মৌখিক তালাক দেওয়া স্ত্রীর সঙ্গে সংসার : পরিবার সমাজচ্যুত
মৌখিক তালাক দেওয়া স্ত্রীর সঙ্গে আবারও সংসার করার অভিযোগে লইমুদ্দিন প্রামাণিককে (৫২) বেদম মারধর করেছেন গ্রামের মাতবররা। লইমুদ্দিন আশঙ্কাজনক অবস্থায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। লইমুদ্দিনের পরিবারকে সমাজচ্যুত করেছেন মাতবররা। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তিন মাতবরকে রবিবার রাতে গ্রেফতার করে সোমবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।
গ্রেফতাররা হলেন- উপজেলার উনাহত সিংড়া গ্রামের নওফেল আকন্দ (৫৮), খায়রুল বারী (৫৬) ও সোয়াইব আকন্দ (৪৫)।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী জানান, দুপচাঁচিয়া উপজেলার উনাহত সিংড়া গ্রামের লইমুদ্দিন প্রামাণিক (৫২) ১৬ বছর আগে স্ত্রীকে মৌখিক তালাক দেন। এর কিছুদিন পর লইমুদ্দিন দ্বিতীয় বিয়ে করেন। ১৭ জানুয়ারি তিনি তালাক দেওয়া প্রথম স্ত্রীকে ঘরে তোলেন। এতে গ্রামের মাতবররা ক্ষিপ্ত হয়ে গ্রাম্য সালিশ করে হিল্লা বিয়ে দিয়ে লইমুদ্দিনের প্রথম স্ত্রীকে শরিয়ত মতে বিয়ের জন্য রায় দেন। লইমুদ্দিন গ্রাম্য সালিশ না মানলে তাকে সমাজচ্যুত করেন মাতবরা। লইমুদ্দিন ও তার পরিবারের সঙ্গে গ্রামের লোকজনের মেলামেশায় বাধা দেওয়া হয়। ১৭ মে লইমুদ্দিন বাড়ির সীমানায় বেড়া দিতে গেলে কয়েকজন মাতবর লইমুদ্দিনকে বেধড়ক মারধর করেন। আহত লইমুদ্দিনকে দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় রবিবার সন্ধ্যায় লইমুদ্দিনের ছেলে এলাহী ওরফে নয়ন বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে দুপচাঁচিয়া থানায় একটি মামলা করেন। পুলিশ রাতে অভিযান চালিয়ে চার আসামির মধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করে।
দুপচাঁচিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোপাল চন্দ্র চক্রবর্তী জানান, গ্রাম্য সালিশ করে ফতোয়া দেওয়া ও মারধরের ঘটনায় থানায় মামলা করা হয়েছে। এরই মধ্যে চার আসামির মধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিকে গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।