ফিরছেন সারোয়ার, ফের মাঠ কাঁপাবে তৃণমূল?
দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকার পর খুব শিগগিরই বরিশালে ফিরতে যাচ্ছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার।
বুধবার উচ্চ আদালত থেকে দুটি মামলায় আগাম জামিন নেয়ার পরেই বরিশালে ফেরার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সেই সঙ্গে নেতাকর্মীদের মাঠে থেকে দলীয় কর্মসূচি পালনের নির্দেশনাও দিয়েছেন।
এর আগে গত ৫ জানুয়ারি সরকারবিরোধী আন্দোলনে মাঠে নেমে নাশকতার অভিযোগে মামলায় জড়ানোর পর থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন।
রাজধানীর সরোয়ার ঘনিষ্ঠ একাধিক নেতাকর্মী জানান, বুধবার বরিশাল দক্ষিণা বিএনপির কর্ণধর অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার উচ্চ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ চার সপ্তাহের আগাম জামিনের এ আদেশ দেন।
তবে বরিশাল মহনগর বিএনপি সভাপতি অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সারোয়ার কবে নাগাদ ফিরছেন সে বিষয়টি খোলসা করা হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, উচ্চআদালতের দেয়া রায়ের কপি বরিশাল পুলিশ প্রশাসনে পৌঁছানো মাত্রই সরোয়ার ফিরবেন।
মজিবর রহমান সরোয়ারের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিকালে বিএনপির অবরোধ-হরতালে গাড়ি পোড়ানোর দুটি মামলা রয়েছে। এরমধ্যে একটি মামলা বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায়। অপরটি মেট্রোপলিটন কাউনিয়া থানায়।
রাজধানীতে অবস্থানরত বরিশাল মহানগর বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর জিয়া উদ্দিন সিকদার জানিয়েছেন, তাদের নেতা সরোয়ার এখন আইনি জটিলতা থেকে মুক্ত। খুব শিগগিরই তিনি বরিশালে ফিরে নেতাকর্মীদের নিয়ে সরকারবিরোধী কর্মসূচি পালনে মাঠের অগ্রভাগে থাকবেন। অবশ্য জামিনে মুক্ত হওয়ার পরপরই এ বিষয়টি বরিশালের নেতাকর্মীদের অবহিত করেছেন বলে দাবি করেন সরোয়ারের আস্থাভাজন ওই নেতা।
এদিকে, কেন্দ্রীয় নেতা সরোয়ারের জামিনের খবরে বুধবার বেলা ২টার পর থেকেই অনুসারীদের এক ধরনের দৃঢ়চেতা মনবল লক্ষ করা গেছে। বিশেষ করে ছাত্রদলের বেশ কয়েকজন নেতা সরোয়ারের জামিনে মুক্ত হওয়ার বিষয়টি অনেকটা আগেভাগেই মিডিয়াকর্মীদের জানিয়ে দিয়েছেন।
এসময় আলাপচারিতায় ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, সরোয়ারের ডাকেই নেতাকর্মীরা ফের উজ্জীবিত হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। কারণ নেতা জামিনে মুক্ত হওয়ার বিষয়টি তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মুঠোফোনে একে অন্যকে জানানোর বিষয়টিও লক্ষ্য করা গেছে।
সূত্রমতে, গত ৫ জানুয়ারি থেকে সরকারবিরোধী আন্দোলনে বরিশালের রাজপথে নেমে শুরুতেই পুলিশের দায়ের করা দুটি নাশকতার মামলায় জড়িয়ে পড়েন কেন্দ্রীয় নেতা সরোয়ার। এরপর থেকে তাকে আর বরিশালের রাজপথে দেখা যায়নি।
হঠাৎ করে তার উধাও হওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছিলো রাজনীতিক কুশীলবদের মধ্যে নানা প্রশ্ন। ফলে রাজনৈতিক মাঠে অনেকটা ইমেজ সঙ্কটে পড়েন এই নেতা। এসময় সরোয়ারের অন্তর্ধান রহস্য নিয়ে শহরময় সৃষ্টি হয় আলোচনা-সমালোচনা।
অবশ্য ওই সময় দলীয় নেতাকর্মীরা মিডিয়াকর্মীদের কাছে প্রশ্নও রেখেছিলেন সরোয়ার গুম হয়েছেন কিনা। কিন্তু খোঁজ নিয়ে ওই সময় জানা গিয়েছিলো সরোয়ার রাজধানীতে আইন পেশায় নিয়োজিত আছেন। পাশাপাশি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ঢাকার দুটি সিটি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের পক্ষেও কাজ করছিলেন।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে কেন্দ্রীয় নেতা সরোয়ারের সাথে মুঠোফোনে আলাপ করা হলে তিনি বলেন, ‘সবেমাত্র আইনি জটিলতা থেকে বের হয়েছি। তবে কবে বরিশাল ফিরবো তা এ মুহূর্তে নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।’