ঢাকার ২ প্রশাসক প্রত্যাহার : শপথ নিলেন ৩ মেয়র
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিজয়ী তিন মেয়র শপথ নিয়েছেন। এ ছাড়া বিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের দুই প্রশাসককে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
নির্বাচিত মেয়র আনিসুল হক, মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ও আ জ ম নাছিরকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় শপথবাক্য পাঠ করান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর আগে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ৩ সিটির নবনির্বাচিত ১৪৯ জন কাউন্সিলরকে শপথবাক্য পাঠ করান।
২৮ এপ্রিল নির্বাচনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে আনিসুল হক ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে আ জ ম নাছির মেয়র নির্বাচিত হন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি ৫৭টি সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর, ঢাকা উত্তর সিটিতে ৩৬টি সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ১২টি ওয়ার্ড কাউন্সিলর, চট্টগ্রাম সিটিতে ৪১টি সাধারণ ওয়ার্ড, সংরক্ষিত ১৪টি ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ মোট ১০৪জন সাধারণ কাউন্সিলর এবং ৪৫জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।
এদিকে, নির্বাচিত মেয়রদের শপথ গ্রহণের দিন বিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের দুই প্রশাসককে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে বুধবার এ বিষয়ে একটি আদেশ জারি করা হয়েছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মো. শওকত মোস্তফাকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক রাখাল চন্দ্র বর্মনকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে বদলি করা হয়েছে।
গত বছরের ১১ ডিসেম্বর এ দুই অতিরিক্ত সচিবকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন অনুযায়ী, প্রশাসকদের মেয়াদ ছয় মাস হলেও তখন আদেশে এ দুই প্রশাসকের মেয়াদের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।
২০০২ সালে ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে (ডিসিসি) সাদেক হোসেন খোকা মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার মেয়াদ শেষ হয় ২০০৭ সালে। তখন সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় থাকায় মেয়াদ শেষ হলেও ডিসিসি নির্বাচন হয়নি। তৎকালীন সিটি করপোরেশন আইন অনুযায়ী নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত পূর্ববর্তী মেয়রের দায়িত্ব পালনের বিধান ছিল। সে অনুযায়ী দায়িত্বপালন করেছিলেন সাদেক হোসেন খোকা।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার গঠনের পর ডিসিসি নির্বাচন না দিয়ে ২০১১ সালের ২৯ ডিসেম্বের ঢাকা দক্ষিণ ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নামে ডিসিসিকে দুই ভাগ করা হয়। একই সঙ্গে আইন পরিবর্তন করে ছয় মাস মেয়াদে প্রশাসক নিয়োগের ব্যবস্থা করা হয়। ২০১১ সালের ৩ ডিসেম্বর প্রথম দফায় প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর দফায় দফায় নিয়োগ দিয়েই বিভক্ত দুই সিটি করপোরেশন পরিচালনা করা হয়।
সীমানা জটিলতার দোহাই দিয়ে গত আট বছর ঢাকার সিটি করপোরেশন নির্বাচন হয়নি। এ ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন বরাবরই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে সীমানা নির্ধারণ করে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির কথা বলে আসছিল।