হঠাৎ অভিযানে পুলিশ, মাঠছাড়া বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থীরা
হরতাল-অবরোধ প্রত্যাহার করে চট্টগ্রাম ও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বিএনপি। দীর্ঘ তিন মাস স্ব-অবরোধের মধ্য থেকে বেরিয়ে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে দল-সমর্থিতদের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় নামেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
আওয়ামী লীগ আর বিএনপিই শুধু নয়, সব দলের প্রার্থীরাই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। ১৪ বছর পর রাজধানী ঢাকার অলিগলি সরগরম; পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে গেছে পুরো শহর। তফসিল ঘোষণার পর বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার বা আটক করার উদ্দেশ্যে অভিযান কিছুটা স্তিমিত করা হয়। এ সুবাদে ঢাকার দুই সিটিতেই জমে ওঠে নির্বাচনী প্রচারণা।
পুলিশের তৎপরতা সীমিত থাকার সুযোগে বিএনপি-সমর্থিত কাউন্সিলর পদপ্রার্থীরা এবং তাঁদের নেতা-কর্মীরা আত্মগোপন অবস্থা থেকে বেরিয়ে প্রকাশ্যে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছে। ঢাকার দুই সিটির বিভিন্ন ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ও তাঁদের কর্মী-সমর্থকরা ভোটের জন্য সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রচারণা চালাচ্ছে। তবে সেই উৎসবমুখরতায় হঠাৎ কিছুটা ভাটার টান পড়েছে বলে অভিযোগ।
প্রচার-প্রচারণায় বাধা সৃষ্টি করায় এবং ধরপাকড় অভিযান চালানোয় প্রতিটি ওয়ার্ডে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গতকাল শনিবার পর্যন্ত গত এক সপ্তাহে বিএনপি সমর্থিত পাঁচজন কাউন্সিলর প্রার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ অবস্থায় বেশির ভাগ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরা এবং তাঁদের নেতা-কর্মীরা আবার আত্মগোপনে গেছে। কোনো কোনো ওয়ার্ডে পুলিশ নির্বাচনী ক্যাম্প বন্ধ করে দিয়েছে বলেও অভিযোগ। কালের কণ্ঠের কাছে এমন অভিযোগই করেছেন বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী ও তাঁদের কর্মী, স্বজনরা।
বিএনপির নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, তফসিল ঘোষণার পর প্রায় এক মাস নির্বিঘ্নেই প্রচারণা চালিয়েছে তারা। এখন প্রচার দূরের কথা আটকের ভয়ে তারা এলাকা ছাড়া। গত বৃহস্পতিবার ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী ও তাঁদের কর্মীদের ধরপাকড় শুরু করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কাউন্সিলর প্রার্থী গ্রেপ্তারের পাশাপাশি নির্বাচনী প্রচারণায় জড়িতদের আটক করার ভয় দেখাচ্ছে পুলিশ। নির্বাচনী ক্যাম্প গুঁড়িয়ে দেওয়াসহ প্রচারণায় বাধা দেওয়ার অভিযোগও করা হচ্ছে।
পুলিশের হঠাৎ মারমুখী হওয়ার কারণে নির্বাচনী প্রচারণা থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর কর্মীরা। এ অবস্থায় সিটি নির্বাচন আদৌ সুষ্ঠু হবে কি না, ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন কি না- এ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, পুলিশের পক্ষ থেকে প্রার্থীদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলা হচ্ছে না। তবে গত এক সপ্তাহে বিএনপি সমর্থিত পাঁচজন কাউন্সিলর প্রার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটির ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল খায়ের বাবলু; ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী কাজী হাসিবুর রহমান (শাকিল) এবং ঢাকা উত্তর সিটির ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী এএলএম কাউছার আহম্মেদ; ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী আবুল হাসেম ও ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মো. ওসমান গণি। শুধু প্রার্থী নন, তাঁদের সমর্থক ও বিএনপির অন্য নেতা-কর্মীরাও গ্রেপ্তারের শিকার হচ্ছেন।
সূত্র জানায়, কাউন্সিলর পদপ্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের বাসায় গিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররাও নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। ফলে মাঠে নামতে পারছেন না বিএনপি সমর্থিত বেশির ভাগ প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থকরা।
