ফেনীতে এমপির সভাস্থলে জলদস্যুদের হামলা
ফেনী-৩ (সোনাগাজী ও দাগনভূঞা) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ও জেদ্দা আওয়ামী লীগ সভাপতি হাজী রহিম উল্যাহর সভাস্থলে হামলা করেছে জলদস্যুরা। সোনাগাজী উপজেলার চরসাহাভিখারী গ্রামে মঙ্গলবার বিকেলে সাড়ে ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে জলদস্যুরা পুলিশকে লক্ষ্য করে অর্ধশতাধিক গুলি ছোড়ে ও বহনকারী একটি সিএনজি অটোরিকশা ভাঙচুর করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১৪ রাউন্ড শটগানের গুলি ছোড়ে। পুলিশ ও জলদস্যুদের গোলাগুলির সময় আশরাফ সিদ্দিকী নামে এক প্রকৌশলী গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় দুই পুলিশ কনস্টেবলসহ আরও চারজন আহত হন।
আহতরা হলেন- পুলিশ কনস্টেবল ছানাউল্যাহ, রফিকুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন ও যুবলীগনেতা এরশাদ উল্যাহ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল থেকে স্বতন্ত্র এমপি হাজী রহিম উল্যাহ তার নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ পরিদর্শনে যান। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সোনাগাজী উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের চরসাহাভিখারী গ্রামের চান মিয়ার দোকান এলাকায় ‘ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র’ ও ‘মা ও শিশু স্বাস্থ্যকেন্দ্র’র নির্মাণকাজ পরিদর্শনে যান। এ সময় স্থানীয় জলদস্যু সর্দার ও ভাগিনা কালাম বাহিনীর নেতৃত্বে একদল যুবক এমপির সভামঞ্চ ভাঙচুর করে। এমপির আগমনকে উদ্দেশ করে আগে থেকে উপস্থিত থাকা সোনাগাজী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নজরুলের নেতৃত্বে অবস্থান নেওয়া পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় জলদস্যুরা পুলিশ বহনকারী সিএনজি অটোরিকশা (ফেনী-থ ১১-২৩২৯) ভাঙচুর করে। পরে জলদস্যুরা পুলিশকে লক্ষ্য করে প্রায় অর্ধশতাধিক রাউন্ড গুলি ও ২০টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী আশরাফ সিদ্দিকী গুলিবিদ্ধসহ পাঁচজন আহত হন।
পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৪ রাউন্ড শটগানের গুলি ছোড়ে। পরে ফেনী ও সোনাগাজী থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে জলদস্যুরা পালিয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অবিস্ফোরিত ককটেল ও গুলি উদ্ধার করেছে।
ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সাইফুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বর্তমানে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন রয়েছে।
এদিকে এমপি রহিম উল্যাহ বলেন, ‘সিন্ডিকেট নেতারা জলদস্যুদের ব্যবহার করে সোনাগাজী উপজেলার উন্নয়ন কাজকে বাধাগ্রস্ত করতে এ হামলা করেছে।’
সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নবীর হোসেন জানান, এমপি রহিম উল্যাহ নিজ নির্বাচনী এলাকায় কয়েকটি নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করতে গেলে জলদস্যুরা তার সভামঞ্চ ভাঙচুর করেছে। এ সময় আগ থেকে অবস্থান নেওয়া পুলিশের গাড়িতে হামলা করলে পুলিশ ১৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে।
১৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় ফেনী সার্কিট হাউজে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের উপস্থিতিতে যুবলীগ নেতাদের হাতে লাঞ্ছিত ও মারধরের শিকার হন এমপি রহিম উল্যাহ। ওইদিন রাতেই তিনি ঢাকায় চলে যান।
এরপর গত ৯ ডিসেম্বর তিনি সোনাগাজী যাওয়ার পথে পুনরায় ফেনীর লালপুল ও সোনাগাজী জিরোপয়েন্টে তার গাড়িবহরে হামলা করেন ছাত্রলীগ নেতারা।