নালিতাবাড়ীতে বীজ ব্যবসায়ীর প্রতারণা ৬শ’ একর জমির বোরো ধান মরে গেছে >>> দিশেহারা কৃষক
শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে বোরো ধানের বীজ ব্যবসায়ীর প্রতারণায় রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের বেলতৈল গ্রামের কৃষকদের ৬ শতাধিক একর জমির বোরো ধান মরে গেছে। অভিযোগ কৃষকদের।
অভিযোগে প্রকাশ, বেলতৈল গ্রামের কৃষকগণ নালিতাবাড়ী পৌরশহরের উত্তরবাজারস্থ মেসার্স জনি ট্রেডার্স এর সত্ত্বাধীকারী আব্দুল লতিফ মানিক এর কাছ থেকে উচ্চ ফলনশীল এস,এল-৮ এইচ সুপার হাইব্রিড ধান বীজ ক্রয় করে হাইব্রিডের পদ্ধতি মোতাবেক জমিতে আবাদ করেন। পরবর্তীতে ধান হয়ে যায় স্থানীয় জাতের ব্রি-২৮। কৃষক পড়ে দুশ্চিšায়। আ¯েত আ¯েত ধান মরতে শুরু করে। বর্তমানে ওই মাঠের ৬ শতাধিক জমির ধান সম্পূর্নভাবে মরে গেছে। এক মুঠো ধানও ঘরে আসবে না। ঋণ, ধার করে আবাদ করা বোরো ধান ঘরে না ওঠার কারণে না খেয়ে থাকতে হবে কৃষকদের। তাই সুবিচার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকেরা।
সরেজমিনে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের নিকট থেকে জানা গেছে, ওই এলাকার প্রায় সকল কৃষকের দাবি শুধু আব্দুল লতিফ মানিকই নয়, ধান বীজ ব্যবসায়ী ভজন সাহা, ভোলা সাহার কাছ থেকেও তারা বীজ ধান ক্রয় করে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।
নূর হোসেন এর সাথে কথা হলে তিনি তার জমির মরা ধান দেখিয়ে বলেন, সারে ৫ একর জমিতে তিনি মানিকের কাছ থেকে হাইব্রিড ধানের বীজ এনে আবাদ করেন। পরে এই ধান হয়ে যায় স্থানীয় জাতের ব্রি-২৮।
বর্তমানে তার সম্পূর্ন ক্ষেতের ধান মরে গেছে। তাই মরা ধান কেটে গরুর খাদ্য হিসেবে খর তৈরি করছে। এতে তার প্রায় ২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ রকম জুলহাস উদ্দিনের আড়াই একর, দুলাল মিয়ার দেড় একর, মনিরুজ্জামানের ২ একর, শহিদুলের ৫০ শতাংস, মফিজুলের ৩ একর, জিয়ারুলের ৭০ শতাংস, বাচ্চু মিয়ার দেড় একর, আ: হাই এর দেড় একর সহ ওই মাঠের ৬ শতাধিক একর জমির ধান একেবারে মরে গেছে বলে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকেরা জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ মোল্লা বলেন, আমি অভিযোগ পেয়েছি এবং কৃষি কর্মকর্তাকে দ্রুত তদšত করে প্রতিবেদন দিতে বলেছি।
কৃষি কর্মকর্তা শরিফ ইকবাল বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে কৃষি সম্প্রসারনের উপ-পরিচালক এবং বিএডিসি উপ-পরিচালক বীজ বিপনন-এর সাথে কথা বলেছি। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের সত্যতা থাকলে বীজ ডিলারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষ জানিয়েছেন।
বিএডিসি বীজ বিতরণ বিভাগের উপ-পরিচালক বদর উদ্দিন জানান, আমি এলাকায় গিয়েছিলাম। কয়েকজন কৃষক কৃষি অফিসে আসে। কৃষকদের কোন কার্ড নেই। তাহলে আমি কী করে বুঝবো। কোথা থেকে বীজ সংগ্রহ করেছেন তারা।
এ ব্যাপারে বোরো ধান বীজ ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ মানিক এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, উল্লেখিত সমস্যার ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। বিএডিসির বীজের প্যাকেট আমরা বিক্রি করেছি। শুধু আমিই না আরো অনেকেই এই প্যাকেট বিক্রি করেছে।