গত ২৪ ঘণ্টায় ৩১ বার ভূমিকম্পে কাঁপল পৃথিবী
আজ মঙ্গলবার আবার তীব্র ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল নেপাল। একই সঙ্গে প্রবল কম্পন অনুভূত হয়েছে ভারতের উত্তর, পশ্চিম, পূর্ব, দক্ষিণ ও উত্তর-পূর্বের বিস্তীর্ণ এলাকায়। ভূতত্ববিদরা জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৩১ বার অস্থির হয়েছে নীল গ্রহ।
অফিসের চেয়ারে বসে আচমকা ঝাঁকুনিতে চমকে উঠেছেন কলকাতার অনেকেই। মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে ভূমিকম্পের আতঙ্ক। দলে দলে দপ্তর ছেড়ে রাস্তায় এসে দাঁড়ান কর্মীরা। ভয়ে পথে নেমে আসেন বহুতল আবাসনের বাসিন্দারাও। শুধু কলকাতা নয়, পশ্চিমবঙ্গসহ গোটা ভারতেই ভূমিকম্পের ভয়াল অভিজ্ঞতা অনুভূত হয়েছে।
ভূতত্ববিদরা জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে মোট ৩১টি ভূমিকম্প হয়েছে। আর এর প্রত্যেকটি ঘটেছে ‘রিং অফ ফায়ার’-এর গণ্ডির ভিতরে।
রিং অফ ফায়ার কী? প্রশান্ত মহাসাগর অববাহিকায় প্রায় ৪০,০০০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ঘোড়ার খুরের আকৃতির এই অঞ্চল ভূতাত্ত্বিকভাবে সবচেয়ে সক্রিয়। একাধিক মহাসাগরিক খাত, আগ্নেয় বৃত্ত ও আগ্নেয়গিরি রয়েছে এখানে। বিশ্বের ৪৫২টি আগ্নেয়গিরির জন্মস্থান এখানেই। রয়েছে আরও ৭৫% ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি। পৃথিবীর নব্বই শতাংশ ভূমিকম্প ঘটে রিং অফ ফায়ারের গণ্ডির ভিতরে।
গত ২৪ ঘণ্টায় রিখটার স্কেলের রিডিং অনুযায়ী ইন্দোনেশিয়ায় ৫.৩ ও ৫.৬, ফিলিপিনসে ৫.৪, জাপানের আইয়ো জিমা দ্বীপে ৫.৩, পেরুতে ৬.১, ইস্টার আইল্যান্ডে ৫.০, কলাম্বিয়ায় ৫.৪, চিলেতে ৫.৪, আফ্রিকার দক্ষিণাংশে ৫.৪, গ্রিসে ৪.৫, আজারবাইজানে ৪.০ মাত্রার কম্পন ধরা পড়েছে। এছাড়া নেপালে ৭.৩, ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে কম-বেশি ৭.১ থেকে ৭.২ কম্পন ধরা পড়েছে। ভূমিকম্পের আওতা থেকে রক্ষা পায়নি ভূটান, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ।
সাম্প্রতিক লাগাতার ভূমিকম্পের ফলে পৃথিবীর ভূ-স্তরের টেকটনিক প্লেটগুলির অবস্থান ক্রমাগত বদলে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে বৈজ্ঞানিকরা জানিয়েছেন, প্রতি বছর চৈত্র সংক্রান্তির সময় প্লেটগুলির অবস্থানে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটে। এই সময় রিং অফ ফায়ার অঞ্চলের বাসিন্দাদের অতিরিক্ত সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন ভূতাত্ত্বিকরা।