মনোবাসনা পুরণে শ্রীবরদী সীমান্তে শতবর্ষী ‘চরণতলা’ মেলা অনুষ্ঠিত

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

আজ সনাতন ধর্মালম্বীদের বিশেষ কোন কামনা পুরণের দিন। তাই দল বেধে আসছে সবাই। প্রায় দলে রয়েছে নারী ও শিশু। সাধ্যমতো নিয়ে এসেছে পাঠা, ভেড়া ও মহিষ। উদ্দ্যেশ্য কালিকা দেবীর মনোতুষ্টির জন্য তার পায়ে উৎসর্গ। বিনিময়ে উৎসর্গকারী কালীভক্তের মনোবাসনা পুরন। তাই বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের হিন্দুরের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। সীমান্তবর্তী সনাতন ধর্মাবলম্বী গারো, কোচ, হাজং ও দিনের মেলায় কেনাকাটা করতে আসা স্থানীয় মুসলমানদের উপস্থিতিতে মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে শেরপুরের ঝিনাইগাতি ও শ্রীবরদীর সীমান্তবর্তী বিòপুর গ্রামের চরণতলা বারোয়ারী শ্রী শ্রী কালিমাতার মন্দির প্রাঙ্গন। কারণ আজ ৫ এপ্রিল মঙ্গলবার বসেছে একদিন এক রাত্রির শতবর্ষী চরণতলা মেলা।

সরজমিনে মঙ্গলবার মেলায় গিয়ে দেখা গেছে, দুপুরেই মেলা মাঠে লোকে লোকারন্য। হিন্দু, মুসলিম, আদিবাসীর এ যেন এক মিলন মেলা। যতই দুপুর গরিয়ে বিকাল হচ্ছে লোক সমাগম ততই বাড়ছে। রয়েছে শিশু ও মহিলারাও। পূজার কাজ রাত্রে। তাই চলছে হরেক রকমের দোকানের পসরা থেকে বেছে বেছে পছন্দের জিনিস। মন্দির সংলগ্ন রয়েছে মহিলাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা। মন্দিরে চলছে ভক্তদের প্রার্থনা আর দেবীকে দেয়া হচ্ছে ভোজন।

মেলা কমিটির পিযুশ মোদক জানান, এ গ্রামে চরণতলা এলাকায় প্রায় একশত বছর থেকে বৈশাখ মাসের কৃòপক্ষের ১ম মঙ্গলবার শ্মশান কালীপূজা ও এ উপলক্ষে মন্দির মাঠে মেলা বসে আসছে। সারাদিন চলে মেলা। অনেকেই পূজার জিনিসপত্র, প্রসাদ ক্রয় করে। অনেকে বিভিন্ন তৈজসপত্র ও খেলনা সংগ্রহ করে। রাত ১২ টার পর শুরু হয় বলি ও পূজা অর্চনা। যা ভোরে শেষ হয়। তিনি আরো জানান, কালীর সন্তুষ্টি অর্জনের মধ্য দিয়ে দেবীর কৃপালাভের আশায় এখানে কালীর চরণে পশু বলী দেয়া হয়। তাই এ মেলা চরণতলা মেলা ও যুগ যুগ ধরে এ মেলা চলেতে থাকায় মেলা অনুষ্ঠানের স্থানটির নামও চরণতলা হয়ে গেছে। স্থানীয়রা এ মেলাকে কালী মেলা নামেও অভিহিত করে।

মেলায় আসা কয়েকজন জানান, কালীর চরণে পাঠা বলি দিয়ে তার সুদৃষ্টির জন্য এ মেলায় এসেছি। মেলায় আসা জামালপুরের সরিষাবাড়ি, টাঙ্গাইলের মধুপুর, ময়মনসিংহের ফুলপুর থেকে আসা বেশ কয়েকজন জানান, মনোবাসনা পুরণে তারা তাদের সাধ্যমতো পশু নিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে পূজায় এসেছেন। সারারাত থেকে বুধবার ভোরে চলে যাবেন। তারা আরও জানান, প্রতি বছরই এ দিনে তারা মেলায় আসেন।

এলাকাবাসীরা জানান, এ মেলাকে ‍উপলক্ষ করে আশে পাশের দুতিন গ্রামে চলে নাইওর। মেয়ে জামাইকে দাওয়াত করে শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে আসা হয়। তারা অভিযোগ করে জানান, প্রতি বছর এ মেলা বসলেও সরকারের দায়িত্বশীলদের এ দিকে কোন ভ্রক্ষেপ নেই। কালিবাড়ি থেকে মেলা প্রাঙ্গন পর‌্যন্ত রাস্তাটি খুবই খারাপ। তাছাড়া দুর দূরান্ত থেকে আসা পূণ্যার্থীদের গাড়ি রাখা ও বসার কোন ব্যবস্থাই নেই। তাই সঙ্গে থাকা পরিবহন নিয়ে আগন্তুকদের নিরাপত্তাহীনতায় ভূগতে হয়।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend