুপ শিক্ষকদের পক্ষে অবস্থান নেয়। এ নিয়ে গত ১৮ জানুয়ারি সংঘর্ষের পর ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান করছেন রিয়েল ও সিটন গ্রুপ।