সরকারি চাকুরেদের বেতন বাড়তে পারে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত
নতুন স্কেলে চাকরিজীবীদের বেতন সর্বোচ্চ ৯০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। পে-কমিশনের সুপারিশ কাটছাঁট করে এমন প্রস্তাবই চূড়ান্ত করেছে সচিব কমিটি। কমিটি আগামী সপ্তাহে তাদের চূড়ান্ত করা বেতন কাঠামো অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের কাছে জমা দেবে। আর সুপারিশ বিশ্লেষণের পর তা চূড়ান্ত করে তোলা হবে মন্ত্রিসভায়। আগামী ১১ মে সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এটি উপস্থাপন করা হতে পারে।
জানা যায়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভুঁইয়ার নেতৃত্বে গঠিত পর্যালোচনা সচিব কমিটি পে-কমিশন সুপারিশ কিছুটা কাটছাঁট করে চূড়ান্ত করেছে। আগামী ৭ মে অর্থমন্ত্রী দেশে ফিরলে সচিব কমিটি তাদের সুপারিশ তার কাছে জমা দেবেন।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ৪৮তম বার্ষিক সভায় যোগ দিতে অর্থমন্ত্রী বর্তমানে আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে আছেন। সেখান থেকে দেশে ফিরলেই তার কাছে এ সুপারিশ জমা দেয়া হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় সেটি বিশ্লেষণ করে বিধি মোতাবেক তা চূড়ান্ত করতে মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করবে। আগামী ১১ মে সোমবারের মন্ত্রিসভার বৈঠকে এটি উপস্থাপিত হতে পারে।
সচিব কমিটির সুপাশির অনুযায়ী, নতুন বেতন স্কেলে সরকারী চাকরিজীবীদের বেতন সর্বোচ্চ ৯০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। চলতি বছরের জুলাই থেকেই নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর হবে। নতুন বেতন স্কেলে কর্মচারীদের সর্বনিম্ন বেতন ৮ হাজার ২০০ টাকা বহাল থাকছে। তবে বেতন কমিশনের সুপারিশে থাকা বেশ কিছু ভাতা বাদ দেয়া হয়েছে। অষ্টম বেতন কমিশনের রিপোর্ট পর্যালোচনা কমিটি কয়েক দফা বৈঠকের পর এসব বিষয় চূড়ান্ত করেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র মতে, নতুন বেতন কাঠামো আগামী পহেলা জুলাই থেকে কার্যকর করা হলেও একসঙ্গে শতভাগ বাস্তবায়ন করা হবে না। পর্যায়ক্রমে দুই থেকে তিন ভাগে বাস্তবায়নের চিন্তা করছে সরকার।
সরকারী চাকরিজীবীদের শতভাগ বেতন বাড়ানোর সুপারিশ করে গত ২১ ডিসেম্বর অষ্টম বেতন কমিশনের চেয়ারম্যান বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন অর্থমন্ত্রীর কাছে প্রতিবেদন জমা দেন। সেখানে সর্বোচ্চ ৮০ হাজার ও সর্বনিম্ন ৮ হাজার ২শ’ টাকা বেতন স্কেলের সুপারিশ করা হয়।
ওই সুপারিশে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিবের বেতন এক লাখ টাকা এবং সিনিয়র সচিবদের বেতন ৮৮ হাজার টাকার প্রস্তাব করা হয়। বেতন বৃদ্ধির হারের সঙ্গে পেনশন বৃদ্ধির সুপারিশও করা হয়।
কমিশনের রিপোর্ট পেয়ে সরকার জানুয়ারিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করে। ওই সময় কমিটিকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে বেতন কমিশনের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিরূপণ করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব।
নির্ধারিত সময়ে কমিটি বেতন কাঠামো চূড়ান্ত করতে না পারায় পরবর্তী সময়ে আরও এক মাস কমিটির মেয়াদ বাড়ানো হয়।
সৌজন্যে: জনকণ্ঠ