ঢাকা উত্তরের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের যুবদল সভাপতি এম এ মান্নান ও মোহাম্মদপুর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সোহাগকে গত বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে; ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আকতার হোসেন ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জুয়েল গাজীসহ তিনজনকে নির্বাচনী প্রচারণাকালে শুক্রবার আটক করে মধুবাগ ফাঁড়ির পুলিশ।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর পদপ্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার। তিনি তেজগাঁও থানা বিএনপির সভাপতি। তাঁর পক্ষে দলীয় নেতা-কর্মী ও আত্মীয়স্বজন নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছিলেন জোরেশোরে। গত বৃহস্পতিবার রাতে শেরে বাংলানগর থানার পুলিশ তাঁর পূর্ব রাজাবাজারের বাড়ি থেকে ২৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ এস এম নাসিরউদ্দিনসহ ১৭ জনকে আটক করে। তাঁরা সবাই আনোয়ারের নির্বাচনী প্রচারণার সঙ্গে জড়িত বলে বিএনপি দাবি করেছে।
গত শুক্রবার সকালে তেজগাঁও থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তেজকুনিপাড়া থেকে ২৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু বক্করকে আটক করে এবং তাঁর কর্মীদের নির্বাচনী প্রচারণা থেকে বিরত থাকতে বলে।
অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর পদপ্রার্থী ও ঢাকা মহানগর যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি আফতাব উদ্দিন আহমেদ জসিমের নির্বাচনী ক্যাম্প ভেঙে দিয়েছে শেরে বাংলানগর থানা পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পশ্চিম আগারগাঁওয়ে ছয়তলা গার্মেন্ট এলাকার তাঁর নির্বাচনী ক্যাম্পটি ভেঙে দেওয়া হয় এবং দুজন কর্মীকে আটক করা হয়। পরে কর্মীদের ছেড়ে দেওয়া হয়। আফতাব উদ্দিন জসিম বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার পর পুলিশ অনেকটাই নীরব ছিল। নেতা-কর্মীরা নির্বিঘ্নে প্রচার-প্রচারণাও চালিয়েছেন। কিন্তু হঠাৎ করেই পুলিশ মারমুখী হয়ে উঠেছে। বৃহস্পতিবার আমার নির্বাচনী ক্যাম্প গুঁড়িয়ে দেয় এবং দুজন কর্মীকে আটক করে নিয়ে যায়। পরে অবশ্য ছেড়ে দেয়। তবে আমার পক্ষে কেউ যেন প্রচারণা না চালায় সে নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ।’
ঢাকা দক্ষিণের ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মো. নাঈম জানুয়ারি থেকে আত্মগোপনে থাকলেও তফসিল ঘোষণার পর প্রকাশ্যে প্রচারণায় নেমেছিলেন। কিন্তু এখন আবার আত্মগোপনে গেছেন তিনি। তাঁর বড় ভাই আবদুল বাতেন অভিযোগ করেন, ‘এ মাসে পুলিশ বিরক্ত করেনি। আমাদের কর্মী-সমর্থকরা ভালোই প্রচারণা চালান। কিন্তু হঠাৎ নাশকতার অভিযোগে দুই মামলায় আমরা পাঁচ ভাই ও পাঁচ ভাতিজা এবং শতাধিক নেতা-কর্মী এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছি। আমাদের বেশির ভাগ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে।’ তিনি ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, ‘শুক্রবার আমার বাড়ির দারোয়ান জুয়েল ও বিএনপির কর্মী সোহেল ব্যাপারীকে পুলিশ আটক করে নিয়ে যায়। এমন হলে নির্বাচনের দরকার কী ছিল!’
উত্তরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী ফেরদৌসী আহামেদ মিষ্টি বলেন, ‘শনিবার বিকেল পৌনে ৫টায় শাহ আলী থানার পুলিশ আমার নির্বাচনী ক্যাম্প থেকে স্বাধীন নামের এক কর্মীকে আটক করে নিয়ে যায়। বিভিন্ন স্থানে গ্রেপ্তার অভিযানও চালাচ্ছে পুলিশ। তাদের ভয়ে নেতা-কর্মীরা মাঠে নামতে পারছে না। তফসিল ঘোষণার পর পুলিশের হয়রানি কম থাকলেও এখন প্রতিদিনই অভিযান চালাচ্ছে।’
২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী শামসুল হক বলেন, ‘মামলা থাকায় আমি প্রকাশ্যে প্রচারণায় নামতে পারিনি। যে কর্মীরা প্রচারণা চালাতেন তাঁদের বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক জমদর আলী ও বাড্ডা থানা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক মহিদ বিল্লাহ আতিক জামিনে থাকলেও পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে। এ অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আমি সংশয়ে আছি।’
বিমানবন্দর থানা বিএনপির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান উত্তর সিটি করপোরেশনের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী। তিনি বলেন, ‘পুলিশের অভিযানের কারণে আমাদের নেতা-কর্মীরা বাড়িতে থাকতে পারছে না। এ মাসের বেশির ভাগ সময় প্রচারণা চালাতে পারলেও নির্বাচনের আগ মুহূর্তে পুলিশ ব্যাপক অভিযান চালাচ্ছে, নেতা-কর্মীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে নির্বাচন সুষ্ঠু না হওয়ার আশঙ্কাই বেশি।’
