রাস্তা বন্ধ করে প্রচারণা : ব্যবস্থা নিতে ইসির নির্দেশনা
রাস্তা বন্ধ ও যান চলাচলে বাধা দিয়ে কেউ প্রচারণা চালালে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে নির্বাচন কমিশন থেকে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দেওয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট উত্তর–দক্ষিণ রিটার্নিং অফিসার, ঢাকা মহাগর পুলিশ (ডিএমপি) ও নির্বাচনে দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওই নির্দেশনার পর ব্যবস্থা নিতে পারবেন। নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা শুক্রবার রাতে পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিতে করেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শুক্রবার সন্ধ্যায় ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘কেউ যেন রাস্তা বন্ধ করে প্রচারণা চলাতে না পারেন সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে দুই সিটির রিটার্নিং অফিসার, ডিএমপি কমিশানার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নির্দেশনা পাঠানো হচ্ছে।’ শুক্রবার রাতেই নির্দেশনা পাঠানো হচ্ছে বলেও জানান তিনি। ইসি সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার নির্বাচনী আচরণবিধি পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ দেয় আওয়ামী লীগ সমর্থিত সহস্র নাগরিক কমিটি। ওই অভিযোগের পর ইসি খালেদা জিয়ার বিষয়টি আমলে নেয়। তবে ইসি বলছে, সহস্র নাগরিক কমিটির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। আগে থেকে এর পক্রিয়া চলছে। ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম বলেন, খালেদা জিয়ার নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা নেই। তবে তিনি যে বিপুলসংখ্যক গাড়িবহর নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন এতে যান চলাচলে বিঘ্ন হচ্ছে। তিনি বলেন, বিধি লঙ্ঘন করে প্রচারাণা চালালে সে যে-ই হোক না কেন আমরা ব্যবস্থা নেব। সহস্র নাগরিক কমিটির অভিযোগের ভিত্তিতে ইসি নির্দেশানা দিচ্ছে কিনা— জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না, তাদের অভিযোগের আগেই বিষয়টি ইসির নজরে এসেছে। তবে তারাও একই অভিযোগ করেছে।’ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিব উদ্দীন আহমদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সংগঠনের একটি প্রতিনিধি দল এ অভিযোগপত্র জমা দেয়। সাক্ষাৎ শেষে সহস্র নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব গোলাম কুদ্দুস বলেন, ‘আমরা সিইসিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্বাচনী আচরণবিধি পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের জন্য তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া সরকারি সুবিধাভোগী না হলেও দলের প্রধান হিসেবে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়া আচরণবিধির লঙ্ঘন। এ ছাড়া তার জন্য নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্ট হচ্ছে।’ গোলাম কুদ্দুস আরও বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বিদ্বেষমূলক বক্তব্য, রাস্তাঘাট বন্ধ করে সভা-সমাবেশ করে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন; যা সুস্পষ্ট আচরণবিধির লঙ্ঘন।’ আচরণ বিধিতে বলা হয়েছে, ‘নির্বাচনের উদ্দেশ্যে পথসভা ও ঘরোয়া সভা ব্যতীত কোনো জনসভা বা শোভাযাত্রা করা যাবে না। জনগণের চলাচল বিঘ্ন হতে পারে এ রূপ সড়কে প্রার্থী বা প্রার্থীর পক্ষে কোনো ব্যক্তি পথসভা করতে পারবেন না বা তদুদ্দেশ্যে কোনো মঞ্চ তৈরি করতে পারবে না।’ কেউ আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে ইসি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা ছয় মাসের কারাদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দাণ্ডিত করতে পারে। ইসি চাইলে প্রার্থীর প্রার্থিতাও বাতিল করতে পারে।