নেপালে লাশের এভারেস্ট : দেড় হাজার ছাড়াল প্রাণহানি
পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ বুকে ধারণ করে রেখেছে সে। সেই এভারেস্টের দেশ নেপাল এখন মৃত্যুপুরী। যেন সে লাশের এভারেস্ট। শনিবার দুপুরের ঠিক মিনিট কয়েক আগে ‘শনি’র দশা হয়ে যে ভয়াল ভূমিকম্প আঘাত করে নেপালকে, সেই আঘাতে এরই মধ্যে মৃতের সংখ্যা দেড় হাজার ছাড়িয়েছে।
বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে দশটায় এই প্রতিবেদন লেখার সময় পাওয়া সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা অন্তত দেড় হাজার।
আহতের সংখ্যা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে সে সংখ্যাটা হাজারের বেশি। অনেকেরই অবস্থা সংকটাপন্ন। তাই আশঙ্কা করা হচ্ছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে।
নেপালের ৮০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ছিল শনিবারের এই ভূকম্পন। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৯।
শুধু তাই নয়, মূল ভূমিকম্পটি আঘাত হানার দুই ঘণ্টা পর পর্যন্ত থেমে থেমে আরও ১৮ বার মৃদুকম্পন অনুভূত হয় নেপালে।
ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে ৭৫ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে, ভূমির ৩১ কিলোমিটার গভীরে।
ভূমিকম্পে দেশটির পুরনো শহরগুলো এবং অনেক ঐতিহ্যবাহী প্রার্থনালয় ধসে গেছে। এর মধ্যে রয়েছে দ্য ধারারা টাওয়ার। নয়তলাবিশিষ্ট এই ভবনধসে অন্তত ১৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এছাড়া বিখ্যাত মন্দির পশুপথিনাথ ভূমিকম্পে হাল্কা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে ভূমিকম্পের কারণে নেপালের এভারেস্টে তুষারধস শুরু হয়েছে, যাতে অন্তত ১০ আরোহীর মৃত্যু হয়েছে।
ভারত
নেপাল ছাড়াও পাশের দেশ ভারত এবং বাংলাদেশ ও চীনের তিব্বতে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
ভারতে অন্তত ৫৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ৪৫ জনই মারা গেছে বিহারে। এছাড়া ভারতে আহতের সংখ্যা শতাধিক।
তিব্বত
নেপালের পাশের অঞ্চল তিব্বতে ভূমিকম্পে অন্তত ১২ জনের প্রাণহানীর খবর পাওয়া গেছে। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ওই স্বায়ত্তশাসিত এলাকায় ভূমিকম্পে আহত হয়েছেন আরও ১৩ জন।
চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, তিব্বতে মৃতদের মধ্যে রয়েছেন ৮৩ বছর বয়সী এক নারী।
বাংলাদেশ
বাংলাদেশে এ পর্যন্ত তিন জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে দুই জন নারী রয়েছেন। এছাড়া সারা দেশে কয়েকশ আহত হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৩৪ সালে নেপালে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছিল। সেবারের ভূমিকম্পে সাড়ে ৮ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল।
সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া, এনডিটিভি, হিন্দুস্তান টাইমস, রয়টার্স