দক্ষিণের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী দেলোয়ার হোসেন দেলু কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডে একটি মাত্র নির্বাচনী ক্যাম্প করা হয়েছিল, সেটাও বন্ধ করে দিয়েছে। আমার নেতা-কর্মীরা প্রচারণা চালানোতে নানাভাবে বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। পুলিশ ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের পক্ষ নিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের হুমকি দিচ্ছে।’
উত্তরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী শাহিনুর আলম বলেন, ‘পুলিশের আটক অভিযান কয়েকগুণ বেড়েছে। কয়েক সপ্তাহ নীরব থাকলেও পুলিশ এখন বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অভিযান চালাচ্ছে। নেতা-কর্মীরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে গেছে।’
উত্তরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী ডা. মো. বদিউজ্জামান বলেন, ‘নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্য নতুন মামলায় মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আয়ুব আলী ও যুবদল নেতা সাইম মণ্ডলকে আসামি করেছে পুলিশ। তারা প্রতিদিনই গ্রেপ্তার অভিযান চালাচ্ছে। ভয়ে নেতা-কর্মীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।’
দক্ষিণ সিটির ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী হাবিবা চৌধুরী অভিযোগ করেন, ‘আমাকে হত্যার জন্য মিছিলে গুলি করে ক্ষমতাসীন দলের লোকজন। সেই গুলিতে ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি নাজিমুল হুদা আরজু আহত হয়েছেন। তাঁকে নিয়েই হাসপাতালে ছোটাছুটি করছি এখন। প্রচারণা চালাতে পারছি না। আমার চারজন নেতা-কর্মীকে আজ (শনিবার) সকালে পুলিশ আটক করে নিয়ে গেছে।’
১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী সিরাজুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমার এলাকায় প্রচার-প্রচারণা ভালোই চালাচ্ছিলাম, কিন্তু কয়েক দিন ধরে পুলিশ প্রতিদিন নেতা-কর্মীদের বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে। বৃহস্পতিবার ওয়ার্ডের ৫ নম্বর ইউনিট বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর হোসেনকে আটক করে নিয়ে যায় তারা। অনেকেই আটকের ভয়ে ঠিকমতো প্রচারণা চালাতে পারছেন না।’
কাউন্সিলর পদপ্রার্থীদের স্বজনদের অভিযোগ, প্রার্থীর বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। প্রার্থীদের না পেয়ে তাঁদের পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের প্রচারণা না চালানোর হুমকি দিচ্ছে তারা। যাঁদের বিরুদ্ধে মামলা নেই সেসব নেতা-কর্মীর বাড়িতেও অভিযান চালানো হচ্ছে। অনেককে আটক করার পর মামলার আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখিয়ে চালান করে দেওয়া হচ্ছে আদালতে।
স্বজনদের আরো অভিযোগ, প্রতিটি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের ১০ থেকে ১২টি ক্যাম্প থাকলেও বিএনপির প্রার্থীদের দুই-একটি ক্যাম্প, তাও বন্ধ করে দিচ্ছে বা ভেঙে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে পুলিশ। বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা বন্ধ রাখতে মৌখিকভাবে কর্মীদের বলে দেওয়া হচ্ছে। নতুন মামলায় প্রার্থীর আত্মীয়স্বজন, নেতা-কর্মীদের জড়িয়ে এলাকাছাড়া করা হচ্ছে।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের নেতা-কর্মীদের পুলিশ নানাভাবে হয়রানি করছে। প্রচারণায় বাধা দেওয়া হচ্ছে, নির্বাচনী ক্যাম্প ভেঙে ফেলা হচ্ছে। পুলিশ এমন মারমুখী হলে আমাদের প্রার্থীদের প্রচারণা দূরের কথা, এলাকায় টিকে থাকাই অসম্ভব।’ নির্বাচন কমিশনকে এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
পুলিশের বক্তব্য : ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি ঢাকা সিটি (উত্তর ও দক্ষিণ) করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী হলে বা কোনো প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিলেও তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। তবে অভিযুক্ত ব্যক্তি আদালত থেকে জামিন নিয়ে নির্বাচনী কাজে অংশ নিতে পারবেন বলে জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মুখপাত্র যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, অনেক কাউন্সিলর প্রার্থীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তাঁরা যদি আদালত থেকে জামিন না নিয়ে থাকেন তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। জামিন নিয়ে থাকলে তাঁদের ওপর বাড়তি নজরদারি থাকবে শুধু। পুলিশ ফৌজদারি কার্যবিধি ও নির্বাচনী বিধিবিধান অনুযায়ী কাজ করবে।
সৌজন্যে: কালের কণ্ঠ