গণমাধ্যমের ওপর হস্তক্ষেপে টিআইবির উদ্বেগ
গণমাধ্যমের ওপর অযাচিত হস্তক্ষেপ, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনী হত্যাসহ গণমাধ্যমকর্মীদের নিরাপত্তা ঝুঁকির পরিপ্রেক্ষিতে গভীর উদ্বেগ ও হতাশা প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
একই সঙ্গে নিরপেক্ষভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালন ও বাংলাদেশের গণমাধ্যমকে নিরাপদে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনে সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী এ সংস্থা।
বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস-২০১৫ উপলক্ষ্যে শনিবার টিআইবির এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ ও হতাশা প্রকাশ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সরকার তার আগের মেয়াদে একদিকে যেমন তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ এবং জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রকাশ (সুরক্ষা প্রদান) আইন-২০১১ প্রণয়ন করেছে, অন্যদিকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (সংশোধন) আইন-২০১৩ এর ৫৭ ধারা সংশোধন এবং জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা-২০১৪ তে বেশকিছু ধারা সংযোজিত করেছে, যা গণমাধ্যম এবং ব্যক্তির স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করার ঝুঁকি সৃষ্টি করেছে।’
সম্প্রতি একদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক সাংবাদিক নির্যাতন ও অন্যদিকে ব্লগার হত্যা এবং সাগর-রুনী হত্যার ঘটনার বিচারের দীর্ঘসূত্রতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘ঘটনার দুই বছর অতিক্রান্ত হলেও এখনো পর্যন্ত সাগর-রুনী হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না হওয়া, ব্লগার অভিজিতের হত্যাকারীদের চিহ্নিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতা এবং সাংবাদিক নির্যাতনের সাম্প্রতিক ঘটনা সংবিধান স্বীকৃত স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকারকে খর্ব করেছে।’
তিনি বৈষম্যমূলকভাবে কোনো কোনো সাংবাদিকের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রবেশে অলিখিত নিষেধাজ্ঞা আরোপেরও নিন্দা জানান।
তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের শীর্ষপর্যায় থেকে একদিকে সাংবাদিকদের গঠনমূলক সমালোচনার আহ্বান জানানো ও অন্যদিকে সাংবাদিকদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করে দ্বৈতনীতি অনুসরণ করা হচ্ছে, যা গণতন্ত্রের বিকাশ ও সুশাসনের পথে অন্তরায়।’
এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রেস কাউন্সিলকে প্রকৃত অর্থে কার্যকর করতে গণমাধ্যমকর্মী ও সরকারকে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে হবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। একই সঙ্গে দলীয়করণের ঊর্ধ্বে থেকে সকল প্রকার প্রভাবমুক্ত হয়ে পেশাদারিত্ব ও বস্তুনিষ্ঠতাকে সমুন্নত রেখে দায়িত্ব পালনে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
এ ছাড়া পেশাগত উৎকর্ষ, বস্তুনিষ্ঠতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গণমাধ্যম খাতের জন্য নিজস্ব উদ্যোগে নৈতিক আচরণবিধি প্রণয়ন ও প্রয়োগের জন্য গণমাধ্যম নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।