ঝিনাইগাতীর মদিনাতুল উলুম কওমী মাদ্রাসা ভবন পরিত্যক্ত ঘোষনা
জি এম বাবুল, শেরপুর
ভুমিকম্পে ফাটল ধরায় শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলা সদরের মদিনাতুল উলুম কওমী মাদ্রাসা ও শিশু সদনের (এতিমখানা) তিনতলা ভবনটি প্রশাসন পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছেন। ফলে মাদ্রাসার চার শতাধিক ছাত্র নিয়ে কর্তৃপক্ষ বিপাকে পড়েছেন। মাদ্রাসা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৯ সালে এলাকাবাসীর আর্থিক সহযোগিতায় মদিনাতুল উলুম কওমী মাদ্রাসা ও শিশু সদনটি স্থাপিত হয়। মাদ্রাসায় হেফজ বিভাগসহ প্রথম শ্রেণি থেকে দাওরায়ে হাদীস পর্যন্ত ৪৫০ জন ছাত্র লেখাপড়া করছে। এছাড়া মাদ্রাসায় শিক্ষকসহ ২২ জন কর্মচারী রয়েছেন। এলাকাবাসীর দান-অনুদানে মাদ্রাসার আর্থিক ব্যয় মেটানো হয়। গত ২৫ এপ্রিল সংঘটিত ভ‚মিকম্পে মাদ্রাসার তিনতলা ভবনের কয়েকস্থানে ফাটল দেখা দেয়। এরপর ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে উপজেলা প্রকৌশলীসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা মাদ্রাসা ভবনটি পরিদর্শন করেন। পরে ছাত্রদের জীবনের নিরাপত্তার স্বার্থে প্রশাসন ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন। ফলে মাদ্রাসার ৪ শতাধিক ছাত্র নিয়ে কর্তৃপক্ষ বিপাকে পড়েছেন। মাদ্রাসার মোহ্তামিম মুফতি খালিছুর রহমান জানান, মদিনাতুল উলুম কওমী মাদ্রাসা ও শিশু সদনটি সমাজসেবা অধিদফতর কর্তৃক নিবন্ধনভুক্ত। আগামী ২১ মে কওমী মাদ্রাসার বার্ষিক বোর্ড পরীক্ষা শুরু হবে। কিন্তু ভ‚মিকম্পে ভবনটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এখন বিকল্প ব্যবস্থায় ছাত্রদের বিভিন্ন মসজিদ ও বিদ্যালয়ে পাঠদান করা হচ্ছে। এতে পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতিদিন এ মাদ্রাসায় ১৫০ জন এতিম ও অসহায় ছাত্রকে বিনামূল্যে খাবার দেয়া হয়। কিন্তু ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করায় এ কাজেও বিঘœ সৃষ্টি হচ্ছে। ঝিনাইগাতী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মাদ্রাসার সভাপতি মো. আমিনুল ইসলাম বাদশা বলেন, ভ‚মিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মাদ্রাসার তিনতলা ভবনটি ভেঙ্গে ফেলে নতুন করে নির্মাণ করতে প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয় হবে। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিপুল অংকের এ টাকা সংগ্রহ করা অসম্ভব।
তাই মাদ্রাসাটিকে রক্ষার জন্য সরকারি-বেসরকারি ও বিত্তবানদের সার্বিক সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, মাদ্রাসার ছাত্রদের জীবনের নিরাপত্তার স্বার্থে ভ‚মিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু সরকারি পর্যায়ে কোনো কওমী মাদ্রাসাকে সহযোগিতা করার সুযোগ নেই। তাই বেসরকারি উদ্যোগে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।