বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকার অনশন
বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন করছেন প্রেমিকা। শরীয়তপুর সদর উপজেলার চরমধ্যপাড়া গ্রামে বুধবার রাত থেকে অনশন পালন করছেন তিনি।
সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, ডামুড্যা উপজেলার পৈতকাঠি গ্রামের সুশান্ত বেপারীর মেয়ে শরীয়তপুর সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী পোষণ বেপারীর সঙ্গে সদর উপজেলার আংগারিয়া ইউনিয়নের চরমধ্যপাড়া গ্রামের সনাতন বৈদ্যর ছেলে সুজন বৈদ্য শান্তর তিন বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি উভয় পরিবারের মধ্যে জানাজানি হলে ছেলের পরিবার তাদের সম্পর্ক মেনে নেয়নি। এক বছর আগে পোষণ বেপারী বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তি ও উভয়পক্ষের সম্মতিতে বিয়ে ঠিক হয়। ছেলের পক্ষ থেকে বিয়ের আশীর্বাদ ও স্বর্ণবস্ত্র প্রদান করা হয়।
২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে বিয়ের কয়েকদিন আগে ছেলের বাবা সনাতন বৈদ্য মেয়ের বাবা সুশান্ত বেপারীর কাছে তিন লাখ টাকা বিয়ের খরচ হিসেবে যৌতুক দাবি করেন। দরিদ্র সুশান্ত বেপারী যৌতুকের তিন লাখ টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় সুশান্ত বৈদ্য বিয়ে ভেঙে দিয়ে আশীর্বাদের স্বর্ণবস্ত্র ফেরত নিয়ে আসেন। বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পরেও সুজন বৈদ্য ও পোষণ বেপারীর মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক বজায় থাকে।
এরই মধ্যে নড়িয়া উপজেলার কাঞ্চনপাড়া গ্রামের বাবুল মণ্ডলের মেয়ে সুবর্ণা মণ্ডলের সঙ্গে ১৪ মে সুজনের বিয়ের দিন ধার্য করা হয়। প্রেমিকা পোষণ বেপারী বিয়ের খবর জানতে পেরে বুধবার রাত থেকে প্রেমিক সুজন বৈদ্য শান্তর বাড়িতে এসে বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করেন।
পোষণ বেপারী বলেন, ‘সুজনের সঙ্গে আমার তিন বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক। আমি তাকে স্বামী হিসেবে গ্রহণ করেছি।’
পোষনের মা রীতা রানী বলেন, ‘আমার মেয়ের সঙ্গে সনাতন বৈদ্যর ছেলে সুজন বৈদ্যর সম্পর্ক হলে উভয়পক্ষের সম্মতিতে ছেলের পরিবার বিয়ের আশীর্বাদ ও স্বর্ণবস্ত্র দিয়ে যায়। পরে ছেলের বাবা তিন লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। যৌতুক দিতে না পারায় ছেলের পরিবার বিয়ে ভেঙে দেন।’ সুজন বৈদ্যর বাবা সনাতন বৈদ্য বলেন, ‘বিয়ের খরচের জন্য মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে আড়াই লাখ টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তারা মেয়েকে আমার ছেলের সঙ্গে বিয়ে না দিয়ে আমাদের স্বর্ণবস্ত্র ফিরিয়ে দেন। তাই আমার ছেলেকে অন্যত্র বিয়ে দিচ্ছি।’
সুজন বলেন, ‘পোষণকে বিয়ে করার মতো কোনো সম্পর্ক আমাদের ছিল না। আমি ওকে ভালবাসি না। আর ওকে বিয়েও করব না।’
স্থানীয় আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রব হাওলাদার বলেন, ‘আমি এলাকার জনপ্রতিনিধি হিসেবে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করছি। তবে ছেলেমেয়ে উভয়ের বক্তব্য শুনে মনে হয়েছে এদের মধ্যে কোনো কারণে বিয়ে হলেও ভবিষ্যতে বনিবনা ও শান্তি আসাবে না।