টেনশনহীন ক্রিকেটারদের অনন্য একদিন
স্থান সোনারগাঁও হোটেল লবি। সেখানেই মিডিয়ার প্রতিনিধিদের চোখ; চোখ উৎসুক ভক্তদেরও। হোটেল আঙিনায় বাড়তি সর্তকতাও ছিল পোশাকীবাহিনীর। ফলে মিডিয়া ক্রিকেটারদের খুঁজে পেলেও পাননি সেই অর্থে ভক্তরা। পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের অসাধারণ অর্জনের পর টেনশনহীন বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের অনন্য একদিন কেটেছে সোমবার।
কখনো হোটেল লবিতে; কখনো অ্যাপায়ন কক্ষে নিশ্চিন্ত মনে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। তাদের অবয়ব বলে দিচ্ছে একেবারে টেনশনহীন; সুখ সুখ অনুভবের বিরল দৃশ্যপট। এমন বাংলাদেশকে কমই দেখা গেছে বিগত দিনে।
ক্রিকেটাররা ফুরফুরে মেজাজে ইচ্ছে মতো গাড়িতে-মোটরবাইকে বেড়িয়েছেন। কেউবা আড্ডা-গল্পে মেতেছেন। আবার কেউবা মুখোমুখি হয়েছেন মিডিয়ার। এক ম্যাচ হাতে রেখে পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক ওয়ানডে সিরিজ জয়ের পর দলে অনেক ক্রিকেটাররাই হেসে-নেচে-বলে-ঘুরে সময় ব্যয় করেছেন।
ধরুন, সাকিব আল হাসানের কথাই। সোমবার সকাল সকাল গাড়ি নিয়ে বের হয়েছেন।ঘুরেছেন ইচ্ছে মতো। দিনটি শতভাগ উপভোগ করেছেন। ছুটি ছুটি আমেজে দিন পার করেছেন সাকিবের মতো অনেক ক্রিকেটার।মঙ্গলবার আবার যথারীতি পুরো দলের অনুশীলন।
বলে নেওয়া ভাল সবার আগে অবশ্য হোটেলের লবিতে দেখা গেছে মুশফিকুর রহিম এবং আরাফাত সানিকে। হাস্যোজ্জ্বল মুখে তারা ছুটি উপভোগ করেছেন এপাশ-ওপাশ করে। মাঝে আরফাত সানি মিডিয়ার সঙ্গে চুটিয়ে আড্ডাও মেরেছেন। কথা বলেছেন। ১৪ জনের ৬ জন ক্রিকেটার শুধু ঐচ্ছিক অনুশীলনে অংশ নিয়েছেন। বাকিরা দারুণ সময় উপভোগ করে কাটিয়েছেন।
সাকিবের মতো প্রায় বেশির ভাগ ক্রিকেটারই ছিলেন অবকাশ-বিনোদনে। অনুশীলনে যাওয়ার আগে সাব্বির রহমান রুম্মন ও রনি তালুকদার মোটরসাইকেলে করে ঘণ্টাখানেক ইচ্ছে মতো ঘুরেছেন। অনুশীলনে যোগ দেওয়ার আগে বলেছেন, ‘এমন সিরিজ জয়ের পর সময়টা খুব উপভোগ করার চেষ্টা করেছি। বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে কথা বলেছি। মন খুব ভাল। আশা করি, আমার পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করতে পারব।’
শেষ ম্যাচে একাদশে সুযোগ পাওয়ার অপেক্ষায় থাকা রনি তালুকদার বলেছেন, ‘খেলতে পারছি না। এতে কষ্ট নেই। দল জিতেছে; দলের সঙ্গী হিসেবে থাকতে পারছি, এটাই বড়। এর চেয়ে আনন্দের আর কিইবা আছে? সুযোগ নিয়ে ভাবছি না। এটা আমার ভাবনাও নয়।’
রনি-রুম্মনের পর লবিতে এসেছেন নাসির ও মুমিনুল। তারাও যোগ দিয়েছেন ঐচ্ছিক অনুশীলনে। মুমিনুলের গায়ে প্র্যাকটিস জার্সি থাকলেও নাসির ছিলেন টি-শার্ট ও পছন্দের জিন্সে। নাসির বলেছেন, ‘পাকিস্তানের বিপক্ষে এমন জয়ে দলের সঙ্গী হতে পেরে খুব ভাল লাগছে। সবসময়ই আমার যেমন চেষ্টা থাকে শেষ ম্যাচে তেমটাই থাকবে। আমাদের সবার বিশ্বাস আমরা পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করব।’
মুমিনুল হতাশ কী-না জানতে চাইলে বলেছেন, ‘কেন হতাশ হব। দল এতো ভাল খেলছে! আমি খেলছি না, এটা কোনো সমস্যা নয়। টিম যখন যেখানে যাকে খেলাবে তাকেই দলের প্রয়োজনে ভুমিকা রাখতে হবে।’
আবুল হাসান রাজু বলেছেন, ‘জানি না ভাগ্যটা এত খারাপ কেন। এখনও কোনো ওয়ানডে আন্তর্জাতিক উইকেট পেলাম না। চেষ্টা করছি। আমাদের দলের যা অবস্থা তাতে করে এখন যে কোনো দলকেই আমরা হারাতে পারি।’
তাসকিনের বাবা আব্দুর রশিদ গাড়ি নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন ছেলের জন্য। তাসিকনের ইচ্ছে দুপুরে মায়ের হাতের খাবার খাওয়া। যাওয়ার আগে দুষ্টামির ছলে তাসকিন বলেছেন, ‘আম্মুর হাতের রান্না খেলে আরও জোরে বোলিং করতে পারব।’
দুই ম্যাচে ওপেনিং ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলা সৌম্য বলেছেন, ‘খুব এনজয় করছি ছুটি। বাবার সঙ্গে কথা বলেছি। তবে একটু চিন্তিত, ইনিংসগুলো বড় করতে পারছি না বলে। বুঝতে পারছি না কেন ইনিংসগুলো বড় হচ্ছে না।’