টোয়েন্টি২০ ম্যাচেও পাকিস্তানকে ‘বাংলা ধোলাই’
সিরিজের একমাত্র টোয়েন্টি২০ ম্যাচেও পাকিস্তানকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। শুক্রবার মিরপুরের মাঠে পাকিস্তানের দেওয়া ১৪২ রানের টার্গেট তাড়া করে ২২ বল বাকি থাকতেই ৭ উইকেটের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৭ রান (৪১ বলে) করে অপরাজিত ছিলেন সাকিব আল হাসান। অন্যদিকে, আরেক অপরাজিত ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমান ৩২ বলে করেছেন দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫১ রান।
পাকিস্তানের দেওয়া ১৪২ রানের টার্গেটে ইনিংসের প্রথম বলেই ৬ মেরেছেন বাংলাদেশের ওপেনার তামিম ইকবাল। পরের ২ বলেই ফের বাউন্ডারি মেরেছেন তিনি। প্রথম ৩ বলেই ১৪ রান। পাকিস্তানকে জবাব দিতে নেমে তাই উড়ন্ত সূচনা হয়েছে বাংলাদেশের। তবে বেশি তাড়াহুড়া করতে গিযে সৌম্য সরকারকে রান আউট হয়ে ফিরতে হয়েছে প্রথম ওভারেই। ঠিক একই কারণে তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে আউট হয়েছেন তামিম ইকবাল। সর্বশেষ আউট হয়েছেন মুশফিকুর রহিম ব্যক্তিগত ১৯ রানে। বাংলাদেশের সংগ্রহ তখন ছিল ৫.৪ ওভারে ৩৮ রান। তবে বাংলাদেশকে জয়ের বন্দরে টেনে নিচ্ছেন সাকিব আল হাসান ও সাব্বির রহমান। দু’জনের কৌশলী ব্যাটিংয়ে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি গতিতেই রান তুলছে বাংলাদেশ।
সিরিজের একমাত্র টোয়েন্টি২০ ম্যাচে জয়ের জন্য বাংলাদেশকে ১৪২ রানের টার্গেট দিয়েছে পাকিস্তান। মিরপুরের মাঠে আগে ব্যাটিং করা পাকিস্তান নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৪১ রান সংগ্রহ করেছে। অতিথিদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৭ রান করেছেন ওপেনার মুক্তার আহমেদ। এ ছাড়া হারিস সোহাইল ৩০ রানে অপরাজিত ছিলেন। মোহাম্মদ হাফিজের ব্যাট থেকে এসেছে ২৬ রান।
বাংলাদেশের পক্ষে ২টি উইকেট নিয়েছেন এই ম্যাচের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ঘটা পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। এ ছাড়া পেসার তাসকিন আহমেদ ও স্পিনার আরাফাত সানি একটি করে উইকেট নিয়েছেন। পাকিস্তান অপর উইকেটটি হারিয়েছে ইনিংসের শেষ বলে সোহেল তানভির রান আউট হওয়ার মধ্য দিয়ে।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সিরিজের সিরিজের এই এক মাত্র টোয়েন্টি২০ ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পাকিস্তানের অধিনায়ক শহিদ আফ্রিদি। ম্যাচ শুরু হয়েছে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। টস হারলেও ম্যাচের শুরুটা ভালই করেছে বাংলাদেশ। বোলিং আক্রমণে প্রথম ওভারটিই করেছেন অভিষিক্ত মুস্তাফিজুর রহমান। প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে নেমে দারুণ বল ছুঁড়েছেন তিনি। অপর প্রান্তে সাকিব আল হাসানও বল হাতে ভাল সূচনা করেছেন। চার-ছক্কার টোয়েন্টি২০ ম্যাচে প্রথম ৩ ওভারে সুবিধা করতে পারেনি পাকিস্তানীরা। ৩ ওভার শেষে পাকিস্তান বিনা উইকেটে তুলতে পেরেছিল মাত্র ৭ রান।
অভিষেক ম্যাচেই আলো ছড়িয়েছেন বাংলাদেশের পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। ইনিংসের ১৭.৫ ওভারে মোহাম্মদ হাফিজকে আউট করে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় এবং বাংলাদেশের চতুর্থ সাফল্য বয়ে এনেছেন তিনি। এর আগে ১২.১ ওভারে পাকিস্তানের ওপেনার মুক্তার আহমেদকে আউট করে বাংলাদেশকে তৃতীয় সাফল্য এনে দিয়েছেন স্পিনার আরাফাত সানি। তারও আগে (১০.৪ ওভারে) শহিদ আফ্রিদিকে আউট করে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান। আর ইনিংসের নবম ওভারের শেষ বলে আহমেদ সেহজাদকে আউট করে ম্যাচে বাংলাদেশের প্রথম সাফল্য এনে দিয়েছেন তাসকিন আহমেদ।
টোয়েন্টি২০ ম্যাচ মানেই সেখানে চার-ছক্কার ফুলঝুড়ি। কিন্তু বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের বিপক্ষে বাউন্ডারির খোঁজে হাসফাঁস করতে হয়েছে পাকিস্তানিদের। ম্যাচে সর্বসাকুল্যে মাত্র ১১টি চার ও ৩টি ছক্কা মারতে মেরেছে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা।
এই ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক টোয়েন্টি২০ ম্যাচে অভিষেক হচ্ছে বাংলাদেশের সৌম্য সরকার ও মুস্তাফিজুর রহমানের।
তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে অতিথিদের হোয়াইটওয়াশ করে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে রয়েছে বাংলাদেশ। তবে ম্যাচটি যেহেতু টোয়েন্টি২০ আর এই ভার্সনে বাংলাদেশের অতীত রেকর্ড যেহেতু খুব একটা উজ্জ্বল নয়, মাশরাফি বিন মর্তুজারা তাই সর্বোচ্চ সর্তকতা নিয়েই মাঠে নেমেছেন।
অন্যদিকে ওয়ানডে সিরিজে পরাজয়ের হতাশা কাটাতে এই ম্যাচে জয় পাওয়ার জন্য মরিয়া শহিদ আফ্রিদির নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান।
অতীতে দুই দলের টোয়েন্টি২০ লড়াইয়ে অবশ্য কখনোই জিততে পারেনি বাংলাদেশ। মাশরাফিরা মিরপুরের মাঠে এবার সেই হতাশা কাটাতে চান।
বাংলাদেশ দল : তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন, মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), আরাফাত সানি, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান।
পাকিস্তান দল : মোহাম্মদ হাফিজ, আহমেদ সেহজাদ, হারিস সোহাইল, মোহাম্মদ রিজওয়ান, সরফরাজ আহমেদ, শহিদ আফ্রিদি (অধিনায়ক), মুক্তার আহমেদ, সোহেল তানভির, ওয়াহাব রিয়াজ, উমর গুল, সাঈদ আজমল।