‘প্রকাশিত ভিডিওর অমিল নিয়ে কাজ হচ্ছে’
‘নববর্ষের দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি এলাকার যৌন নিপীড়নের ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজের সঙ্গে প্রশাসনের কাছে সংরক্ষিত ফুটেজের যথেষ্ট অমিল রয়েছে। বিষয়টি অনুসন্ধানে কাজ করছে কমিটি।’
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া রবিবার বিকেলে সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেন। এর আগে তিনি তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা পুলিশকে টহল গাড়ি প্রদান করেন।
আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘নববর্ষের দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি এলাকার যৌন নিপীড়নের ঘটনায় পুলিশ নিজেরাই ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ গণমাধ্যমে সরবরাহ করে। কিন্তু ওই ফুটেজের সঙ্গে গণমাধ্যমে প্রকাশিত ফুটেজে যথেষ্ট অমিল পাওয়া যায়। সত্য অনুসন্ধানে তদন্ত টিম কাজ করছে।’
তিনি বলেন, অনেক পত্রিকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারীকে উত্ত্যক্ত ও থার্টি ফার্স্ট নাইটের ঘটনার ছবি পয়লা বৈশাখের বলেও প্রচার করেছে। একটি মহল এটি পুঁজি করে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। এটিও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমাদের কাছে যে ভিডিও ফুটেজ রয়েছে তাতে দেখা গেছে, অনেক লোকের ভিড়ে কয়েক নারী আটকা পড়েছেন। এমনকি একজন পড়েও যান। কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ওই নারীদের উত্ত্যক্ত করেছে কিনা এখন সেটি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। ওই ঘটনায় মামলাও দায়ের হয়েছে।
‘ঘটনার দিনের কোনো ছবি কারও কাছে পাওয়া যায়নি’ উল্লেখ করে আছাদু্জ্জামান মিয়া বলেন, ‘ঘটনাস্থলে হাজার হাজার মানুষের কাছে এ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন ছিল। কিন্তু কেউ এ ধরনের একটি ঘটনারও ছবি আমাদের দিতে পারেননি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা ওই নারীদের উদ্ধার করেছেন তারাও তাদের ঠিকানা বলতে পারেননি। এমনকি তারা কোনো ছবিও ধারণ করেননি। এ ছাড়া কারা ওই কাজ করেছে সে ব্যাপারেও তারা কিছু জানাতে পারেননি।’
ডিএমপি কমিশনার এ সময় কারও কাছে ওই দিনের কোনো ছবি বা তথ্য থাকলে তা দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করার আহ্বান জানান।
‘রাজধানীকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার জন্য ২০০ কোটি টাকার একটি বাজেট হচ্ছে’ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অতিদ্রুত পুরো রাজধানীকে সিসিটিভির আওতায় আনা হবে। যাতে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ দমনে প্রকৃত অপরাধীকে সহজে শনাক্ত করা যায়।’
নববর্ষের দিন বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় কয়েক নারীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে। গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ ও সমালোচনা শুরু হয়। ঘটনার পরের দিন শাহবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করে পুলিশ।
বিষয়টি অনুসন্ধানে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম এ্যান্ড অপারেশন) ইব্রাহিম ফাতেমিকে প্রধান করে একটি তদন্ত টিম ঘটনা করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন যুগ্ম কমিশনার ওয়াই এম বেলালুর রহমান ও গোয়েন্দা বিভাগ (পূর্ব) উপ-কমিশনার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর। রবিবার সকালে তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।