‘প্রহসনের নির্বাচনের প্রতিবাদে শিগগিরই কর্মসূচি’
সরকার ও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বিরুদ্ধে ভোটচুরি ও জালিয়াতির অভিযোগ এনে ‘প্রহসনের’ এ নির্বাচনের প্রতিবাদে শিগগিরই ২০ দলীয় জোট কর্মসূচির মাধ্যমে মাঠে নামবে বলে ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা জানানোর পর শনিবার সকালে এ ঘোষণা দেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ। দলের সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের ৩৬তম প্রতিষ্ঠাতা বার্ষিকী উপলক্ষে শ্রমিক দলের নেতাদের নিয়ে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তিনি।
দোয়া ও মোনাজাতের পর উপস্থিত সাংবাদিকদের হান্নান শাহ বলেন, ‘সদ্য সমাপ্ত তিন সিটি নির্বাচনে ভোটচুরি, জালিয়াতি ও প্রহসনের নির্বাচনের প্রতিবাদে বিএনপির সিনিয়র নেতা ও ২০ দলীয় জোটের নেতারা শিগগিরিই বৈঠকে বসবে। সেই বৈঠকেই কর্মসূচি নির্ধারণ করে মাঠে নামবে ২০ দলীয় জোট।’
এ সময় হান্নান শাহ ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সিটি নির্বাচনে অনিয়ম, ভোট চুরি, জালভোট, কেন্দ্র দখল ও ইসির যোগসাজশে প্রহসনের অভিযোগ এনে নির্বাচন বাতিল করে আবার নির্বাচনের দাবি জানান।
তিনি বলেন, ‘অনেকে বলছেন, ওই ভোট চুরির নির্বাচনের পর বিএনপি কেন তাৎক্ষণিক কোনো কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানায়নি, বিএনপি কেন নীরব থাকল, এর উত্তরে আমি বলতে চাই, কারণ বিএনপি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় বিশ্বাসী শান্তির দল। আমরা সহিংসতায় বিশ্বাস করি না। সরকারের শত উস্কানির মুখেও আমরা দেশের গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে চাই। তাই আমরা এই সরকারের কোনো উস্কানিতে পা দেব না।’
হান্নান শাহ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ গুণ্ডাদের দল ও সহিংসতার দল। আমরা গণতান্ত্রিক পথেই থাকব। সরকার উস্কানি দিলেও তাদের ফাঁদে ২০ দল পা দেবে না।’
এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘২৮ এপ্রিল যে নির্বাচন হয়েছে তা ৫ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের মত নীল নকাশার নির্বাচন হয়েছে। সে সময়ে কেউ কেউ বলেছে বিএনপি নির্বাচনে গেলে জয় লাভ করত। এবার মিডিয়ার কল্যাণে দেশ-বিদেশের সবাই দেখেছে আওয়ামী লীগের আমলে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয় না, হতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘সিটি নির্বাচনে শতভাগ কারচুপির পরও সরকারের আজ্ঞাবাহী ইসি বলছে নির্বাচন নাকি সুষ্ঠু হয়েছে। জনগণ ক্ষেপে গিয়ে গণধোলাই দিলেও ইসি বলবে এটি অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে।’
জিয়াউর রহমানের মাজার ভাঙচুর প্রসঙ্গে দলটির অন্যতম নীতি নির্ধারক হান্নান শাহ বলেন, ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে আঘাত করে সরকারের দুর্বৃত্তরা দেশের ১৬ কোটি মানুষের হৃদয়ে আঘাত করেছে। দুর্বৃত্তরা মনে করেছিল, মাজার ভাঙলে মানুষের মন থেকে জিয়ার নাম মুছে ফেলবে। মানুষ জিয়ার নাম ভুলে যাবে। কিন্তু ওই দুর্বৃত্তরা জানে না যে, জিয়াউর রহমানের নাম শুধু কাগজে লেখা নেই। তার নামটি এদেশের মানুষের হৃদয়ে লেখা আছে। তাই যারা জিয়ার নাম মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র করে, তারাই ইতিহাস থেকে মুছে যাবে, জিয়া নন।’
বর্তমান সরকারকে স্বৈরাচারী আখ্যা দিয়ে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘এ সরকারের লোকেরা ভোট চুরি-ডাকাতি করলে কোনো বিচার হয় না। অথচ বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে তারা জেলে রেখেছে। যারা বাইরে আছেন তারা কাজ করতে পারছেন না। এ সরকার তাদের নামে মিথ্যা চার্জশিট দিয়ে প্রহসনের নির্বাচনের মতো প্রহনের বিচার করতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘এ অবৈধ সরকারের কাছ থেকে জনগণ মুক্তি চায়। সরকারের সকল বৈআইনী কর্মকাণ্ড জনগণের কাছে ফুটে উঠেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনসহ সংগঠনের নেতাকর্মী।