‘আর কোনো রাস্তা নির্মাণ করা হবে না’

abul_mal_abdulদেশে নতুন করে আর কোনো রাস্তা নির্মাণ করা হবে না বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
সচিবালয়ে বুধবার ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সঙ্গে এক প্রাক-বাজেট আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
আলোচনায় ইআরএফ সভাপতি সুলতান মাহমুদ বাদল, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান, সাবেক সভাপতি মনোয়ার হোসেনসহ সংগঠনের অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনায় অর্থমন্ত্রী ছাড়াও সিনিয়র অর্থসচিব মাহবুব আহমেদ, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ড. এম আসলাম আলম ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান অংশ নেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘খামাখা অসংখ্য রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। এজন্য সরকারের সিদ্ধান্ত হচ্ছে, এদেশে আর নতুন কোনো রাস্তা হবে না। শুধু পুরনো রাস্তা সংস্কার করা হবে, শক্তিশালী করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে বিশ্ব অর্থনীতিতে এক ধরনের মন্দাভাব বিরাজ করছে। কিন্তু আগামী দুই বছর বিশ্ব অর্থনীতি ভাল যাবে বলে ইতোমধ্যে বিভিন্ন মহল থেকে পূর্বাভাস ব্যক্ত করা হয়েছে। এ বিষয়টি মাথায় রেখেই আগামী দুই বছর বাজেট প্রণয়ন করা হবে।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘গত ছয় বছর ধরে বাজেটে অবকাঠামো ও পরিবহন খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এবারও তা অব্যাহত থাকবে। তবে এর সঙ্গে মানবসম্পদ উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন ইত্যাদি খাতকেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।’
চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭ শতাংশের কাছাকাছি হবে উল্লেখ করে মুহিত বলেন, ‘গত জানুয়ারি মাস থেকে বিএনপির নেতৃত্বে যে টানা অবরোধ-হরতাল হয়েছে এ নিয়ে আমি বিভিন্ন সময় নেতিবাচক মন্তব্য করেছি। কিন্তু এ ব্যাপারে আমার এ্যাসেসমেন্ট হচ্ছে, এক মাসের বেশি ক্ষতি হয়নি এবং অর্থনীতি খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। আশা করছি, এটা আমরা উদ্ধার করতে পারব।’
প্রাক-বাজেট আলোচনায় ইআরএফ সদস্যরা অবকাঠামো উন্নয়ন, বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়ানো, শিল্পায়নে জমির স্বল্পতা, পিপিপি কার্যকর করা, বিনিয়োগের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের আস্থা অর্জন ও পরিবেশ সমুন্নত রাখা, পর্যায়ক্রমে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন, কর্পোরেট ট্যাক্স কমিয়ে আনা, ব্যাংকিং খাত সংস্কার, আয়কর রিটার্ন দাখিল আরও সহজ করা, কালো টাকার বিষয়ে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করাসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। সেইসঙ্গে এসব বিষয়ে বাজেটে সরকারের দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদানের সুপারিশ করেন।
সাংবাদিকদের এসব সুপারিশের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কর্পোরেট ট্যাক্সের ক্ষেত্রে এবারের বাজেটে বড় একটা সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। তবে এটা যৌক্তিক বলে আমার কাছে মনে হয় না। আবার পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত হলেই ট্যাক্সের বোঝা কমে যাবে এটাও তেমন ভাল নয়। কর্পোরেট ট্যাক্সের বিষয়টি রিভিউ করা হবে।’ এছাড়া সারচার্জের বিষয়টিও রিভিউ করা হবে বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, ‘সম্পদ ট্যাক্স যেটা আছে, সেটা তেমন কার্যকর হচ্ছে না। এটাকে পরিবর্তন করে এবার বাজেটে প্রপার্টি ট্যাক্স চালু করা হতে পারে।’
অন্যান্য বিষয়ে মুহিত বলেন, বর্তমান সরকার অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। ১৯৮৩ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ২৬ বছরে অভ্যন্তরীণ সম্পদের বৃদ্ধির পরিমাণ হচ্ছে জিডিপির ৩ শতাংশ। আর বর্তমান সরকারের ৬ বছরে এটা বেড়েছে ২ শতাংশেরও বেশী।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সাল নাগাদ বাজেটের আকার ৫ লাখ কোটি টাকায় উন্নীত হতে পারে।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend