টিকিটের জন্য হাহাকার এবং …
আক্ষেপে পুড়ছেন অনেক ক্রিকেটপ্রেমী। তেমনি একজন কলেজ পড়ুয়া শামীম। খেলা হচ্ছে অথচ টিকিট নেই। আফসোস, মাঠে বসে খেলা দেখতে পারছেন না। স্টেডিয়ামের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্ত হন্যে হয়ে ঘুরছেন সোনার হরিণসম টিকিটের আশায়। কিন্তু কোথায় টিকিট? যারা মাঠে ঢুকছেন স্পর্শ সেদিকেই তাকিয়ে রাজ্যের হাহাকার নিয়ে। শুধু শামীম-স্পর্শ নয়, স্টেডিয়ামের আশ-পাশে এমন হাজার হাজার ক্রিকেটপ্রেমী এভাবেই টিকিটের পেছনে খামাখাই হাতড়িয়ে বেড়াচ্ছেন।
আবার অনেকেই টিকিটের সন্ধান পেয়েছেন। নানা পথে। এর জন্য তাদের গাটের বাড়তি টাকা দিতে হয়েছে। ১ শ’ টাকার টিকিটের পেছনে ব্যয় করতে হয়েছে এক-দুই এমনকি ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। আবার কেউ কেউ পোশাকী বাহিনী নামধারী কিছু সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার মাধ্যমে টাকা দিয়ে টিকিট ছাড়াই ম্যাচ দেখার সুযোগ পেয়েছেন। ফলে কার্ডধারী বিশেষ লোকদের যারা চিনতে পেরেছেন; তারা ভাগ্যবান বটে। সাধারণ দর্শক রায়হান জানিয়েছেন, কার্ডধারী এবং পোশাকী বাহিনীর কিছু কিছু লোক টাকার বিনিময়ে গ্যালারিতে ঢুকিয়েছেন। এই অভিযোগ রায়হানসহ অনেকেরই।
ম্যাচ শুরুর আগেই ব্যাংক থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে টিকিট বিক্রি শেষ। কারা নিয়েছেন ওই টিকিট তার সদুত্তুর নেই যথাযথ কর্তৃপক্ষের। মিরপুর স্টেডিয়ামের আশ-পাশে কালোবাজারীদের আনা-গোনা চোখে পড়েছে। এমনকি অনলাইনেও টিকিট বিকিকিনির নজির দেখা গেছে। কিভাবে কালোবাজারে টিকিট গেছে, এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে অনেকের সঙ্গেই যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্তু তাদের ফোন ধরার সময় কোথায়? তার ওপর শুক্রবার মিরপুরে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফলে তাদের ফোন জ্যামারে অচল হয়ে পড়েছিল।
শের-ই বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামের দর্শক ধারণ ক্ষমতা ২৫ হাজার ৫১২। অর্থাৎ পুরো স্টেডিয়ামে দক্ষিণ গ্যালারি, উত্তর গ্যালারি, পূর্ব গ্যালারি, শহীদ মুশতাক ও শহীদ জুয়েল স্ট্যান্ড, ইন্টারন্যাশনাল গ্যালারি ও ভিআইপি গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডের সবগুলো সিট মিলিয়েই এই সংখ্যা।
চলতি সিরিজের টিকিট সত্ত্ব পায় ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবিএল)। ব্যাংক সুত্রে জানা গেছে বিসিবি টিকেট ৬০ ভাগ ব্যাংকে বিক্রয়ের জন্য স্থানান্তর করেছিল। সেই হিসেবে ১৫ হাজার ৬৭টি টিকিট ছিল বিক্রয়ের জন্য। বাকি টিকিট ছিল বিসিবির কাছে। প্রশ্নটা খুব স্বাভাবিকভাবেই আসে; বাকি প্রায় ১০ হাজার টিকিট রেখে বিসিবি কি করেছে?
বিসিবির কাউন্সিলর, ক্লাব, স্পন্সর, পরিচালকদের কোটা প্রভৃতি খাতেই এসব টিকিট দেওয়া হয়েছে। এছাড়া পুলিশ প্রশাসন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে সৌজন্য টিকিট পাঠিয়েছে বিসিবি।
ব্যাংকের টিকিট তো বটেই সৌজন্য টিকেটে যাদেরকে দেওয়া হচ্ছে তারা কি, ফ্রি টিকিট পেয়ে মাঠে আসছে না। ওই টিকেট কি যথাযথদের কাছে যাচ্ছে; না কী তা কালোবাজারিতে বিক্রয় হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন এবং অভিযোগ উঠেছে। তবে এর কোনো সুদত্তর পাওয়া যায়নি। ভেন্যুর আশপাশে বেশকিছু যুবককে ম্যাচ চলাকালীন সময় টিকিট বিক্রি করতে দেখা গেছে।
এই ব্যাপারে বিসিবির টিকিট কমিটির প্রধান ইসমাইল হায়দার মল্লিকের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করা হয়েছে। তার ফোনও বেজেছে; কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি।