ঐক্যবদ্ধভাবে ‘ষড়যন্ত্র’ প্রতিহতের ঘোষণা
শিল্পের মালিক-শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘শিল্পের ক্ষতি হয় এমন কোনো কাজে সম্পৃক্ত হবেন না। প্রতিষ্ঠান ও দেশবিরোধী যে কোনো ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করতে হবে।’
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শ্রমিক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় শুক্রবার বিকেলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের শিল্পায়ন ও শ্রমিক অধিকার রক্ষায় বাস্তবভিত্তিক কর্মসূচি গ্রহণ করবেন। মনে রাখতে হবে, শিল্প টিকে থাকলেই কেবল আপনাদের কর্মসংস্থান হবে। দারিদ্র্য দূর হবে।’
‘আন্দোলনের নামে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে হবে। শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠায় মালিকপক্ষের ভূমিকা রাখতে হবে। শিল্প প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের জন্য মালিক-শ্রমিক সুসম্পর্ক নিশ্চিত করতে হবে’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘শ্রমিকদের সঠিক পথে পরিচালিত করতে সৎ ও যোগ্য নেতৃত্বের কোনো বিকল্প নেই। আমাদের দেশে শ্রমিক আন্দোলনের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে। কিন্তু শ্রমিক আন্দোলনের নামে ধ্বংসাত্মক কিছু করা যাবে না। শ্রমিকের অধিকার আদায়ে ট্রেড ইউনিয়নের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি আশা করি, ট্রেড ইউনিয়নের নেতারা সব সময় বিচক্ষণতার সঙ্গে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করবেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শ্রমিকদের সন্তানরা যেন তাদের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করতে পারে সে জন্য বিনামূল্যে শিক্ষার ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে সরকার। তার সরকার ডিগ্রি পর্যন্ত মেয়েদের শিক্ষাবৃত্তি দিচ্ছে। শিল্পের মালিকদের প্রতি আমার আহ্বান থাকবে, আপনারা শ্রমের মর্যাদা এবং শ্রমিকের কল্যাণে আরও নিবেদিত হবেন। কারণ শ্রমিক হচ্ছে কারখানার প্রাণ। উন্নয়নের রূপকার।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও শিল্পায়নের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। গার্মেন্টস শিল্পের জন্য গার্মেন্টস শিল্পপল্লী গড়ে তোলা হয়েছে। শ্রমঘণ্টা, ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্পের বিকাশের জন্য স্বল্প সুদে ঋণ ও পুনঃঅর্থায়নের ব্যবস্থা অব্যাহত রয়েছে। এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে দেশে বিপুল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান হয়েছে। দারিদ্র্য হ্রাস পেয়েছে। ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের পদক্ষেপে দারিদ্র্যের হার ২৪ ভাগে নেমে এসেছে। আমাদের এ সরকারের আর তিন বছর আট মাস সময় ক্ষমতায় রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে আমরা দারিদ্র্যের হার আরও ১০ ভাগ কমিয়ে আনতে চাই।’
‘সরকার যখন দেশের উন্নয়নে, শিল্পের উন্নয়নে, শ্রমিকের উন্নয়নে বিরামহীন কাজ করছে, যখন দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, গোটা বিশ্বের কাছে দেশ উন্নয়নের রোল মডেল হয়ে উঠছে— তখন বিএনপি-জামায়াত জোট পেট্রোলবোমা মেরে, বাসে আগুন দিয়ে নিরীহ মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে, যার অধিকাংশই শ্রমিক। ছোট শিশুও তাদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি’ অভিযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।