২ শতাধিক ‘বাংলাদেশী’কে উদ্ধার করেছে মিয়ানমার
দুই শতাধিক ‘বাংলাদেশী’সহ দুটি নৌকা উদ্ধার করেছে মিয়ানমারের নৌবাহিনী। শুক্রবার সকালে বাংলাদেশী সীমান্তের দেশটির রাখাইন রাজ্যের কাছ থেকে তাদের উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছে মিয়ানমার সরকার।
মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের সরকার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া নৌকা দুটি থাইল্যান্ডের র্যানং থেকে এসেছে। মানবপাচারকারীরা নৌকা দুটিতে তিন শ’ করে অভিবাসী থাইল্যান্ডে পাচারের চেষ্টা করছিল বলে উল্লেখ করেছে রাখাইন সরকার।
মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র ই হতুত তার ফেসবুকে লিখেছেন, দেশটির নৌবাহিনী টহল দেওয়ার সময় দু্টি নৌকা উদ্ধার করে। মংদো শহরের কাছের থিনবো গয়ে গ্রাম থেকে চার মাইল দূরে সাগর থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।
ই হতুত বলেন, একটি নৌকাতে ২১৯ জন লোক ছিল। এর মধ্যে নয়জন চালক রয়েছে। এ ছাড়া দুইজন বাংলা দোভাষী রয়েছে। উদ্ধার হওয়াদের ‘বাঙ্গালী’ বলে অভিহিত করেছে মিয়ানমার সরকার।
প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের দেশটির সরকার ‘বাঙ্গালী’ বলে অভিহিত করে। কারণ দেশটির দাবি হলো— পাশের বাংলাদেশ থেকে তারা দেশটিতে চলে গেছে। সে হিসেবে মনে হয়, উদ্ধার হওয়ারা দেশটির রোহিঙ্গা মুসলিম। কিন্তু ই হতুত দাবি করেন, উদ্ধার হওয়ারা বাংলাদেশের কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও ঢাকার উত্তরাঞ্চল থেকে এসেছে।
সম্প্রতি অভিবাসী সংকট দেখা দেওয়ার পর এই প্রথম মিয়ানমার কোনো অভিবাসীকে উদ্ধার করল। আগামী ২৯ মে বিষয়টি নিয়ে পাশের দেশগুলোর এ বিষয়ে একটি আঞ্চলিক বৈঠকের কথা রয়েছে। যেখানে অংশগ্রহণ করার কথা জানিয়েছে মিয়ানমার। শুরুতে তারা এ ধরনের বৈঠকে অংশ না নেওয়ার কথা বলে।
এর আগে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীপ্রধান জেনারেল মিন অং হলিং বলেন, চলতি মাসে মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে যাওয়া কিছু অভিবাসী নিজেদের রোহিঙ্গা মুসলিম সাজানোর চেষ্টা করছে যাতে জাতিসংঘের সাহায্য পাওয়া যায়। চলতি সপ্তাহে জাতিসংঘ চলমান অভিবাসী সংকটের মূল হিসেবে মিয়ানমারকে দায়ী করে। কারণ বৌদ্ধ অধ্যুষিত মিয়ানমার থেকে সাম্প্রদায়িক ও ধর্মীয় সহিংসতার শিকার হয়ে হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম দেশটি থেকে পালানোর চেষ্টা করছে।
জাতিসংঘের বক্তব্যের পরই মিয়ানমারের সেনাপ্রধান ওই বক্তব্য দেন। তার ওই বক্তব্য অভিবাসী সংকটকে আরও জটিল করে তুলবে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন প্রদেশে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা রাষ্ট্রহীন এবং বঞ্চিত জীবন-যাপন করছে। ২০১২ বৌদ্ধদের সঙ্গে সহিংসতায় প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়।